ভারতের ঐতিহ্যবাহী আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ হলে দীর্ঘদিন থাকা অবিভক্ত ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা ও পাকিস্তানের স্থপতি মোহম্মদ আলী জিন্নাহর একটি ছবি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
ছবিটি কেন এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির স্থানীয় সাংসদ সতীশ গৌতম। তিনি বিষয়টি নিয়ে গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তারিক মনসুরকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, কেন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে জিন্নাহর ছবি থাকবে?
বিজেপির এই সাংসদের ভাষ্য, ‘যে লোকটি (জিন্নাহ) দেশভাগের জন্য দায়ী, তাঁর ছবি কেন রাখা হবে? বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি বিশিষ্ট মানুষের ছবি রাখতে চায়, তবে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা স্যার সৈয়দ আহমেদ ও জমিদানকারী মহেন্দ্র প্রতাপ সিংয়ের মতো মানুষের ছবি রাখা হোক।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাবেক সভাপতি ফাইজাল হাসান সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, জিন্নাহর ছবিটি ১৯৩৮ সাল থেকে রয়েছে। এখন সরকার যদি ছবিটি সরাতে বলে, তবে তা নিয়ে ভাবা যেতে পারে।
জিন্নাহর ছবি নিয়ে শুরু হওয়া বিতর্কের মাঝে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাইফি কিদওয়াই গতকাল মঙ্গলবার সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ১৯৩৮ সালে জিন্নাহ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন। সে সময় তাঁকে সম্মানজনক ডিগ্রি দেওয়া হয়। তখন থেকে ছবিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে।
সাইফি কিদওয়াই এ কথাও বলেছেন, ১৯২০ সালের ১৯ অক্টোবর মহাত্মা গান্ধীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম আজীবন সদস্যপদ দেওয়া হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কোনো জাতীয় নেতা জিন্নাহর ছবি সরানোর দাবি তোলেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের বর্তমান সভাপতি মাশকুর আহমেদ ওসমানি বলেছেন, দেশ ভাগের আগেই জিন্নাহকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আজীবন সদস্যপদ দেওয়া হয়েছিল। বিজেপির সাংসদ সতীশ গৌতমের উচিত ছিল, চিঠিটি উপাচার্যকে না পাঠিয়ে ছাত্র সংসদে পাঠানো। কারণ, ছবিটি ছাত্র সংসদের মিলনায়তনে টাঙানো রয়েছে। ছাত্র সংসদে চিঠি দিলে উত্তর পেতেন সাংসদ।
ভারতের উত্তর প্রদেশের আলিগড় জেলা শহরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান। বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।