"আমি যেদিন প্রথম তাকে আমার ভালোবাসার কথা জানাই তখন সে মুখের উপর না করে দেয়। পড়ালেখায় খুবই সিরিয়াস ছিলো সে। ফার্স্ট ইয়ারে যেদিন প্রথম তাকে দেখেছিলাম সেদিনই তাকে খুব পছন্দ হয়েছিলো। না করে দেওয়ার অপমান মাথায় নিয়ে আমি পড়ালেখায় মন দিলাম। আমার মধ্যে জিদ চেপে গেলো, পরীক্ষাগুলোতেও নিয়মিত ভালো করতে লাগলাম। ইতিমধ্যে ক্যাম্পাসে সবাই জেনে গিয়েছে কার প্রতি কার ইন্টারেস্ট।
কুমিল্লার ময়নামতিতে ব্যাচ পিকনিক ছিলো ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৮১, আজ থেকে ৩৭ বছর আগের কথা, আমরা তখন থার্ড ইয়ারে পড়ি। ব্যাচের সবাই আমাদের নিয়ে দুষ্টামি করছে, গান গাচ্ছে, আমাদের ছবি তুলে দিচ্ছে, একজন কাজী সেজে আমাদের বিয়েও পড়িয়ে দিলো। পিকনিক থেকে আসতে আসতে রাত হয়ে গেলো। আমাদের দুজনেরই বাসা ছিলো কাছাকাছি, আজিমপুরে। তো আমার উপর দায়িত্ব পড়লো তাঁকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসার। আমি তাকে বুঝালাম এগুলো ফান ছিলো, সিরিয়াসলি নিয়ো না। তখনো কিন্তু সে হ্যাঁ বলেনি। তার কথা - তার বাসায় কখনো রাজি হবে না। আমি বললাম, বাসা না হয় রাজি না, তুমি ??
৬ দিন পর, ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখ আমার বন্ধুরা আমাকে একথা সেকথা বলে নিয়ে গেলো ওল্ড গ্যালারির পেছনে। সেখানে গিয়ে তো আমি অবাক। তার বান্ধবীরা তাকে সুন্দর করে সাজিয়ে নিয়ে এসেছে। তারপর তো আর কিছু বলা লাগেনি, যা বোঝার বুঝেই নিলাম। তখন আমাদের Eye ওয়ার্ড চলছিলো। দুজন গেলাম একসাথে। স্লিট ল্যাম্পে বসলাম চোখ পরীক্ষা করা শেখার জন্যে। সে হলো পেশেন্ট, আর আমি হলাম ডাক্তার।
ঠিক তিন বছর পর '৮৪ এর ৩ ফেব্রুয়ারি আমাদের বিয়ে হলো। বিয়ের পরে দুজনে একসাথে ইরান চলে গেলাম। একই জায়গায় চাকুরি করতাম। আমি ইরান যাই ৮৪ এর ডিসেম্বরে। সে তখন বাংলাদেশে থেকে যায়, কারণ মার্চে আমাদের ছেলে জন্ম নেয়। দুইমাস পর সে ইরানে চলে আসলো। ৯৩ পর্যন্ত সেখানেই ছিলাম। এরপর দেশে ফেরত এসে ছেলে স্কুলে ভর্তি হলো, সে MPH এ ভর্তি হলো। আর আমি চলে গেলাম USA । অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ধীরে ধীরে নিজের ক্যারিয়ার গড়লাম জেনারেল সার্জারিতে। খুব কঠিন সময় পাড় করতে হয়েছিলো। হাজার হাজার মাইলের দুরত্ব ঘুচাতে চিঠিই ছিলো তখন একমাত্র সম্বল।
এখন আমরা দুজনেই আমেরিকায়। ছেলেও Ibrahim Medical College থেকে পাশ করে, USMLE দিয়ে এখন রেসিডেন্সি করছে। ছেলের বউও এখানে। ক্যারিয়ারের প্রয়োজনে দীর্ঘ দিন আমরা একে অপর থেকে দূরে ছিলাম, দুজনকেই অনেক স্যাক্রিফাইস করতে হয়েছে। কিন্তু তুমি যদি সত্যি সত্যি, হৃদয় দিয়ে একজনকে ভালোবাসো তাহলে দুরত্ব কোনো বিষয়ই না।
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
To get upvote from @wafrica, the post needs at least 300 characters! Please describe your work in detail ;-)
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
To get upvote from @artzone, the post needs at least 300 characters! Please describe your work in detail ;-)
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
@jerrybanfield
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit