আশা করি, সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আবার একটা নতুন ব্লগ নিয়ে হাজির হলাম। আজ বলল আমার শৈশবের কথা। মাঝে মাঝে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে আমার শৈশবে। কি মধুর ছিল সেই দিন গুলো।মনে হয় যদি আবার ফিরে পেতাম সেই শৈশবের দিনগুলি।
ছবি:ধানের মাঠ।
আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা গ্রামে। গ্রাম মানেই এক অন্যরকম আবেগ যা আমার মনে হয় শহরে পাওয়া যাবে না। আমরা যখন ছোট ছিলাম তখনকার দিনগুলোর কথা খুব মনে পড়ে।সকাল বেলা ফুল কুড়াতে যেতাম আমার সব চাচাতো ভাই বোনেরা মিলে। আবার সেই ফুলগুলো দিয়ে মালা গাঁথতাম। বকুল ফুল গুলা নিয়ে প্রতিযোগিতা হত যে কার ফুলের মালা কতদিন থাকবে।ছোট বেলায় দেখতাম মাঠের পর মাঠ শুধু আখ লাগানো সেগুলো এই শীতের সময় মাড়াই করে আখের গুড় তৈরি করা হত।এই সময়টা উৎসব মুখর থাকত।আবার যখন মা পিঠা তৈরি করত তখনতো রীতিমত পাল্লা হত ভোরে কে আগে উঠে পিঠা খাবে।এখন তো নিজেও পিঠা তৈরি করি কিন্তু সৈই অনুভূতি আর অনুভব করতে পারি না।
আবার যখন বর্ষাকাল আসত তখন চারিদিকে থইথই পানি। রাস্তাঘাট সব পানিতে ডুবে যেত।চারিদিকে সবাই খেপলা জাল দিয়ে প্রচুর মাছ মারত।এখন সেই বর্ষাকালটা অনেক মনে পড়ে।পাড়ার বড় চাচাতো ভায়েরা মিলে কলা গাছের ভেলা তৈরি করে পানিতে ভাসাতো।আমরা সেই ভেলায় চড়ার জন্য রীতিমত লাইন দিতাম।তাদের অনেক অনুরোধ করার পর তারা একটুখানি চড়াতো।যখন বৃষ্টি হত টানা পাচ সাতদিন হয়ে যেত। আমরা ওই বৃষ্টিতে ছাতা মাথায় দিয়েই বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতাম।না গেলেই স্যার ম্যাডামদের হাতের বেতের বাড়ি পাওনা হত। এখন আর স্যারদের হাতে বেত দেখা যায় না।
গ্রীষ্মকাল এ কাল বৈশাখী ঝড় হয়। আমরা ঝড়ের সময় সবাই মিলে এক ঘরে বসে থাকতাম।কারন আগেকার দিনের ঘরবাড়ি এখনকার মত ছিলনা বেশিরভাগ মানুষেরই কাচা ঘর ছিল আর তাও আবার নড়বড়ে। তাই ঝড় উঠলে সবাই মিলে আমার দাদা দাদীর কাছে অবস্থান করতাম। আর যাদের একটু সাহস বেশি ছিল তারা ঝড়ের মধ্যে আম কুড়াতে দৌড় দিত।আমি তখন একটা ভীতুর ডিম ছিলাম কিন্তু এখন আমি সুযোগ পেলে ঝড়ের মধ্যে আম কুড়াতে যায় আর ভাবি ছোট বেলায় কত ভীতু ছিলাম।
আমরা অনেক গুলো চাচাতো ভাইবোন। সবাই মিলে একসাথে কত খেলাধুলা করছি।যেমন গোল্লাছুট, বোছি, পাতা সংগ্রহ আবার খেলনাপাতি নিয়ে সারাদিন খেলা করছি।সেসব দিনগুলো এখন খুব মনে পড়ে। আমার বাচ্চারা আর এখন এসব খেলা কিভাবে খেলে তাই জানেই না। ছোট বেলায় গ্রামের মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া রেললাইন দিয়ে ছুটে যাওয়া রেলগাড়ি দেখার জন্য দৌড় দিতাম।কিন্তু এখন আর সেই গাড়ি দেখার জন্য আর কোন আবেগ কাজ করে না।আহা শৈশব আবার যদি ফিরে পেতাম।
ছবি: রেললাইন
পরিশেষে বলি শৈশবের দিনগুলি মানুষের জীবনের এক অবিস্মরণীয় স্মৃতি। যা ভুলে থাকা যায় না।বরং আবার সেই শেশবে ফিরে নিয়ে যায়।শৈশবের দিনগুলো কি সুন্দর স্মৃতি মধুর। এখন আর চাইলেও ছোটবেলার বন্ধুদের সাথে দেখা হয় না কারন সবাই সবার সংসার ধর্ম নিয়ে ব্যস্ত।