তুই আমাকে এখনো ভালোবাসিস ?
?
– ভালোবাসিস না কেন ?
– যখন ভালোবেসে ছিলাম তখন তো মূল্য দিলি না।
– তুই তো আমাকে বলিসনী কোন দিন ?
– তোর বোঝা উচিত ছিলো।
– তুই না বললে কেমন করে বুঝবো ???
– কেমন করে বলব ? বলার আগেই তো তুই ওই ছেলেটাকে আমাদের মাঝে নিয়ে আসলি।
– ও আমার জাষ্ট ফেন্ড ছিলো আর কিছু না।
– আমি তো তোর বেষ্ট ফেন্ড ছিলাম। মাএ দুই দিনের একটা ছেলের জন্য তুই আমাকে ভুলে গেলি ?
– আমি তোকে ভুলিনী, তুই আমার কাছ থেকে দূরে চলে গেছিস।
– কেন গেছি তু্ই জানিস না ?
– না।
– জানবি কেমন করে ? আমি তো তোর কেউ ছিলাম না।
– এমন ভাবে বলিস কেন ? তু্ই তো জানিসই আমি একটু কম বুঝ। বললেই পারিস।
– আমি তোর পাশে অন্য কাউকে সহ্য করতে পারি না।
– একবার বললেই পারতি !!
– কেন বলব ? তুই বুঝিতে পারিস না ?
– বুঝলে কি আর তোর থেকে দূরে থাকতাম।
দুজনেই চুপ। কিছুটা সময় নিরবতার পর দিশা বলে উঠল,
– চুপ কেন ?
– এমনিই।
– কাউকে ভালোবাসিস ?
– না।
– ভালোবাসতি ?
– হ্যা।
– সেদিন বলিসনী কেন ?
– বলার সাহস ছিলো না।
– কেন ?
– তোকে হারানোর ভয়ে।
– কেন হারাবি আমায় ?
– তোকে বলার পর যদি তুই “না” বলে দিস। যদি তুই চলে যাস আর আমাদের বন্ধুত্বটা নষ্ট করে দিস।
– তুই কেমন করে ভাবলী “তোকে ছেড়ে আমি চলে যাবো ?”
– তাহলে এই দুই বছর কোথায় ছিলি ?
– ওটা তো……………….!!! থাক পুরানো কথা বাদ দে।
– ok, দিলাম।
আবারো নিরবতা দুজনের মাঝে। প্রকৃতি টাও কেমন যে হচ্ছে আকাশেরও বুঝি আজ মন খারাপ। এই বুঝি কান্না শুরু করবে।
– কিছু বলবি ?
– কি বলবো ?
– যা ভাবছিস এখন।
– তুই বলতে পারিস না ?
– না।
– কেন ?
– তুই জানিস না, “মেয়েদের বুক ফাটে তো মুখ ফাটে না”।
– কেন ফাটে না ? তোরা ফাটাতে চাসনা দেখেই ফাটে না।
– হা……..হা……..হা……..হা……..!!!
– তোর হাসিটা এখনো আগের মতোই সুন্দর। (দিশার দিকে তাকিয়ে বিপলু)
– যাক বাবা, আমার হাসির কারণে হলেও তুই একবারের জন্য আমার দিকে তাকালি। এতক্ষণ তো আমার মনে হয়েছিলো আমি কোন রোবটের সাথে কথা বলছি।
– (চুপ)
– আচ্ছা আমি আসি (দিশা উঠতে যাবে ঠিক তখনি দিশার হাত ধরে ফেলল বিপলু)
– বস।
– কেন বসবো ? তুই তো কিছু বলবি না !!!
– বস বলছি।
– বল, কি বলবি ?
– আমার হাতটা একটু শক্ত করে ধরবি ?
– ছোটবেলায় তোকে হরলিক্স খাওয়ানী ?
– কেন ? (বিস্মিত হয়ে)
– তোকে শক্ত করে ধরতে বলসি, স্পর্শ করতে বলিনী।
– ok বাবা, ধরলাম। এবার বল কি বলবি ?
– দিশা, আমি…….
– হুম….!!
– আমি……
– তারপর ?
– তোকে…
– হুম…..!!
– তোকে…
– তোকে কি …..??
– আমি একটু পানি খাবো, একটু পানি দে…। (হতবিহ্বল হয়ে পড়লো বিপলু)
– (হাত ছেড়ে দিয়ে রাগান্বিত হয়ে) যা ওই দোকান থেকে খেয়ে আয়।
– তোর কাছে নেই ?
– না।
বিপলু উঠে পানি খেতে চলে গেল। এমন ভাবে গেল মনে হয় কত বছরের তৃষ্ণাত। অপর দিকে দিশার মনটা খারাপ হয়ে গেল। আজ দুই বছর পর ওদের দেখা অথচ বিপলু ওর মনের কথাটা আজও বলতে পারলো না। আজ থেকে ঠিক তিন বছর আগে এই দিনে দিশার সাথে বিপলুর প্রথম পরিচয় হয়। বন্ধুত্বের কিছুদিন পরেই দিশাকে ভালোবাসতে শুরু করে বিপলু। দিশাও ব্যাপারটা বুঝতে পারে কিন্তু না বুঝার ভান করে থাকে। মেয়েদের এই এক স্বভাব, “বুক ফাটে তো মুখ ফাটে না”। ওই দিকে বিপলু নানা কথা-বার্তায়, চাল-চলনে দিশাকে বুঝাতে চেষ্টা করে যে সে দিশাকে ভালোবাসে। দিশা বুঝেও সবসময় না বুঝার ভান করে থাকতো। কারণ, দিশা সবসময় চাইতো বিপলু দিশাকে সরাসরি প্রপোজ করুক। সব মেয়েরেই এই রকম স্বপ্ন থাকে যে তার ভালোবাসার মানুষ তাকে আগে প্রপোজ করুবে, তার মনের কথাটা বলবে কিন্তু বিপলু সেটা পারছে না শুধুমাএ বন্ধুত্বটা নষ্ট হওয়ার ভয়ে। কোনদিন আর পারেওনী। দীর্ঘ দুই বছর পর আজ আবার তাদের দেখা কিন্তু বিপলু আজও দিশাকে মনের কথা না বলায় দিশার মন খারাপ।
৩০ মিনিট হয়ে গেল বিপলু এখনো আসছে না। দিশা ফোন দিলো কিন্তু বিপলু ফোনটাও ধরছে না। হয়তো বিপলু চলে গেছে, হয়তো বিপলুর আজও বলার সাহস হয়নী এমনটা ভেবে দিশা উঠে দাড়ালো। হঠাৎ পিছন থেকে কে যেন “দিশা” বলে চিৎকার দিয়ে উঠল। দিশা পিছনে ফিরে তাকালো। আরে এতো বিপলু ! ও একটু দূরে হাটুগেড়ে বসে আছে, হাতে এক গুচ্ছ লাল গোলাপ। বিপলু লাল গোলাপ গুলো দিশার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে চিৎকার করে বলে উঠল,
– দিশা……, I……Love……You……..!!!
লেকের পাড়টা যেনো বিপলুর চিৎকারে কেপেঁ উঠল। লেকের পাড়ের উৎসুক মানুষ গুলোর দৃষ্টি এখন শুধু বিপলু আর দিশার দিকে। এমন দৃশ্য হয়তো আজ বিরল তাই কেউ কেউ ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে গেল। অন্য দিকে দিশা অপলক দৃষ্টিতে বিপলুর দিকে তাকিয়ে রইল। যে বিপলু ভালোবাসি কথাটা বলতে তিন বছর সময় নিলো, যে বিপলু মনের কথাটা বলতে গেলে হাত কাপঁতে শুরু করে সেই বিপলু আজ পুরো পৃথিবীর সামনে প্রপোজ করল। এটা ভাবতেই দিশা অবাক হয়ে গেল। দিশা কেমন যেনো নিস্তব্ধ হয়ে গেলো। দিশার বিস্ময় যেনো কাটছে না। বিপলু সত্যি আজ প্রপোজ করল নাকি দিশা স্বপ্ন দেখছে। কেন যেনো আজ নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না দিশা। সব কিছুই যেনো আজ স্বপ্ন মনে হচ্ছে। এই সব কথা ভাবতে ভাবতে দিশার চোখে পানি চলে আসল।
– কিরে আর কতক্ষণ বসে থাকবো ??
বিপলুর কথায় যেনো জ্ঞান ফিরল দিশার। দিশা আস্তে আস্তে বিপলুর দিকে এগিয়ে আসলো। বিপলুর হাত থেকে ফুলের তোড়াটা নিলো। বিপলু উঠে দাড়ালো। দিশা বিপলুর দিকে তাকিয়ে স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে রইল।
কিছুক্ষণ পর_________
– কিরে, কিছু বলবি না ?
– কি বলবো ? (দিশার চোখের পানি)
– তুই কাঁদছিস কেন ?
– মাইর খাবি। এই কথাটা বলেতে এত সময় লাগলো ???
– ওকে, সরি…..।
– কানে ধর।
– কাll
বিপলু কানে ধরতে যাবে ঠিক তখনি দিশা “I Love You Too” বলে বিপলুকে জড়িয়ে ধরল। দিশার চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগলো। বিপলু জানে দিশার চোখে আজ কোনো কষ্টের কান্না ছিলো না, যা ছিলো তা ছিলো আনন্দের। আর বিপলুর চোখে-মুখে ছিলো আনন্দের হাসি। গত দুই বছর বিপলু দিশার জন্য অনেক কেঁদেছে, সেই কাঁন্না আজ হাসিতে রুপান্তরিত হয়েছে।
মরাল : সত্যিকারের ভালোবাসায় যতই ফাটল ধরুক না কেন, একদিন তা এক হবে!
Hey @akhi003,
Your post "অতঃপর ভালোবাসা" hast just been resteemed !!!.😄😻😄
BY following us, You have earned our FREE Resteem service, which will increase your viewer.
😄😻😄 Regards, free resteemed bot @tow-heed😄😄😄
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
thank you so much@tow-heed
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Hi! I am a robot. I just upvoted you! I found similar content that readers might be interested in:
https://zohirulislamripon.blogspot.com/2017/11/blog-post_52.html#!
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit