ঘুরে এলাম নুহাশ পল্লী থেকে

in travel •  7 years ago 

কথার জাদুকর হুমায়ুন আহমেদের জন্য নুহাশপল্লী ছিল একটি স্বর্গ। টিভি নাটক এবং চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করার পর তিনি তাঁর বেশীরভাগ সময় এখানেই কাটিয়েছেন।


গাজীপুরের পিরুজালী গ্রামের বেশীরভাগ পথই ঘন শালবনে আচ্ছাদিত। আলো আধারিতে ঢেকে থাকা এমনই একটি পথ আপনাকে নিয়ে যাবে গাজীপুর সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নুহাশপল্লীতে।
১৯৮৭ সালে ২২ বিঘা জমির উপর স্থাপিত নুহাশপল্লীর বর্তমান আয়তন প্রায় ৪০ বিঘা। অভিনেতা ডাঃ ইজাজ এখানকার জমিটি কিনতে সহায়তা করেন। হুমায়ুন আহমেদ এবং তাঁর প্রথম স্ত্রী গুলতেকিন আহমেদের একমাত্র পুত্র নুহাশের নামে নুহাশপল্লীর নামকরণ করা হয়েছে।

নুহাশ পল্লীর উত্তর প্রান্তে একটি বড় পুকর রয়েছে যেটির উপর একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। পুকুরের মাঝে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করে একটি তাঁবু টানানো হত। হুমায়ুন আহমেদ ও তাঁর স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনের একটি কন্যা সন্তান পৃথিবীর আলো দেখার আগেই মারা যায়। হুমায়ুন আহমেদ তাঁর সেই কন্যার নাম দিয়েছিলেন লীলাবতি। এই পুকুরটির নামও রাখা হয়েছে লীলাবতি। হুমায়ুন আহমেদ লীলাবতি নামে একটি গ্রন্থও রচনা করেছেন।
স্থানীয় স্থপতি আসাদুজ্জামান খানের তৈরি করা বেশকিছু ভাস্কর্য রয়েছে নুহাশ পল্লীতে। এখানে প্রবেশের সময় ‘মা ও শিশু’ নামক ভাস্কর্যটি দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারবেন না। শিশুদের আনন্দ দিতে এখানে ভুত এবং ব্যাঙের আকারের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া এখানকার ট্রি হাউজটি শিশুদের আনন্দের অন্যতম উৎস।হুমায়ুন আহমেদ ভালবাসতেন বৃষ্টি এবং পূর্ণিমার রাত। বৃষ্টি দেখার জন্য তিনি ‘বৃষ্টি বিলাস’ নামে একটি কক্ষ নির্মাণ করেছিলেন। হুমায়ুন আহমেদ যেন চাঁদের ছায়া দেখতে পারেন এজন্য এখানকার সবুজ উঠান সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হত। নুহাশ পল্লীর ম্যানেজার বুলবুল নয়জনের একটি দল নিয়ে এখানকার সবকিছু দেখাশোনা করেন।

গাজীপুর জেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের পিরুজালি গ্রামে নুহাশপল্লী অবস্থিত। ঢাকা থেকে বাসে করে গাজীপুরের হোতাপাড়া বাসস্ট্যান্ডে পৌছাতে পারবেন। ঢাকা থেকে শ্রীপুর, মাওনা, কাপাসিয়া এবং হোতাপুরের উদ্দেশ্যে প্রভাতি, বনশ্রীসহ বেশকিছু বাসচলাচল করে। বাসে যেতে খরচ হবে ৫০/- টাকা থেকে ৭০/- টাকা।
হোতাপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে ৮ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত নুহাশপল্লীতে টেম্পো, রিকশাভ্যান, অথবা বেবিট্যাক্সিতে পৌছাতে পারবেন। টেম্পোতে উঠলে ভাড়া দিতে হবে ৩০/- টাকা। এছাড়া রিকশা এবং ট্যাক্সিতে খরচ হবে যথাক্রমে ৫০/- টাকা থেকে ৬০/- টাকা এবং ১০০/- টাকা থেকে ১২০/- টাকা। ঢাকা থেকে গাড়ি ভাড়া করে অথবা ব্যাক্তিগত গাড়িতে সরাসরি নুহাশপল্লীতে যেতে পারবেন।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

great.

This post has received a 4.37 % upvote from @morwhale thanks to: @alorozario.

great post alorozario! keep it up! and thanks again for following!