সরকারি কাজে দুর্ভোগ

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)

GridArt_20221128_204358741_copy_1228x818.jpg

নমস্কার বন্ধুরা,

কলকাতায় শেষ দিনটা আমার খুব ব্যস্ততার মধ্য দিয়েই কাটলো। ঝটিকা সফরে আসলে যা হয় আরকি। হাতে কাজকর্ম অনেক অথচ সময় খুবই কম। কাজকর্মগুলো সামলে এদিক ওদিক যাওয়ার সুযোগ তো বিশেষ হয়ই না। সারাক্ষণ শুধু অফিসের দিকে চক্কর কাটতে থাকা। আর সেটা যদি হয় সরকারি অফিস তাহলে তো কথাই নেই। বাবুদের কখন সময় হয় সেটাই বোঝা দায়। সেই চিন্তা থেকে আমি কিছু অফিসের কাজের জন্য হাতে একটা পুরো দিন রেখেছিলাম। যদি লেগে যায়।

যা ভাবনা তাই হলো। শেষ পর্যন্ত আমার ধারণা পুরোপুরি মিলে গেলো। কলকাতা থেকে ফেরার আগে সারাটা দিন করুণাময়ীতে অফিসের সামনে বসেই কাটিয়ে দিলাম। আদপে আমি গিয়েছিলাম মধ্যশিক্ষা পর্ষদে এক বিশেষ কাজের তাগিদে। বাবুদের ব্যাপার বুঝে হাতে সময় নিয়ে সকাল সকাল দশ টা বাজার আগেই পৌঁছে গিয়েছিলাম। জানতাম সময় অনির্দিষ্টকাল পর্যন্তও লাগতে পারে তাই আরকি। পৌঁছাবার পরেই শুরু হলো অপেক্ষার পালা। অফিস খোলা মাত্র যে ঘরে কাজ ছিলো তার ঠিক বাইরে বসলাম, অফিসার আসবার অপেক্ষা নিয়ে।

PXL_20221115_125908470_copy_1132x849.jpeg

ঘন্টা খানেক বসার পর অফিসার আসলেন তবে তিনি আমাকে বাইরে বসতে বলে অফিসটা গুছিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়ে ভেতরে চলে গেলেন। অফিস গুছালেন কিনা জানিনা তবে তিনি তার ঘরে ঢোকা মাত্র অন্য কর্মচারীদের তার ঘরে আনা গোনা শুরু হলো। কিছু সময় পরপর উনি বার কয়েক বেরোলেন বটে, তবে তোমাকে ডেকে নিচ্ছি বলেই তিনি আবার বেপাত্তা হলেন। বসে বসে মাছি তাড়ানো ছাড়া উপায় নেই। তিনটা ঘন্টা এভাবেই কেটে গেলো। লাঞ্চ আওয়ার চলে এলো তবুও ডাক পেলাম না। মাঝে দু একবার ঘরে উকি মেরেছিলাম বটে তবে মোবাইলে কিসের এত ব্যস্ততা তা বুঝতে পারলাম না।

PXL_20221115_130012231_copy_1156x867.jpeg

PXL_20221115_130015521_copy_1209x907.jpeg

লাঞ্চের সময় হতেই উনি অফিস ঘর থেকে বেরিয়ে পড়লেন। সাথে আমাকে লাঞ্চ করে আসার কথা বললেন। উনি লাঞ্চ করতে গেলেও আমি এক কাপ চা খেয়ে সন্তুষ্ট থাকলাম। কোথাও গেলেই বিপদ।

মিনিট তিরিশেক পরে লাঞ্চ থেকে ফিরে আসা মাত্র আমার ডাক পড়লো। আমিও তিড়িং করে উঠে পড়লাম। আহা। আর কিছুক্ষন। ব্যাস। আমার কাজ শেষ। কিন্তু ভুলে গেছিলাম যে আমি সরকারি অফিসে এসেছি। দু ঘণ্টা জুড়ে শুধু এই টেবিল থেকে ওই টেবিল ঘুরে কাজ হলো। যতক্ষণে কাজ মিটলো ততক্ষণে বিকেল হয়ে গেছে। আমি আর দেরী না করে বেরিয়ে পড়লাম।

কাজকর্ম সেরে ইচ্ছে হলো আমার খুব এক পছন্দের জায়গায় এগ চিকেন নুডুল সুপ খেতে। কলকাতা থেকে ফিরে যাব অথচ এগ চিকেন নুডুল সুপ খাবো না তা হয় না। সেজন্য আমি গন্তব্যের উল্টোদিকে আধ ঘন্টা সময় খরচা করেই এলাম।

PXL_20221115_194526358_copy_1209x907.jpeg

নুডলস মুখে পুরে বুঝলাম সময় মোটেও নষ্ট হয়নি। সারাদিনের না খেয়ে বসে থাকার পর নুডুলস মুখে যাওয়া মাত্রই এক চমকে সারাদিনের পরিশ্রম যেন হাওয়া হয়ে গেলো।




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness


Support @heroism by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

|| Join HEROISM ||

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনি তো দেখছি বেশ একটি ভোগান্তিতে পড়েছিলেন। সকাল দশটার সময় গিয়েছিলেন আর ফিরলেন বিকালে। যাইহোক একটা বিষয় জেনে খুশি হলাম যে ওনি আপনাকে বলেনি যে পরের দিন এসো। শেষে চিকেন নুডুল সুপে খাওয়ার জন্য আবার আধাঘন্টা লেট করলেন। তবে সুপটা খেতে ভালো ছিল এটা জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।

সরকারি কাজ বলে কথা দাদা!!😀😀।বাবুদের পেছনের লাইনে দাঁড়াতে হয় তা তো আপনার ভাগ্য ভালো যে লাইনে দাঁড়াতে হয়নি।শেষমেষ বাবু আপনাকে ডাকলেন আপনি কাজটা সেরে ফেললেন শুনে খুব ভালো লেগেছে।তবে যায় বলেন আপনার সময় একদম ব্যর্থ হয়নি। এই যে চিকেন নুডলস স্যুপ খেলেন তো সব মিটে গেলো।হা হা হা দারুণ ছিল ব্যাপারটা।

সরকারি মানেই হলো অলসতা যেটা আমি মনে করি ৷ আর যারা চাকরি করে তারা তো আরো বেশি ৷ আপনি এ টেবিল থেকে ও টেবিল ঘুরেছেন ৷ যা হোক শেষমেষ কাজ তো সমাধান হয়েছে ৷ এরপর কলকাতার চিকেন নুডুল সুপ খাওয়া ৷
সবমিলে কাজ তো সম্পুর্ণ হয়েছে ৷

সরকারি কাজগুলোতে মোটামুটি সব দেশেই একটু কষ্ট করতে হয়। আমাদের দেশে তো অবস্থা আরো খারাপ, থাক তা নাই বলি। তবে আপনার সারা দিনটি কেটে গেল একটি কাজ করতে যেয়ে। অথচ উনারা চাইলেই এক ঘণ্টার মধ্যে সব কাজ শেষ করতে পারতো। কি আর করবেন। শেষে নুডলস এ ক্লান্তি দূর হলো।

বাবুর মোবাইল এত কিসের জানেন কেন আমি তো জানি🤣।বাবু সাহেব তার গার্লফ্রেন্ডের সাথে চ্যাট করে 🤣🤣হা হা।যাই হোক আসলে সরকারি কাজগুলো এমনই হয়,অনেক আস্তে ধীরে। সরকারি কাজের জন্য পুরো দিনের সময় নিয়েই যেতে হয়।বেশি উঁকি জুকি দিয়েন না বাবুদের ডিস্টার্ব হবে হা হা।

আসলে সরকারি দপ্তর বলে কথা কাজ কাম করতে হলে অনেক ঝামেলায় ঘুরতে হয়।। আমি কিছু কাজের সাক্ষী আছি যে কাজগুলো করতে গিয়ে আমাকে অনেক হেনস্থা শিকার হয়েছে এবং কয়েক জায়গায় টাকা ঘুষ দিয়ে তারপরে কাজ বের করে নিয়ে আসতে হয়েছে।। আসলে টাকা দিলে সব কাজে তাড়াতাড়ি হয় আর না দিলে ঘুরতে ঘুরতে চটি ক্ষয়।।
আমি আবার কোথাও গেলে না খেয়ে থাকতে পারিনা বলতে পারেন আমি একরকম পেটুক প্রকৃতির মানুষ। যাইহোক আগে খাওয়া পেট ঠান্ডা তো দুনিয়া ঠান্ডা।।

সরকারি কাজের মত অবহেলা কাজ মনে হয় যেন আর কিছুই নেই। যেখানে একটি কাজ করতে দু এক ঘণ্টা লাগার কথা, সেখানে তারা সারাটা দিন কাটিয়ে দেয়। আসলে তারা সাধারণ জনগণকে কোন মূল্যায়নই করে না।যেমন আপনার সারাটা দিন লেগে গেল একটা কাজ করতে।ইগ নুডলস সুপ দেখে আমারও ভীষণ ভালো লাগে।

তোমার ভাগ্য বেশ ভালো যে তোমার কাজ তুমি একদিনেই সম্পন্ন করতে পেরেছো🌝।
আমি জানিনা শুধু আমাদের দেশেই সরকারী পরিষেবা এতো 'ভালো' নাকি অন্যান্য দেশ গুলোতেও একই অবস্থা।এতো কথা ওঠে সরকারি কর্মচারীদের 'সুন্দর' পরিষেবা নিয়ে তাও তাঁরা শোধরায় না।হয়তো সবাই সমান নয়,কিন্তু যারা ব্যতিক্রমী, তারা কি এমন ধাতুর তৈরি যে কিছুতেই শোধরান না 😪!

বাবুদের কাছে গেলেই ঝামেলা! সারাদিন হুদাই ঘুরাই! যাক, কাজটা ফাইনালি শেষ করতে পারলেন। আর সাথে এগ চিকেন নুডলস। সবমিলিয়ে কষ্টটা রিমোভ হয়ে গেল 😊

দাদা সরকারি কাজ বলে কথা এত তাড়াতাড়ি শেষ হলে তো বেসরকারি নাম হতো। আমি একবার সরকারি হাসপাতালে গিয়ে এমন পরিস্থিতিতে পড়ে ছিলাম। আমার কাছে কাজ রেখে বসে সময় নষ্ট করা একদমই ভালো লাগে না। আপনি তাও এতক্ষণ বসে একটু সুযোগ পেয়েছেন আর আমি তো ভেবেছিলাম আজ মনে হয় আর হবেনা। যাক অবশেষে লোকটার একটু সুবুদ্ধি হলো আর আপনাকে ভিতরে যেতে বললো। সবকাজ শেষ করে তো দেখছি দারুণ মজার একটি খাবার খেয়েছেন। ধন্যবাদ দাদা।

আসলে সরকারি কর্মচারী মানেই,"আমার তো আর চাকরি যাবে না। না হয় একটু আরাম করেই কাজ করি।" ঠিক এই রকম যে,*তুমি এই টেবিল,ওই টেবিল ,সেই টেবিল ঘুরে এসো আগে।তোমাকে আল্টিমেট আমার টেবিলেই আসতে হবে। কিন্তু আগে ঘুরে এসো। "এত খারাপ লাগে, প্রত্যেকটা জায়গায় এক অবস্থা। এরা যে কি মনে করে নিজেদের। মানুষের সময়ের কোন দাম নেই এদের কাছে। ভীষণ খারাপ লাগলো ইন্সিডেন্ট টা পড়ে। তবে আর কি?অবশেষে কাজ হয়েছে সেটাই যথেষ্ট।আপনার সময়ের তো কোন মূল্য নেই। তারা ভিআইপি সব। এগ চিকেন স্যুপ নুডুলস টা দেখে আমি প্রথমে থুকপা ভেবেছিলাম।অবশেষে ভালো খাবার পেলে আমাদের সারাদিনে ক্লান্তিটা দূর হয়ে যায় এটা বাস্তব।