হাওড়া ব্রিজ, রবীন্দ্র সেতু নামেও পরিচিত, ভারতের কলকাতার একটি আইকনিক প্রতীক। এটি 3 ফেব্রুয়ারী, 1943 সালে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছিল এবং এটির নির্মাণের সময় এটি ছিল বিশ্বের তৃতীয় দীর্ঘতম ক্যান্টিলিভার সেতু। এখানে হাওড়া সেতুর ইতিহাস সম্পর্কে কিছু কম পরিচিত তথ্য রয়েছে:
সেতুটির মূল পরিকল্পনা ছিল একটি ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ করা, কিন্তু নদীর তলদেশের কোমলতার কারণে নকশাটি ক্যান্টিলিভার সেতুতে পরিবর্তন করা হয়।
ব্রিজটি ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ার রেন্ডেল, পামার এবং ট্রিটন দ্বারা ডিজাইন করা হয়েছিল এবং ভারতীয় ঠিকাদার ব্রেথওয়েট, বার্ন অ্যান্ড জেসপ কনস্ট্রাকশন কোম্পানি দ্বারা নির্মিত হয়েছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, সেতুটিকে জাপানিদের দ্বারা বোমা হামলার একটি সম্ভাব্য লক্ষ্য হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছিল, তাই ব্রিটিশ সরকার এটিকে ছদ্মবেশী রঙে আঁকা এবং বাতাস থেকে কম দৃশ্যমান করার জন্য বাঁশ ও পাটের চাটাই দিয়ে ঢেকে রাখার নির্দেশ দেয়।
সেতুটি 26,500 টন উচ্চ-টেনসিল অ্যালয় স্টিল দিয়ে তৈরি এবং কোনও বাদাম বা বোল্ট ব্যবহার না করেই তৈরি করা হয়েছিল। উপাদানগুলিকে একত্রে ঢালাই করা হয়েছিল, যা কাঠামোটিকে আরও শক্তিশালী এবং টেকসই করে তোলে।
সেতুটির নির্মাণ একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল এবং এটি নির্মাণের সময় 26 জনেরও বেশি শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছিলেন। শ্রমিকদের কোনো নিরাপত্তা সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়নি এবং দুর্ঘটনা ছিল সাধারণ।
ব্রিজটি তার অনন্য শব্দের জন্যও পরিচিত। যখন যানবাহন সেতুর উপর দিয়ে যায়, তখন সাসপেনশন ক্যাবলের গতিবিধি একটি গুনগুন শব্দ উৎপন্ন করে, যা প্রায়ই ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে ব্যবহৃত একটি তানপুরার শব্দের সাথে তুলনা করা হয়।
1960-এর দশকে স্টিলের একটি নতুন স্তর যুক্ত করা এবং 2019 সালে এলইডি লাইটের সাথে আসল আলো ব্যবস্থার প্রতিস্থাপন সহ সেতুটি কয়েক বছর ধরে বেশ কিছু সংস্কারের মধ্য দিয়ে গেছে।
সামগ্রিকভাবে, হাওড়া ব্রিজের একটি সমৃদ্ধ এবং আকর্ষণীয় ইতিহাস রয়েছে এবং এটি কলকাতা শহরের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ল্যান্ডমার্ক এবং পরিবহন কেন্দ্র হিসাবে অবিরত রয়েছে।