কবিতা : ‘শেষ বিকেল’ - ফ্যান্টম | আবৃত্তিতে : নির্মাল্য

in hive-129948 •  2 years ago 

tree-g57d137084.jpeg

Copyright Free Image : Pixabay

নমস্কার,

বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি ঈশ্বরের কৃপায় আপনারা সকলেই সুস্থ এবং ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদ ও ভালোবাসায় আমি ভালো আছি।

আজ আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন কবিতা আবৃত্তি নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম। আজ আমাদের সকলের প্রিয় ফ্যান্টম দার একটি কবিতা আবৃত্তি রূপে আপনাদের সামনে পরিবেশন করছি। আবৃত্তি সিরিজে এটি আমার কুড়ি তম উপস্থাপনা। আমার আজকের পরিবেশনা, শেষ বিকেল। শেষ বিকেল কবির জীবন সম্পর্কিত একটি রূপক ধর্মী কবিতা। যা নিয়ে আমার বিস্তারিত মতামত অভিমত পর্যায়ে গিয়ে আলোচনা করেছি। আর দেরি করা ঠিক হবেনা, তাহলে চলুন শুরু করে দিই।


"শেষ বিকেল"

ফ্যান্টম

শেষ বিকেলের মরা রোদ পাখির ডানায়
তাদের এখন ঘরে ফেরার পালা ।
স্তব্ধ চারিদিক, শুধু শন শন বাতাসের শব্দ,
নাড়িয়ে দিয়ে যায় ওই উঁচু উঁচু গাছের শাখা ।

সব কাজ সারা, বসে আছি ক্লান্তি অপার,
উদাস হয়ে দেখছি সব।
একটা মাছরাঙা, বসে আছে বহুক্ষণ
প্রতীক্ষা দীর্ঘ তার একটা মাছের জন্য ।

এক বিষণ্ণ , একাকী বুড়ো কাক
সারাদিন কা কা রবের পরে,
এখন স্তব্ধ তার কণ্ঠ ।

একদল কাঠ পিঁপড়ে টহল দিতে বেরিয়েছে সবে,
পুকুরপাড়ের জীর্ন ঘাটের অসংখ্য ফোকড় থেকে ।
ম্লান সূর্যের আভা উঁকি মারছে পাতার ফাঁক দিয়ে,
তারই আলোয় দেখি অজস্র কাঁচপোকা উড়ছে হাওয়ায় ।
বাঁশ ঝাড়ের ওই ওদিকটায় শোনা যাচ্ছে এখন
ঝিঁ ঝিঁ পোকার একটানা কোরাস ।

পুকুরের মধ্যিখানে কী যেন একটা মাছ
জলের উপরে একটা আলোড়ন তুলে মারলো ডুব,
কোন পাতালে, শীতল জলের গহনে ।
মাছের পুচ্ছের তাড়নায় ঢেউ উঠেছে সারা দীঘি জুড়ে ।
তরঙ্গগুলো দীর্ঘায়িত হয়ে ভাঙছে এসে
জীর্ন ঘাটের শেষ সোপানটায় ।

অন্ধকার কখন ঘন হয়ে এসেছে
টের পাইনি, বুড়ো হচ্ছি তো ।
জীবন সায়াহ্নে এসে ইন্দ্রিয়গুলো এখন করছে বিদ্রোহ ,
অনেক তো হলো আর কেন ?
এবার ছুটি নেওয়ার সময় আগত ।


আমার মতামত

শেষ বিকেল কবিতাটি আদ্যোপান্তে বিকেলের বর্ণনা মনে হলেও আসলে কবিতাটি কিন্তু পুরোটাই রুপক ধর্মী। কবিতার লেখায় জীবন সায়াহ্নে পৌঁছানো এক মানুষের তার ফেলে আসা ব্যস্ত জীবনে ফিরে দেখার কথা লুকিয়ে রয়েছে। বিকেলের পরে যেমন সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে তেমনি জীবন শেষে মৃত্যু আসে। কবিতায় রূপকের মাধ্যমে সেটাই বোঝানো হয়েছে।

কবি ভাষায় মাধ্যমে এক মানুষের জীবন ফুটিয়ে তুলেছেন। সারা জীবনের নানান ব্যস্ততা শেষে একজন মানুষ জীবনের শেষ সায়াহ্নে এসে নিজের মৃত্যুর অপেক্ষা করছে আর পিছনে কাটিয়ে আসা ব্যস্ততম সময় গুলোকে বারবার মনে করছে। শেষ বিকেলের নিস্তব্ধতার অনুরূপ সবাইকে জীবনের শেষে এসে নীরব দর্শকের মতই সবকিছু দেখতে হয় বলার কিছুই থাকে না। কারণ বিকেলটা পেরিয়ে গেলেই মৃত্যু রূপে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসবে।

কবি ভাষার মাধ্যমে জীবনের ব্যস্ততা গুলো প্রকৃতির নানা কর্ম কাণ্ডের তুলনা করেছেন। প্রকৃতি যেন আমাদেরই জীবনের প্রতিচ্ছবি মাত্র। নানা ব্যস্ততা শেষে যেমন বিকেলের সময়টা এলে ধীরে ধীরে সব কিছু শান্ত হতে থাকে তেমনি মানুষ সারাটা জীবন ব্যস্ততার সাথে কাটিয়ে হঠাৎ করে মৃত্যু খুব কাছে চলে আসলে নিশ্চুপ হতে থাকে। সন্ধ্যার সময় প্রকৃতির কলকাকলি থেমে গিয়ে যেমন সব কিছু নিস্তব্ধ হয়ে যায় তেমনি জীবন সায়াহ্নে এসে মানুষের ইন্দ্রিয় গুলো হারিয়ে যেতে থাকে, মানুষ শুধুই নীরব দর্শক হয়ে পড়ে। তখন শুধু মৃত্যুর অপেক্ষা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।



আবৃত্তি



Made with VEED

ধন্যবাদ




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness


Support @heroism by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

|| Join HEROISM ||

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

এর আগেও আপনার অনেক কবিতা আবৃতি শুনেছি দাদার লেখা। আজকের কবিতাটি আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। বিশেষ করে শেষ বিকেল কবিতাটার নামটাই ভীষণ ভালো লাগলো। তাছাড়া আপনার কন্ঠে শুনতেও ভীষণ ভালো লেগেছে ভাইয়া। এই কবিতার মধ্যে অনেক কিছুই ফুটিয়ে তুলেছে। আসলে যে ভাষাগুলো এমনিতে বোঝা সম্ভব না। কিন্তু কবিতার ভাষায় ভীষণই সুন্দর। আশা করি পরবর্তীতে দাদার লেখা আরো কবিতা আপনার কাছ থেকে শুনতে পারবো।

কবিতা আবৃত্তি করার জন্য শুদ্ধ উচ্চারণ সঠিক ভাবভঙ্গি এমনকি কন্ঠের ব্যবহারও খুবই জরুরী একটি বিষয়। আপনার মাঝে আমি সবগুলোই উপস্থিত পেয়েছি। তাইতো এই কবিতা আবৃত্তি এতটা মধুর লেগেছে। ফ্যান্টম দাদার যেমন লিখা কবিতা তেমনি আপনার আবৃত্তি দুটোই যেন হৃদয় কাড়া।

দাদা নমস্কার ৷
আসলে আপনার করা প্রতিটি ফ্যান্টম দাদার কবিতার আবৃত্তি আমি শুনেছি ৷ আপনি এর আগেও অনেক কবিতা আবৃত্তি করেছেন ৷
খুব সুন্দর আবৃত্তি টা সাথে আপনার করা মতামত গুলো ৷ সব মিলে উপস্থাপনা ভালো ছিল ৷ ধন্যবাদ দাদা

দাদার লেখা কবিতাগুলো আপনি খুব সুন্দরভাবে আবৃত্তি করেন। এই শেষ বিকেল কবিতাটিও খুব সুন্দর আবৃত্তি করেছেন। মনোমুগ্ধ হয়ে শুনছিলাম আবৃত্তি। যেন l মনে হচ্ছিল সারাদিন অনেক পরিশ্রম করে শেষ বিকেলে গিয়ে টের পেয়েছি যে সারাটা দিন পেরিয়ে গেল। ধন্যবাদ দাদা সুন্দরভাবে কবিতা আবৃত্তি করে শোনানোর জন্য।

স্পষ্ট উচ্চারণ এবং দারুন আবৃত্তি।শুনতে বেশ শ্রুতিমধুর হয়েছে দাদা আবৃত্তি টি।আর দাদার কবিতা নিয়ে তো কিছু বলার নেই বরাবর সেরা।🤘

আপনি একদম সুন্দরভাবে কবিতাটা আবৃতি করে উপস্থাপন করেছেন আমাদের মধ্যে। এরকম সুন্দর আবৃত্তি শুনতে এমনিতে ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনি বেশ সুন্দর পাঠ করেছেন কবিতাটি।আসলে যে সব কবিতা একটু মৃদু ছন্দের হয়, একটু গভীর ভাব থাকে কবিতাতে, সেসব কবিতাগুলো পাঠ করলেও নিজের কণ্ঠে একটা আলাদা গুরুগম্ভীর বিষয়ে আসে। এটা আমি নিজে যখন পাঠ করে থাকি তখন নিজেও বুঝতে পারি। খুব ভালো লাগলো আপনার আবৃত্তি সব সময়ের মতো।