শাপলা আবহমান গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত একটি জলজ ফুল। শাপলা আমার খুব প্রিয় ফুল। শাপলা ফুল তার শান্ত-সৌন্দর্য আর নির্মলতা দিয়ে সবার মনকে মুগ্ধ করে। প্রকৃতি-নির্ভর বাঙালি জনজীবনের সর্বত্রই শাপলা চিরচেনা একটি ফুল। তাই শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। শাপলা জলজ ভূমিতে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য নিয়ে যেন এক ঝাঁক তারার মতো বিরাজ করে। এর সৌন্দর্য দেখে চোখ যেন ফেরানো যায় না
পরিচয়
এটি এক প্রকার জলজ ফুল। আমাদের দেশে তিন রকমের শাপলা ফুল জন্মে থাকে-সাদা, লাল ও নীল। তবে সাদা শাপলা ফুলই দেশব্যাপী বেশি দেখা যায়। এজন্য সাদা শাপলাকেই আমাদের জাতীয় ফুল হিসাবে গণ্য করা হয়েছে।
বিবরণ
শাপলা ফুল পানিতে ফোটে। পানিতেই এর জন্ম এবং পানিতেই এর বৃদ্ধি হয়। গ্রামবাংলার ডোবা, নালা, খাল, বিল, পুকুর, দীঘি ইত্যাদিতে শাপলা ফুল জন্মে। শাপলা ফুলের রং সাদা, লাল ও নীল। তবে সাদা শাপলা ফুলই বেশি দেখা যায়। শাপলা ফুলের অনেক পাপড়ি থাকে। পানির নিচে মাটিতে এর শিকড় থাকে। কিন্তু ফুল ফোটে পানির উপরে। শাপলার কাণ্ড লতার মতো। শাপলা ফুলের গোড়ায় গোলআলুর মতো শালুক হয়। শাপলার ডাঁটা ও পাতা পানির উপরে থাকে। এই ডাঁটাতেই শাপলা ফুল ফোটে। শাপলা ফুল থেকে ঢ্যাপ নামক একটি গোলাকার ফল ধরে। ঢ্যাপ পাকলে বীজগুলো পানিতে ভাসতে থাকে। এই বীজ থেকেই শাপলা ফুলের জন্ম হয়। আবার শালুক বা মরে যাওয়া গাছের মূল থেকেও শাপলার জন্ম হয়।
বৈশিষ্ট্য
পদ্ম জাতীয় এ শাপলা ফুল আমাদের সহজ-সরল জাতীয় জীবনের প্রতীক। পানিরাশির গতিময়তার সঙ্গে আমাদের প্রবাহমান জীবনধারার যে মিল আছে তারই সঙ্গে একাত্ম হয়ে আছে শুভ্র সুন্দর শাপলার হাস্যময় গতিছন্দ। আমাদের টাকায় ও পোস্টকার্ড-ইনভেলাপে প্রস্ফুটিত শাপলার ছাপ তার প্রমাণ বহন করে।
প্রাপ্তিস্থান
শাপলা ফুল শরৎ ও বর্ষাকালে ফোটে। প্রকৃতির নিয়মে মাঠের জলাশয়ে, বিলে, ঝিলে, হাওড়ে-বাঁওড়ে, নর্দমায়, পুকুরে এবং দীঘিতে শাপলা ফুল ফোটে। শাপলা ফুলের বীজ থেকে চারা বের হয়। ধীরে ধীরে সেই চারা বড় হয় এবং ফুল ফোটে ও ফল ধরে।