জীবন সঙ্গীত – হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
বলো না কাতর স্বরে, বৃথা জন্ম এ সংসারে
এ জীবন নিশার স্বপন,দারা পুত্র পরিবার, তুমি কার কে তোমারবলে জীব করো না ক্রন্দন;মানব-জনম সার, এমন পাবে না আরবাহ্যদৃশ্যে ভুলো না রে মন;কর যত্ন হবে জয়, জীবাত্মা অনিত্য নয়ওহে জীব কর আকিঞ্চন ।করো না সুখের আশ, পরো না দুখের ফাঁস,জীবনের উদ্দেশ্য তা নয়,সংসারে সংসারী সাজ, করো নিত্য নিজ কাজ,ভবের উন্নতি যাতে হয় ।দিন যায় ক্ষণ যায়, সময় কাহারো নয়,বেগে ধায় নাহি রহে স্থির,সহায় সম্পদ বল, সকলি ঘুচায় কালআয়ু যেন শৈবালের নীর ।সংসার-সমরাঙ্গনে যুদ্ধ কর দৃঢ় পণে,ভয়ে ভীত হইও মানব;কর যুদ্ধ বীর্যবান, যায় যাবে যাক প্রাণমহিমাই জগতে দূর্লভ ।মনোহর মূর্তি হেরে, ওহে জীব অন্ধকারে,ভবিষ্যতে করো না নির্ভর;অতীত সুখের দিন, পুনঃ আর ডেকে এনে,চিন্তা করে হইও না কাতর ।মহাজ্ঞানী মহাজন, যে পথে করে গমন,হয়েছেন প্রাতঃস্মরণীয়,সেই পথ লক্ষ্য করে স্বীয় কীর্তি ধ্ব্জা ধরেআমরাও হব বরণীয় ।সমর-সাগর-তীরে, পদাঙ্ক অঙ্কিত করেআমরাও হব হে অমর;সেই চিহ্ন লক্ষ করে, অন্য কোনো জন পরে,যশোদ্বারে আসিবে সত্বর ।করো না মানবগণ, বৃথা ক্ষয় এ জীবনসংসার সমরাঙ্গন মাঝে;সঙ্কল্প করেছ যাহা, সাধন করহ তাহা,রত হয়ে নিজ নিজ কাজে ।দিন যায়, ক্ষণ যায়, সময় কাহারো নয়,বেগে ধায়, নাহি রহে স্থির,সহায় সম্পদ বল, সকলি ঘুচায় কাল,আয়ু যেন শৈবালের নীর ।জাতি-দেশ-বর্ণ ভেদ ধর্ম ভেদ নাই ।শিশুর হাসির কাছে, সবি প’ড়ে থাকে পাছে,যেখানে যখন দেখি তখনি জুড়াই।