@pinki.chak আমি যখন শিলিগুড়িতে থাকতাম তখন কিছুদিন স্কুলে শিক্ষকতা করবার পাশাপশি, দুটি মাড়োয়ারি বাচ্চাকে বাড়িতে গিয়ে পড়াবার অভিজ্ঞতা আছে।
কাজেই, বাইরে থেকে শিক্ষকতা যতখানি সহজ মনে হয়, আদপেই সেটি কিন্তু ততখানি নয়।
এক্ দিকে যেমন সম্মান আছে, অপরদিকে থাকে শিশুদের ভবিষ্যত্ সৃষ্টির চাপ। সেটার বাহ্যিক প্রকাশ না করলেও নিজের মনের অন্তরালে চলতেই থাকে।
আমার ও তোমার মতন একটি চ্যালেঞ্জিং ঘটনা আছে শিলিগুড়িতে থাকার সময়কার।
আমার যে ফ্ল্যাট আছে ওখানে, তার ঠিক নিচেই থাকেন আমার এক্ স্কুল সহপাঠীর দুর সম্পর্কের দিদিমা।
তখন তার বড়ো ছেলে পড়তো ক্লাস ফাইভে এবং ইংরিজি মিডিয়ামে।
সেই বছর ছেলেটি ফেল করায়, তার মা এসে আমাকে ধরে ছেলেটিকে পোড়ানোর জন্য, ওরা দুই ভাই, বড়জনের ডাকনাম টনি, আর ছোটো ছেলেটির ডাক নাম রনি।
ছোটটি সেই সময় দার্জিলিং কনভেন্ট এ থেকে পড়াশুনা করতো।
আমি এক্ দিকে নাও বলতে পারছি না, আবার হ্যাঁ করলে কি পরিমান দায়িত্ব আসবে সেটাও বেশ ভালই বুঝতে পারছিলাম।
শুরু হলো পড়ানো, আমার একটাই শর্ত ছিল, আর সেটা হলো, যত তাড়াতাড়ি পড়া করে দিতে পারবে, ততো তাড়াতাড়ি ছুটি, এবং আমার ফ্ল্যাটে পড়তে আসতে হবে, আমি যাবো না।
এর পিছনের অন্যতম কারণ নিজের বাড়ির সুবিধার পরিধি থেকে বের করে আনা।
প্রথম প্রথম দুপুর গড়িয়ে গেলেও ছেলে ঘরে ফরছে না দেখে ওর মা আমার ফ্ল্যাটে আসতো, ছেলে মা কে বলতো আমাকে বলতে যেনো ছুটি দিয়ে দি।
ওর মায়ের একটাই উত্তর আমি কিছু জানিনা, দিদিকে জিজ্ঞাসা করো!
এই একটা বিষয় আমার জেদ বাড়িয়ে দিয়েছিল, কারণ আমি ছেলেটির মায়ের সহযোগিতা পেয়েছিলাম, প্রায় অনেক মাস্ দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা আমি করে দিতাম, কিন্তু পড়া শেষ না হলে কোনো ছুটি নেই।
না বকতাম, না কিছু বলতাম বসে থাকলে, এইভাবে সময়ের সাথে যখন পরীক্ষায় ভালো ফল করে পরের ক্লাসে উঠলো, সবার প্রথমে এসে আমাকে প্রণাম করেছিল।
তারপর আর তাকে কোনোদিন পড়ার জন্য জোর করতে হয়নি, সো বুঝেছিল তার এই জয়ের ভাগ আর কেউ নেবে না।
মনে পড়ে গেলো, তোমার লেখা পড়ে সেই অভিজ্ঞতার কথা।
আমার লেখা আপনাকে আপনার পুরনো স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়েছে জেনে বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ দিদি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit