নমস্কার,
বহু ঝক্কি নিয়ে তবেই এইবার আমি কলকাতা পৌঁছেছি। আর কলকাতা পৌঁছেই আমার গলা গেলো ভয়ানক ভাবে বসে। খুব ভোরে অনেক জামা কাপড় এঁটে থাকা সত্ত্বেও কখন যে ঠান্ডা লেগে গেছে তা বুঝে উঠতে পারিনি। গলা বসে থাকার কারণে বুধবারের ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও কাজ সেরে ঘরে ঢুকে পড়তে বাধ্য হলাম। সেই রাতে পরিস্থিতি এমন হলো যে, গলা দিয়ে আওয়াজ পর্যন্ত বেরোচ্ছিল না। অগত্যা এন্টিবায়োটিক খাওয়ার সাথে বৃহস্পতিবার সকালে আমার ফেরা বাতিল হলো।
বৃহস্পতিবার কোনো মতে ওষুধ খেয়ে কাটিয়ে নিয়ে শুক্রবারে যখন একটু ভালো অনুভব হলো তখন চিন্তা করলাম আজকের দিনটা বসে না থেকে ফাঁকে যদি কিছু কাজ করে নেওয়া যায়। সেই সুবাদে মনে পড়লো মাস আটেক আগে জুন মাসে আমি আমার একটা চশমা ঠিক করতে দিয়ে গিয়েছিলাম। চশমার কথা মনে পড়তেই যে দোকানে সেটা রেখে গিয়েছিলাম সেই জেঠুকে ফোন করলাম। আসলে তাকে আগে ফোন করার কারণ শেষ নভেম্বরে কলকাতায় এসে তাকে না জিজ্ঞেস করে তার দোকানে গিয়েছিলাম তখন আমার হাতে শুধু এসেছিল ব্যর্থতা। তাই এবার গিয়ে ব্যর্থ হওয়ার আগে ফোন করে নেওয়াই ঠিক মনে করলাম। তাকে ফোন করলাম পাশাপশি একটা চশমার ছবিও পাঠিয়ে দিলাম।
চশমার কথা জিজ্ঞেস করতেই ফোনের ওপার থেকে উত্তর এলো, তোমার চশমা ঠিক হয়ে গিয়েছে, দুপুরে চলে এসো। চশমা পাওয়ার আনন্দে আত্মহারা হয়ে দুপুর হওয়ার একটু আগেই বেরিয়ে পড়লাম। আদপে যেখানে যেতে হবে সেই জায়গাটা বেশ খানিকটা দূর।
ঘন্টা খানেক বাসে চেপে ভর দুপুর বেলায় পৌছে গেলাম। সোজা গেলাম চশমার দোকানে। সেখানে দেখি কেউ নেই। ইতিউতি তাকিয়ে জেঠুর খোঁজ খবর করতে পাশের দোকানির থেকে জানতে পারলাম উনি নাকি দুপুরের খাবার খেতে গেছেন। হাতে কোনো কাজ ছিলো না তাই দোকান থেকে বেরিয়ে বাইরে দাড়িয়ে পড়লাম।
রাস্তার পাশে বেশ কিছুক্ষন দাড়িয়ে থাকার পর ফের দোকানে ফিরে গেলাম। ফিরে যেতেই দেখলাম জেঠু ফিরে এসেছেন। আমার কোনো কথা বলার আগেই উনি আমাকে দেখে ভ্যাবা চাকা মুখে বললেন, তোমার চশমাটা ঠিক হয়ে গেছে তবে সেটা কোথায় রেখেছি খুঁজে পাচ্ছি না।
জেঠুর কথা শুনে খুব রাগ হচ্ছিল আবার পরক্ষণে মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো। আসলে চশমাটা আমি মাত্র মাস দুয়েক ব্যবহার করেছি। একদম নতুন চশমা সেটার পাত্তা এখনো পাচ্ছিনা। মনে মনে ভাবলাম দুকথা শুনিয়ে দিই। কথা বলতে যাবো উনি নিজে থেকেই ফের বললেন চশমা খুঁজে পেলে কুরিয়ার করে পাঠিয়ে দেবেন। আমি আর কি বলবো বুঝে উঠতে পারলাম না। মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। মনকে শান্তনা দিতে দিতে ঠিক করলাম যখন এসেছি তখন কোনো কাজ না করে ফিরবো না। তাই নিজের চোখে থাকা চশমাটাই খুলে দিলাম, অল্প বিস্তর পরিস্কার করার জন্য। অল্প হলেও মন তো খুশি হোক।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |