ল্যাথারিজম পরিবার ভুক্ত খেসারী বাংলাদেশ এ খুব পরিচিত ডাল জাতীয় ফসল ।বাংলাদেশের চরাঞ্চলে খুব বেশি পরিমানে চাষ করা হয় ।গাছ দুই ফুট থেকে সাড়ে তিন ফুট উঁচু হতে পারে । বীরুৎ জাতীয় উদ্ভিত ।পাতা চিড়ল ,শাক হিসেবে প্রুচুর ব্যবহার রয়েছে ।কচি পাতার স্বাদ এ অনন্য ।
এর ইংরেজি নাম Grass pea বা Chikling vetch এবং বৈজ্ঞানিক নাম Lathyrus sativus L.ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, নেপালসহ দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় ডালের ব্যবহার বহুদিনের পুরনো।এই দাল বিভিন্ন ভাবে খাওা হয় ।ডাল রান্না করে ও পিঁয়াজু বানিয়েই সাধারণত খাওয়া হয় ,তবে সিদ্ধ ডাল ভর্তাও খুব সুদ্বাদু হয় ।
খেসারি ডাল-এ শতকরা প্রায় ২০-২৩ ভাগ আমিষ থাকে।
ভাবপ্রকাশ নামের প্রাচীন এক গ্রন্থে বলা হয়েছে যে, ‘খেসারি ডাল খেলে মানুষ খোঁড়া হয়ে যায় এবং এতে স্নায়ুর পঙ্গুতা ও প্রদাহ দেখা দেয়।’এসময় এসে এই ঘটনার সত্যতার প্রমাণ পাওয়া গেছে ।
১৮৭৩ সালে ইতালিতে কানতানি এই রোগের নামকরণ করেন ল্যাথিরিজম। ১৮৩৩ সালে ভারতে এক জরিপে দেখা যায় সেসব গ্রামে স্নায়বিক ল্যাথিরিজম রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে, সেখানে খেসারি ডাল সমাজের দরিদ্র শ্রেণির, বিশেষত দুর্ভিক্ষের সময় তাদের প্রধান খাদ্য হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে কিছু কিছু গবেষক বিষয়টি সময় সময় নথিভুক্ত করেছেন। দেখা গেছে মাঝে মধ্যে এই ডাল ব্যবহারে তেমন ক্ষতি হয় না।
তবে যদি ডাল ২৪ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয় এবং পরবর্তিতে যদি ওই পানি ফেলে দিয়ে রান্না করা হয় তাহলে কোন সমস্যা হয় না ,এমন প্রমাণ পাওয়া গেছে ।
তবে খেসারী ডালের পিঁয়াজু যে একবার খেয়েছে সে তার স্বাদ আর ভুলতে পারবেনা ।তাই ২৪ ঘন্টা ভিয়ে খেতেই পারেন ।
খেসারী ফুল দেখতেও অনেক সুন্দর ,নীলচে গোলাপী ফুলে মধু ভরা থাকে আর যার লোভে ছুটে আসে মৌমাছি ঝাঁকে ঝাঁকে ।
সাধারণত ডাল হিসেবেই এর ব্যবহার ।এর শুকনো গাছ গবাদী পশুর খাবার হিসেবে ব্যাবহার করা হয় ,আর মাঝে মাধ্যে জ্বলানী হিসেবেও ব্যাবহার করা হয় ।
এর শিকড় প্রচুর নাইট্রোজেন ধারন করতে পারে বলে ,এর চাষ জমির উর্বরতা বাড়ায় । সামগ্রিক ভাবে খেসারি কলাই আমাদের জন্য উপকারী গাছ ।।