বাংলাদেশ ক্রিকেট এক সময়ের সাড়া জাগানো উদ্ভোধনী ব্যাটার, । এখনো যার খেলা দেখতে অধীর আগ্রহে বসে থাকেন দর্শকরা। মাঠের চারদিকে দৃষ্টিনন্দন সব শর্ট। ঘরের মাঠে পাকিস্থান বধের অন্যতম সৈনিক। দলের ভরষার প্রতিক হয়ে উঠা ছেলেটি হঠাৎ কোথায় যেন হারিয়ে গেলেন। দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে খুজে ফেরা এক সৈনিক যার নাম সৌম্য সরকার। সাতক্ষীরায় জন্ম নেয়া সৌম্য সরকারও বাবার মতো শিক্ষক হতে চেয়েছিলেন। তবে তার ক্রিকেটীয় প্রতিভা এবং দেশের বৃহত্তম ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান বিকেএসপির কারণে তিনি ক্রিকেটে ক্যারিয়ার শুরু করেন। ২০১০ ও ২০১২ সালে দুটি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলেছেন তিনি। টাউনসভিলে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার জিমি পিয়ারসনকে পরাজিত করে তিনি শিরোনামে এসেছিলেন।
২০১০-১১ মৌসুমে খুলনা বিভাগের হয়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোম সিরিজের শেষ খেলায় তার ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল, এবং ২০১৫ সালের ২৮ শে এপ্রিল পাকিস্তানের বিপক্ষে টেষ্ট ফরম্যাটে অভিষেক ঘটে, ঘরের মাঠে পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে পরপর সিরিজে পরাজিত করা বাংলাদেশ দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন তিনি। তিনি এই তিনটি শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সম্মিলিত নয়টি ম্যাচে সামগ্রিকভাবে ৪৯৭ রান করেছিলেন, যার মধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তিনটি হাফ সেঞ্চুরি এবং একটি অপরাজিত সেঞ্চুরি (১৩৩) অন্তর্ভুক্ত ছিল। মরনে মরকেল, রাবাদা, মরিস ও তাহিরের বিপক্ষে ২৭, ৮৮* ও ৯০ রান করে তিনি ম্যান অব দ্য সিরিজ নির্বাচিত হন।
ইমরুল কায়েসের ইনজুরির কারণে ২০১৭ সালে ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ দিনের ফরম্যাটে ফিরেছিলেন তিনি। প্রথম প্রবন্ধে তার স্কোর ৮৬ যা তাকে প্রথম একাদশে নিয়মিত স্থান এনে দেয়। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এখন পর্যন্ত টেস্ট সিরিজই তার সেরা সিরিজ।
নির্বাচকরা ২১ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের ওপর আস্থা রেখেছিলেন এবং ওয়ানডে অভিষেকের মাত্র কয়েক মাস পর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ২০১৫ আইসিসি বিশ্বকাপের জন্য তাকে বেছে নিয়েছিলেন। ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে অলরাউন্ড ব্যাটিং পারফরম্যান্সের মাধ্যমে ঐতিহাসিক জয় পায় বাংলাদেশ।
নিজেকে হারিয়ে ফেলা সৌম্য কোন ভাবেই নিজেকে ফিরে পাচ্ছিলেন না। প্রতি ম্যাচে সুন্দর একটা শুরুর পরও ইনিসং বড় করতে না পারা।মনে হচ্ছিলো যেন আত্ববিশ্বাসটাই যেন হারিয়ে ফেলেছেন। ফলে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়লেন। ঢাকার হয়ে খেললেন বিপিএল সেখানেও নামের প্রতি সুবিচার করতে ব্যর্থ হলেন তিনি। খেললেন ডিপিএল তার পরও নিজেকে কিছুতেই ফিরে না পাওয়াই যখন কি্রকেট পাড়ায় সৌম্যের ক্যারিয়ার নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে ঠিক তখনি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তার ব্যাট হাসলো। রুপগঞ্জের বিপক্ষে খেললেন সেই চোখ জোড়ানো সব শর্ট। করলেন ১০৮ বলে ১০০ রানের এক ঝকঝকে ইনিসং। অনেকটা দেরিতে হলেও তার ব্যাট হাসলো। এখান থেকে আত্ববিশ্বাস টাকে যদি আবারো ফিরে পান তাহলে সেটা হবে দেশের ক্রিকেটের জন্য বড় পাওয়া। বাংলাদেশের সকল মানুষের চাওয়া তিনি যেন আবার নিজেকে ফিরে পান।