গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে জসিম। সারাদিন মাঠে কাজ করার পরে এখন সে বাড়িতে ফিরছে। গ্রামের শেষ প্রান্তের দিকে ছোট্ট একটি কৃষি জমি আছে জসিমের। ওই ছোট্ট জমিতেই সে প্রতি বছর ফসল ফলায়, আর খায়। খুবই দরিদ্রতার সাথে দিন যাপন করে জসিম, তবুও সংসারে আনন্দ এবং সুখের শেষ নেই। রহিমের পরিবারে তার স্ত্রী ও তার একটি মেয়ে আছে। গত বছর রহিমের মা মারা গিয়েছে। আর ছোটবেলায় রহিমের বাবা মারা গেছে। এখন তার আপন বলতে তার স্ত্রী এবং তার মেয়েই আছে এই পৃথিবীতে।
শীতের শুরু, ধান কাটার মৌসুম চলে এসেছে। রহিমের জমিতে পাকা ধান যেন ঝক ঝক করছে। একজন পরিশ্রমী কৃষক কি বুঝতে পারবে এই দৃশ্যের যে আসলে কি সুখ আর আনন্দ। সারা বছর কষ্ট করার পর যখন ফলাফল আসে তখন তা দেখতে যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। এই ধান জসিম কয়েকদিনের মধ্যে কাটবে, তারপর তা বাড়িতে নিয়ে যাবে, তারপর সে ও তার স্ত্রী মিলে এই ধান ঝাড়বে। সেই ছাড়া ধান সিদ্ধ করে শুকানোর পর সেখান থেকে চাল বানাবে। আর তা দিয়েই রহিমের পরবর্তী মৌসুমের ধান পর্যন্ত খাওয়া-দাওয়া কাজ হবে। রহিমের জমিতে এবার অনেক ভালো ধানের ফলন হয়েছে। সে অর্ধেকটা ধান নিজেদের জন্য রাখবে এবং বাকিটা বিক্রি করে দিবে অন্যান্য খরচের জন্য।
সেই দিন সন্ধ্যাবেলা বাড়িতে ফিরছিল জসিম। রাস্তায় তার সাথে তার বন্ধু রহিমের সাথে দেখা হল। রহিমের চেহারা অনেক বিষন্ন ছিল। তার বিষন্ন চেহারা দেখে জসিম জিজ্ঞেস করল কিরে রহিম কি অবস্থা। রহিম মন খারাপ নিয়ে বলল এইতো আছি কোনরকম বেঁচে। খুব ঝামেলায় আছি রে আমার ওই জমিটুকু নিয়ে। তুই তো জানিস আমার জমির পাশে আসাদুল নেতার জমি। অনেকদিন ধরেই সে আমার জমিটি দখল করতে চাচ্ছে। আজ তার দলবল নিয়ে আমার পাকা ধান এর অর্ধেকটা নষ্ট করেছে।
চলবে...