দুর্বল হয়ে পড়ছে সুন্দরবনের বাঘ

in tiger •  7 years ago 

সুন্দরবনের বেঙ্গল টাইগার ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে। প্রতিকূল পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতা হারাচ্ছে প্রাণীটি। দেশের ও বিদেশের একদল বিজ্ঞানী গবেষণা করে দেখেছেন, ১০০ বছর ধরে বেঙ্গল টাইগার শুধু সুন্দরবনের মধ্যে টিকে আছে। বনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত পাঁচটি দীর্ঘ নদী তাদের নির্দিষ্ট কিছু স্থানে আবদ্ধ করে ফেলেছে। এতে এক এলাকার বাঘের সঙ্গে অন্য এলাকার বাঘের প্রজনন-সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে না। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নিয়মিত নৌচলাচল ও মানুষের নানা তৎপরতা। ফলে সুন্দরবনের মধ্যে বাঘের এলাকাভিত্তিক বৈশিষ্ট্য তৈরি হচ্ছে, যা ওই প্রাণীটির ভবিষ্যতে টিকে থাকার ক্ষমতা নষ্ট করে দিচ্ছে।

‘সুন্দরবনের বাঘের জিনগত কাঠামো কি নদীর মাধ্যমে প্রভাবিত হচ্ছে?’ শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধটি চলতি বছরের শুরুতে বিশ্বখ্যাত স্প্রিংগার প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আবদুল আজিজের নেতৃত্বে পরিচালিত ওই গবেষণায় আরও যুক্ত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের শিক্ষক অ্যাডাম বার্লো ও যুক্তরাজ্যের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন গবেষক।

এ ব্যাপারে অধ্যাপক আবদুল আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, চোরা শিকারিসহ নানা তৎপরতায় সুন্দরবনের বাঘের হুমকি বাড়ছে। আর প্রাকৃতিকভাবে সুন্দরবন পাঁচটি নদী দিয়ে বিভাজিত। ফলে এর প্রভাব তো বাঘের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে থাকবেই। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে নৌযান চলাচল বেড়ে গেছে। ফলে বাঘের জনসংখ্যা ও বসতি বিভাজিত হয়ে পড়েছে। সুন্দরবনের চারপাশে যেভাবে শিল্পকারখানা হচ্ছে, তাতে নৌযান আরও বাড়বে। এই নৌচলাচল নিয়ন্ত্রণে আনা না গেলে বাঘের চলাচল আরও নিয়ন্ত্রিত হবে ও প্রাণীটি জিনগতভাবে আরও দুর্বল হয়ে পড়বে।

সরকারি হিসাবে বর্তমানে বাঘের সংখ্যা ১০৬ টি। ২০১৪ সালের ২০ নভেম্বর থেকে ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পরিচালিত ওই গবেষণায় বাঘের মলের ৫১২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এই মল থেকে সংগৃহীত ডিএনএ বিশ্লেষণ করা হয়।

গবেষণায় বাঘের জিনগত কাঠামোর ওপর সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া রায়মঙ্গল, হাড়িয়াভাঙ্গা, আড়পাঙ্গাসিয়া, শিবসা ও পশুর নদ-নদীর প্রভাব পাওয়া যায়। এই নদ-নদীগুলো সুন্দরবনের বাঘকে জিনগতভাবে আলাদা করে ফেলছে। নদ-নদীগুলো দেড় থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার পর্যন্ত প্রশস্ত হওয়ায় বাঘ সহজে পারাপার করতে পারে না। এতে প্রজননের মাধ্যমে জিনের আদান-প্রদান বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। বনের একই এলাকার মধ্যে বাঘের প্রজনন-সম্পর্ক সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে। এতে বাঘের জিনগত বৈশিষ্ট্য বৈচিত্র্য হারাচ্ছে।

বন বিভাগের বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন সংরক্ষক জাহিদুল কবির বলেন, সুন্দরবনে বাঘ গত ১০০ বছরে ৮ থেকে ১০টি প্রজন্ম অতিক্রান্ত করেছে। বনটি বেশ বড় হলেও সেখানে বাঘের বসবাস সম্ভব ও খাদ্য আছে, এমন এলাকা খুবই কম।

আজ রোববার বিশ্ব বাঘ দিবস। এবারের দিবসের মূল স্লোগান ‘বাঘ বাঁচাই, বাঁচাই বন, রক্ষা পাবে সুন্দরবন’।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Hi! I am a robot. I just upvoted you! I found similar content that readers might be interested in:
https://bodyspace.bodybuilding.com/

Congratulations @nirsarkarpintwo! You received a personal award!

Happy Birthday! - You are on the Steem blockchain for 1 year!

You can view your badges on your Steem Board and compare to others on the Steem Ranking

Vote for @Steemitboard as a witness to get one more award and increased upvotes!