হ্যালো, স্টিমিট পরিবারের সদস্যগণ সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের ভালোবাসা এবং দোয়ায়। আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার একটি প্রিয় জায়গার নাম এবং এ জায়গার স্মৃতিচারণ আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আজকে লেখাটা হবে অগোছালো কারণ মনের অনেক গভীর ভাব আজকে প্রকাশ করার চেষ্টা করব।
জায়গাটির নাম হল ফার্মগেট। ফার্মগেট এটি একটি আবেগ এবং একটি আশ্চর্য জায়গা। শুরু থেকে শুরু করা যাক। এই জায়গার প্রতি ভালোবাসা শুরু হওয়ার পিছনে এর কিছু কারণ রয়েছে। কারণগুলির মধ্যে রয়েছে পরিবেশ এবং কিছু বন্ধু।
স্কুল জীবন থেকে ঢাকা থাকার সুবাদে অনেক জায়গার নাম জানি বা যাওয়া হয়েছে। ফার্মগেটের সাথে পরিচিতি হয় যখন আমি সদ্য ইন্টার পরীক্ষা শেষ করি। পরীক্ষা শেষ করার পর সবাই চিন্তা করি কোথায় ভর্তি কোচিং করা যায়। একেক বন্ধু একেক জায়গায় একেক কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়। আমি অনেক চিন্তা ভাবনা করে ফার্মগেট গ্রীন রোড সংলগ্ন উদ্ভাস ভার্সিটি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হই। এডমিশনের সময়টা ছিল একটি যুদ্ধের সময় তখন কেউ জিতে কেউ হারে টানটান উত্তেজনা। কেউ তার সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিট তার নিজের দখলে নিতে। এই সময়টা আনন্দের, বেদনার এবং খুশির। এই সময় আমাদের অনেকের মাঝে উত্তেজনা কাজ করে।
সেই সময় থেকে ফার্মগেটের প্রতি আলাদা একটি টান সৃষ্টি হয়। প্রতিদিন কোচিং সেন্টারে ক্লাস করা এবং ফার্মগেটের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে বেড়ানোর সময়টা ছিল খুবই দারুণ। সেই সময়টা ছিল আমার জীবনের জন্য একটি দারুণ সময়। সেই সময় থেকে শিখতে শুরু করেছি জীবনের বাস্তবতা সম্পর্কে এবং নানা উপলব্ধির মাধ্যমে নিজেকে পরিপূর্ণ করার চেষ্টা করেছি।
ছিল ফার্মগেটে যাওয়ার সময় ভিআইপি সিগন্যালের বিসাদ সময়। আমার বাসা ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের পাশে দক্ষিণ কাফরুলে অবস্থিত। এখান থেকে ফার্মগেট যেতে বাসে করে স্টুডেন্ট ভাড়া ১০ টাকা লাগে। সময় হিসাব করলে তা ৩০ মিনিট থেকে ৪০ মিনিটের মধ্যে ফার্মগেট আসা যায়। ক্লাস শেষ করে বন্ধুদের সাথে চা হাতে আনন্দে সিনেমা হলের সামনে আড্ডায় মেতে ওঠা সময়টা ছিল খুবই দারুণ। ফার্মগেটকে মিনি ঢাকা বললে ভুল হবে না। এখানে রয়েছে সোনারগাঁও ফ্যান প্যাসিফিক হোটেল থেকে শুরু করে হোস্টেলের ছোট কামরা। দামি দামি খাবার থেকে শুরু করে হোস্টেলের ডাল। এখানে রয়েছে ১২০ টাকা থেকে শুরু করে দামি ব্র্যান্ডের পিজ্জার দোকান। স্ট্রিট ফুডের স্বর্গরাজ্য বললে ভুল হবে না ফার্মগেটকে। আমার বিশেষ করে ইন্দিরা গান্ধী রোডের এবং মুড়ি মাখাটা খুবই প্রিয়। জায়গাটা তেজগাঁও কলেজের বাম পাশে অবস্থিত দোকানটা।
রয়েছে মেট্রো রেল স্টেশন থেকে শুরু করে এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে নামার সড়ক। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে নামীদামী স্কুল কলেজ। ক্রিস্টান চার্চ থেকে শুরু করে মসজিদ মাদ্রাসা। এখানে রয়েছে দেশসেরা হলি ক্রস স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ফার্মগেটে রয়েছে অত্যাধুনিক রাস্তা পারাপার জন্য ওভারব্রিজ।
ফার্মগেটের পাশে রয়েছে জাতীয় সংসদ ভবন যা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে অবস্থিত। এখানে পাশে রয়েছে ইসলামী চক্ষু হাসপাতাল যা সকল মানুষের বিশ্বাসের প্রতীক হয়ে রয়েছে সেবা দেওয়ার মাধ্যমে। ফার্মগেট জায়গাটি কৌশলগত এবং জনসাধারণের কাছে মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সমর্থন আদায়ের জন্য এই জায়গার ভূমিকা রয়েছে। কৌশলগত দিক থেকে এই জায়গার অনেক কদর ছিল যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে। কারণ এর আশেপাশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট অবস্থিত। রয়েছে দুটি সিনেমা হল, তাদের নাম যথাক্রমে আনন্দ সিনেমা হল এবং ছন্দ সিনেমা হল। আনন্দ সিনেমা হল অনেক পুরনো এবং যুদ্ধের সময় ও এটি সগৌরবে দাঁড়িয়ে ছিলো ফার্মগেট এর কেন্দ্রবিন্দুতে । এটি এ অঞ্চলের বিনোদন ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের ভূমিকার যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছিল। যদিও এখন এটি অতটা উন্নত নয়, তবুও এটা এ এলাকার মানুষের বিনোদনে অংশীদার হয়ে রয়েছে।
---------------ধন্যবাদ সবাইকে!
যতদিন ABB School এ আছেন পোস্ট করার সময় @abb-school কে 5% ও shy-fox কে 10% বেনিফিসিয়ারী দেওয়া অবশ্যক।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit