Only Death is Real

in memoir •  7 years ago 

১৯৯৮ সালে যখন রেসিডেনসিয়ালের হাউজে কুদরত ই খুদা তে থাকতাম তখন জুনিয়রদের সাথে আমার হাটাচলা বেশ ভালই ছিল। অনেকগুলোর মধ্যে দুইটা জুনিয়র ছিল যারা আমার সাথে ভালই হাটাহাটি করতো, যাদের কথা আজ মনে পড়ছে।

1063859_10152343060874113_764901014_o.jpg

এদের একজন ছিল পাপন। সাইজে পিচ্চি একটা ছেলে কিন্তু গায়ে তেজ ছিলো বহুত। রেবেল টাইপের। সেদিনগুলোতে কলেজে গার্ডিয়ান ডে হত যেখানে সবার বাবা মা এসে দেখা করতে পারতো। এসব গার্ডিয়ান ডেটের দিন ছেলেপেলেরা অনেক খাবার পাচার করতো হাউজের ভিতর। এই পাচারের কাজে আমি আর আমার বন্ধু সামি ছিলাম খুবই চেতা। এক ট্রাভেল ব্যাগ ভরে বিস্কুট চানাচুর আনতাম কিন্তু তবুও গার্ডিয়ান ডের দুপুরে ঠিকই জুনিয়রদের কাছ থেকে মসজিদের মত গামছা পেতে ওদের বিস্কুট চানাচুরের ট্যাক্স তুলতাম আমরা। একটু অমানবিক মনে হলেও এটাই সনাতন রীতি ছিল।

তো একবার পাপন, এই অমানবিক অত্যাচার সইতে না পেরে আমাকে খাটের স্ট্যান্ড খুলে দৌড়ানি দিয়েছিলো। এখানে বুঝতে হবে যে তখনকার সময়ে একজন সিনিয়রকে ধাওয়া দেয়া ছিল মহাপাপের সামিল কিন্তু ওদের সাথে এত্ত টাইম কাটিয়েছিলাম যে এগুলো কোন ব্যাপার ছিল না। যাইহোক ধাওয়া খেয়ে প্রথমে একটু পেরা খেয়ে গেলেও পরে বুঝে গেছিলাম যে ও সাইজে আমার অর্ধেক। হাহাহাহা। তাই ওরে ধরে, ওর হাতের থেকে সেই স্ট্যান্ড কেড়ে নিয়ে, ওরে নিয়া আটকে ছিলাম বাথরুমে। সেই হুলুস্থুল কান্ড, এবং পাপন তো চিল্লাপাল্লা করে শেষ। শেষে মাথা ঠান্ডা হবার পর ছেড়েছিলাম।

আরেকজন ছিলো নিদাল। ওদের ব্যাচের সবচেয়ে বেশি মাইর খেত হাউজ মাস্টার বান্টি সুলতান কাছে। আর আমাদের ব্যাচের খাইতাম আমি এবং আমি আর নিদাল অনেক দিন একসাথে মাইর খাইছি এই সল্টুর কাছে। আমার মনে আছে, মাইর খাবার দিনগুলোতে নিদাল ডাইনিং এর লাইনে এসে আমাকে জিজ্ঞেস করতো

“মোসাদ্দেক ভাই, নিচে প্যান্ট পড়ছেন কয়টা?”

এই নিদাল আবার আমার খেলোয়ারদের পেপারকাট লাগানো খাতা বেচে দেয়ার এজেন্টও ছিল। প্রতি খাতায় একটা করে বার্গার কোপাতো সে। ভালই ছিল।

1398401_10152343081774113_546063520_o.jpg

পাপনের সাথে শেষ দেখা হয়েছিলো কল্যাণপুরে, ওর সেনাবাহিনী যোগ দেয়ার আগে। তারপর আর হয় নাই। আর নিদালের সাথে যে কবে শেষ দেখা হইছিলো তা মনে নাই। কিন্তু ওর চঞ্চল চাহনি আজও মনে আছে।

নিদাল আর পাপন দুজনেই আজ মৃত। হয়তো কোনো মহাজাগতিক ধুলিক্ণা হয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে সময়ের পথে। আবার হয়তোবা প্রকৃতি তাদের ছেড়ে যাওয়া ১৪ অক্ট্যালিয়ন পরমাণুদের নিয়ে নতুন কোনো সম্ভাবনার প্রয়াস করছে…!!!?

জানিনা। জানা সম্ভবও না হয়তো।

শুধু জানি, মৃত্যুই একমাত্র সত্য এবং প্রকৃতি বড়ই রহস্যময়। আর সময়…

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!