মাঝ রাতে বিড়াল ছানা উদ্ধার অভিযান ।

in hive-120823 •  12 days ago 

IMG_9003.jpeg

ক'দিন থেকেই শরীর খুব একটা ভালো নেই। কিন্তু ছোট পরিবার হলে যা হয়.. একদম বিছানায় না পরে যাওয়া পর্যন্ত সবকিছু চালিয়ে নিয়েই যেতে হয়।এজন্যই আমি জয়েন্ট পরিবার পছন্দ করি। ছোটখাটো কিছু জিনিস একটু কষ্ট
করে মানিয়ে নিতে পারলে সুবিধা পাওয়া যায় অনেক বেশি।
এরই মাঝে আরও এক বাড়তি ঝামেলা নিজের কাঁধে নিয়েছি আগ বাড়িয়ে।যার কারনে অন্য কোনদিকে তাকাতেও পারছি না খুব একটা ।

আসলে , কদিন আগে সকালের দিকে হঠাৎ করেই আশেপাশে বিড়াল এর বাচ্চার শব্দ পাচ্ছিলাম।শুরুতে ভেবেছিলাম যে, বাইরে থেকে আসতেছে।এরপর আবারো একবার শব্দ পেয়ে দরজা খুলে দেখি একটা বিড়ালের বাচচা আমাকে দেখেই পাশের বাড়ির জুতার আলমারির ভেতর দৌড়ে ঢুকে পরলো। আমাদের ফ্লোরে বিড়াল আসলো কোথায় থেকে ভেবে খানিকটা অবাক হলাম। কারন এখন পর্যন্ত কোন বিড়াল এখানে দেখি নাই।

IMG_8968.jpeg

একা ধরতে পারবো না ভেবে ছেলেকে ঘুম থেকে টেনে তুললাম।কারন যদি কোন ভাবে সিড়ির ওপরে রাখা বিভিন্ন বাড়ির জিনিসপত্রের পেছনে ঢুকে পরে তাহলে কেউ খেয়াল না করলে না খেয়ে মারা যাবে। আমার ছেলে আর আমি সেই বিড়াল ছানাকে ধরার চেষ্টা করতেই নখ ও দাঁত বের করে ভয় দেখানো শুরু করে দিলো।

তারপরও আমার ছেলে ওকে ধরে ফেললো কিন্তু পর মূহুর্তেই কিভাবে যেন মোচড় দিয়ে ওকে খামচি দিয়ে দৌড়ে নিচের দিকে নেমে গেল সিড়ি বেয়ে পেছনে পেছনে আমরা গেলাম ঠিকই কিন্তু খুঁজে পেলাম না।
ছেলে নিচে নেমে গ্যারেজে গিয়ে খুঁজে আসলো কিন্তু পেল না।সাথে দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করে আসলো ওর সম্পর্কে কিন্তু সে-ও কিছু জানাতে পারলো না।

IMG_9006.jpeg

পরে সারাদিন বিড়ালের আর কোন খোঁজ খবর পাই নাই। তাই ভেবেছিলাম যে, হয়তো কোন বাসার বিড়াল তার নিজের বাড়িতে চলে গেছে। কিন্তু রাত দশটার দিকে হঠাৎ করেই আবারও বিড়াল এর কান্নার শব্দ পেলাম।

ছেলেকে বললাম যে, চল ওকে খুঁজে আসি। সকালে খামচি খাওয়ার কারনে ওর মাঝে তেমন একটা আগ্রহ দেখলাম না।তারপরও ওকে খানিকটা জোড় করেই নিচে পাঠালাম।ছোট ছেলে বাসায় থাকলে সমস্যা হতো না কিন্তু ও বিয়ে বাড়িতে ছিলো।

IMG_8972.jpeg

একটু পরেই বড়ো ছেলে বাসায় এসে বললো যে, তোমার বিড়ালকে সব জায়গায় খুঁজে এসেছি কিন্তু কোথাও নেই।
কিন্তু আবারও কান্নার শব্দ পেলাম একটু পরেই। তাই এবার ওকে বাদ দিয়ে আমি নিজেই সিড়ি দিয়ে নিচের দিকে নামা শুরু করলাম। আমার পেছনে পেছনে দেখি ছেলেও নেমে এসেছে। এরপরে দুইজন মিলে শুরু করলাম উদ্ধার অভিযান।

প্রতিটা বাসার সামনে থেকে শুরু করে সবজায়গায় খোঁজাখুজি শুরু করলাম।এত রাতে মানুষ এর বাসার সামনে এভাবে জিনিসপত্র সরিয়ে সড়িয়ে দেখতে খুবই অস্বস্তি লাগছিলো, কিন্তু তারপরও উদ্ধার অভিযান চালাতেই থাকলাম।

IMG_8984.jpeg

কিন্তু কোথাও না পেয়ে বাসায় চলে এসে গেট দিয়ে ঢুকবো এমন সময় মনে হলো যে, আমাদের খুব কাছেই শব্দ আসতেছে। তাই আবারও নিচে নামলাম। এবার সফল হলাম। আমাদের নিচের তলায় এক বাসার সামনে প্রায় দরজা সমান উঁচু একটা বক্স রাখা। টর্চ দিয়ে পেছনে উঁকি দেয়ার পরে দেখলাম এককোনায় যেয়ে দুইপায়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

ওকে বের করতে হলে ওই বক্স না সরিয়ে বের করার কোন ওপায়ই নেই। তাই কলিং বেল দিলাম ওই বাসায়। কিন্তু তাদের কোন সাড়া পেলাম না।এরপরে নিজেরাই সরানোর উদ্যোগ নিলাম।সে বের হয়ে ওপরে গিয়ে জানালার গ্রিলের ফাঁকায় ঢুকে পরলো।
এরপরে শুরু হলো আসল যুদ্ধ। দাঁত, নখ আর শব্দ এই তিনবোমা আমাদের ওপরে প্রয়োগ করা শুরু করলো সে।
দুধ এর লোভ দেখিয়ে চেষ্টা করলাম কিন্তু কোন কাজেই আসলো না।

পরে ছেলেকে বললাম বাসা থেকে একটা ভারি তোয়ালে নিয়ে আসতে। এর পরে ঘাড়ে ধরে কতগুলো খামচি খেয়ে তোয়ালে দিয়ে জড়িয়ে ফেললাম।

IMG_9011.jpeg

দুই জনে মিলে কোনরকমে ধরাধরি করে বাসায় এনে রুমের সব দরজা জানালা বন্ধ করে দিলাম।এরপরে আমি আর আমার ছেলে দুজনেই হাঁপাতে হাঁপাতে বসে পরলাম।আমার হাসবেন্ড হাসতে হাসতে বলতে লাগলো একটা বিড়াল নিয়ে দুজনের এই অবস্থা।
তাকে বললাম যে, এখন একটা কথাও বলবে না।এরপরে বিভিন্ন রকমের খাবার দিলাম কিন্তু কোন কাজই হলো না।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে সাড়ে বারোটার বেশি বাজে।আর এভাবেই আমাদের বিড়াল এর উদ্ধার অভিযান শেষ করলাম



Thank You So Much For Reading My Blog

3KyYabPY3g77mhATvBAAUF5zNR1CtqkeWauN9MRyWDCSJJeN9WZVXxTFs1osy6uhZisoaiFyWVDNasfkuL6TCt1ktBsbpzwrjDQjD5Whfk...ZaM9uuYHaeW4UUPGGgs2cmDJiTjepqhtQSaepYYFHTcDDjyKwJFNySU1pqwEMpSESQC3Gn7hqBvLRjSYsY6BdDKRgFVbQR2Yp7VjXiG9Wvs5d8nxs9LuoDTwMx.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Hello, Thank you for supporting us.

Loading...

বিড়াল খুবই শান্ত প্রিয় একটা প্রাণী তবে শহরের বাসায় এ ধরনের বিড়াল লালন-পালন করা একেবারেই কষ্টকর হয়ে যায় আপনাদের বাসায় বিড়াল এসেছে প্রথম অবস্থায় আপনারা খুঁজে বের করেছেন পরে আপনার ছোট ছেলেকে খামচি দিয়েছে ও আবার পালিয়ে গেছে।

আপনারা ভেবেছেন হয়তোবা সে বাসা থেকে চলে গেছে কিন্তু পরের দিন আবারো তার ডাক শুনতে পেলেন এরপর আপনি এবং আপনার বড় ছেলে অনেক কষ্ট করে তাকে উদ্ধার করলেন আসলে বিড়াল শান্ত প্রিয় প্রাণী হলেও এটা কিন্তু দৌড়ানো শুরু করলে আপনাকে বিরক্তির মধ্যে ফেলে দেবে এটাই স্বাভাবিক যাইহোক আপনারা ধরতে পেরেছেন দেখে ভালো লাগলো অসংখ্য ধন্যবাদ ভাল থাকবেন

যাইহোক অবশেষে তাহলে বিড়ালটা কে ধরা গেল, আপনার পোস্ট পড়তে গিয়ে আমার একটা গল্প মনে পড়ে গেল বিড়াল কে নিয়ে, আমার শ্বশুর বাড়িতে একটা বিড়াল আছে,, খুবই দুষ্ট ওকে ধরা একদম কষ্টসাধ্য ব্যাপার ছিল প্রথমদিকে।
কিন্তু এখন একবার ডাক দিলেই কাছে এসে বসে পড়ে,, আর শহর এলাকায় বাসা বাড়ির ভিতরে এরকম বিড়াল পালা আমার কাছে মনে হয় একটু কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তবে কিছুদিন যাওয়ার পরে দেখবেন একদম ঠিক হয়ে গিয়েছে।।