বাস্তবধর্মী গল্প: "রিক্তা ও মুক্তার পরিবার"

in hive-129948 •  7 days ago  (edited)

নমস্কার

কেমন আছেন বন্ধুরা? আশা করি সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন ঈশ্বরের কৃপায়।আমিও মোটামুটি ভালোই আছি।যাইহোক আজ চলে আসলাম আমি @green015 যথা নিয়মে আপনাদের মাঝে নতুন একটি বাস্তবধর্মী গল্প শেয়ার করতে।আমি চেষ্টা করি দুই ধরনের গল্প লেখার,তার মধ্যে আমার শৈশব জীবনের গল্প ও আমার চোখের সামনে দেখা কোনো বাস্তবধর্মী জীবনের গল্প তুলে ধরার চেষ্টা করি অন্ধকূপ থেকে।তো চলুন গল্পটির শেষ অংশ শুরু করা যাক---

বাস্তবধর্মী গল্প: "রিক্তা ও মুক্তার পরিবার"

IMG_20241208_235649.jpg
সোর্স

আসলে মুক্তা যখন তার দিদির বাড়ি পড়াশুনা করছিলো তখন তার জীবনে অনেক প্রেমের প্রস্তাব চলে আসে।মুক্তার জামাইবাবু মুক্তাকে একটি ফোন দিয়েছিলো তার মায়ের সঙ্গে কথা বলার জন্য বাড়িতে।মুক্তাও সেটাকে দিব্যি ব্যবহার করে চলে নানা কাজে।এভাবে মুক্তার সম্পর্ক গভীর হতে থাকে, মুক্তা তার মায়ের বাড়িতে বেড়াতে আসে কিছুদিনের জন্য মায়ের কাছে স্কুল ছুটির সময়।তখন তার ফোনে ঘন ঘন কথা বলতে শোনা যায় কিন্তু তার মা প্রথমত অতটা গুরুত্ব দেননি।এভাবে কিছুদিন পর মুক্তা আবারো তার দিদির বাড়ি চলে যায় স্কুল খুলে গেলে।

অনেকটা দিন পর এইবার মুক্তার মা বেড়াতে যাচ্ছেন রিক্তাদের বাড়িতে।সেখানে সে বেশ কিছু ঘটনার সম্মুখীন হন মুক্তাকে নিয়ে।তাই মুক্তার মা ঠিক করেন মুক্তাকে আর পড়াশুনা করাবেন না,নিজের কাছে রাখবেন।সেইমতো মুক্তার মা মুক্তাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি চলে আসেন।কিন্তু কোনো সম্পর্ক একবার গড়ে উঠলে সেটা ভেঙে ফেলা খুবই কঠিন।বাড়ি চলে আসলেও মুক্তার ফোনে কথা বলা কমতি হয়না,সেটা লক্ষ্য করেই মুক্তার মা মুক্তার কাছ থেকে ফোন কেড়ে নেয়।তারপর ফোনে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়,মুক্তা এইবার তার মায়ের কাজে সাহায্য করে।

বছরের কোনো কোনো সময় বিভিন্ন সংস্থার উদ্যোগে কম খরচে সেলাইয়ের কাজ শেখাতে আমাদের স্কুলে আসতো।তো সেই বছর যখন খুবই কম খরচে সেলাইয়ের কাজ শেখাতে আসলো, তখন মুক্তার মা মুক্তাকে ভর্তি করে দিলো সেই কাজ শেখার জন্য।আগেই কোনো পোষ্টে আপনাদের বলেছিলাম আমাদের বাড়ির পাশেই স্কুল ছিল।যার প্রতিষ্ঠাতা আমার মেজো জেঠু।প্রাইমারী ও হাই স্কুল একসঙ্গে আর তার সঙ্গে রয়েছে বিরাট বড় খেলার মাঠ।যেখানে প্রতিদিন বিকেল বেলা এক দুই গ্রাম দূর থেকেও ছেলেরা আসে খেলাধুলা করতে।যাইহোক মূলত মুক্তার মা মুক্তাকে চাপের মধ্যে রাখতে চাইছিলো।

আমাদের গ্রামের পাশের গ্রামেই মুক্তাদের আত্মীয় বাড়ি রয়েছে।সেই আত্মীয় বাড়ির একটি ছেলে রোজ আসে আমাদের মাঠে ফুটবল খেলতে।ভালো ফুটবল খেলে বলে তার নাম রয়েছে, এই ছেলে তো মুক্তার সঙ্গে নতুনভাবে সম্পর্ক গড়ে তোলে।এই ছেলে আগেও অনেক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল, যেমন আমাদের ক্লাসের একটি মেয়ের সঙ্গেও তার সম্পর্ক ছিল।তবে তার অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে যায়।এটাও কিছুদিনের মধ্যে মুক্তার মায়ের কানে যায়।তাই সে তার মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

মুক্তার মায়ের রুচি সম্পর্কে আমার ও আমাদের গ্রামের মানুষের ধারণা একটু ভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে একই কাজ দেখে।ঠিক রিক্তার ক্ষেত্রে যেমন হয়েছিল মুক্তার ক্ষেত্রেও সেই একই কাজ করেন তার মা অর্থাৎ বয়স্ক একটি লোকের সঙ্গে মুক্তার বিয়ে দিয়ে দেন।মুক্তার বয়সের তিন গুণ সেই লোকের বয়স,সারা জায়গায় ঘুরে ফিরে গানের দলে গান করে থাকে মুক্তার স্বামী।গ্রামের অনেকেই বিরক্ত হলেও কেউ কিছু বলতে পারে না মুক্তার মা কে কারন মেয়ে তো তাদের নয়।

এমতাবস্থায় অল্প কিছুদিন সংসার করার পর মুক্তা তার মায়ের কাছে চলে আসে।সে তার স্বামীর নানা ত্রুটির কথা বলে এবং দ্বিতীয়বার আর সংসারে ফিরে যেতে চাইনা।অন্যদিকে মজার বিষয় হচ্ছে,মুক্তার বাবা একেবারেই অশিক্ষিত।আগেই বলেছি সে তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে থাকেন,অশিক্ষিত হলেও গ্রামে তার পরিচিত ছিল।তাই গ্রামের লোক তার নাম বোতল বলে ডাকতো, সবাই মিলে জোর করে তাকে মেম্বর পদে দ্বার করিয়ে দিলো।সে খুব সহজেই মেম্বর পদ পেয়েও গেল কিন্তু তার পদের অনেক কাজ-ই করে দেয় অন্য লোক।মুক্তার বাবা তো অন্য গ্রামে থাকে,যেহেতু সে সকলের সাহায্যে এই পদ পেয়েছে তাই সে অন্যের বাড়ি নানা কাজ করে তা শোধ করতে থাকে।এককথায় একটু সরল টাইপের মানুষ সে,মুক্তার বিয়েতেও সে কিছু টাকা কিংবা জিনিস দিয়েও সাহায্য করেছিল।এখন মুক্তার মা লোকজন নিয়ে তার ছোট জামাইয়ের বাড়িতে যান।মুক্তার সংসারে নানা ধরনের অশান্তি হতে থাকে তার স্বামীকে ঘিরে তাই সে ডিভোর্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।মুক্তার মা অনেক চেষ্টা করেও নিজের ভুল কিছুটা বুঝতে পারে আর ডিভোর্সকে সমর্থন জানায়।তারপর সে মুক্তাকে তার কাছেই রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।এভাবে মুক্তার সুন্দর জীবনটি নষ্ট হয়ে যায়---।।


আশা করি আমার আজকের গল্পখানি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লাগবে।পরের দিন আবার নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে, ততক্ষণ সকলেই ভালো ও সুস্থ থাকবেন।

পোষ্ট বিবরণ:

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PkpkXyXwzmWEkSA7U2PjRr7VoGxjyzQFnZHCkVBWn57JTVUvY7omc512mhJJX...vDZX3Fcaov38Zxjxq21rAE9wN1b8HnrBKZamZjaRXZMJVUcaVKGLWFRFVNG6MXCo9ptvvGTefY61oasZ4TrQFVwMiYWBFUH8ivxFm1LbtvBRqtkowye4ZCeEyk.png

শ্রেণীগল্প
ডিভাইসpoco m2
অভিবাদন্তে@green015
লোকেশনবর্ধমান

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

আমার পরিচয়
আমি রিপা রায়।আমার স্টিমিট ইউজার আইডি @green015.আমি একজন ভারতীয়।আমি বর্ধমান ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি,ইতিহাস বিষয় নিয়ে।বর্তমানে আমি ওখানেই অধ্যয়নরত আছি।এখানে বাংলা ভাষায় মন খুলে লেখালেখি করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।এছাড়া আমি একজন বাঙালি হিসেবে গর্ববোধ করি।

IMG_20240429_201646.jpg
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

টাস্ক প্রুফ:

GridArt_20241217_013115367.jpg

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.