কেমন আছেন সবাই? আশা করছি এপার আর ওপারের সবাই মিলেমিশে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের সবার দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। আর ভালো আছি বলেই আপনাদের সবার মাঝে আজও চলে এলাম। আমার সব সময় সবার মাঝে সবাইকে নিয়ে সময় কাটাতে ভালো লাগে। সবার মুখের হাসি দেখতে ভালো লাগে। কারো মুখে কষ্টের কোন ছায়া দেখলে নিজের মনেও কষ্ট লাগে। আমি সবসময় সবার মুখে হাসি দেখতে চাই। আর চাই সবার মুখে হাসি ফোটাতে। কোন কষ্টের ছোয়া যেন কাউকে স্পর্শ না করে সবসময় এই কামনাই করি।

আসলে আমিতো কোন বৃত্তশালী মানুষ নই। কোন বড় এমাউন্টের টাকা পয়সাও নেই । শুধু আছে মনের ইচ্ছাশক্তি। আর সেই ইচ্ছা শক্তি আর সাথে সাহস করে এবার গেল রোজার ঈদ থেকে শুরু করেছি আমার এই পথের যাত্রা শুরু।আসলে ইচ্ছা থাকলেই যে উপায় হয় তা আমি এবার বুঝতে পেরেছি। শুধু তার জন্য থাকতে হবেপাশে কোন সাহায্য করার মানুষ বা নিজের সাহস।আর এভাবেই আমি ধীরে ধীরে আমার এই স্বপ্নটি আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। কিছু কিছু স্বপ্নের মাঝে আনন্দ পাওয়া যায়।

এবার গেল রোজার ঈদে আমি কিছুটা অসহায় পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি। আরকি আমার স্বপ্নগুলো আস্তে আস্তে পূরন করার চেষ্টা করছি। এবার দু্এক মাস আগে থেকেই ইচ্ছা ছিল যে এবার ঈদে কিছু পরিবারে আমি ঈদের খাবার কিনে দিব।মহান আল্লাহ আমার সেই ইচ্ছা পূরণ করেছেন। যদিও সেইভাবে বড় করে করতে পারিনি । আবার একাও করিনি এই মহৎ কাজটি । আমি আমার ভাই বোনের সাথে শরীক হয়ে করেছি। তাতে কি? এটাতেও আমি মনে অনেক তৃপ্তি পেয়েছি। আজ সবাই মিলে মহৎকাজটি ভাগাভাগি করে নিলাম। আল্লাহ চাইলে ইনশাল্লাহ্ আমি কখনও একা আরও অনেক পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে পারবো।তবে এবার ঈদে আমার মনে ছিল অনেক শান্তি। কি যে এক অনাকাঙ্খিত তৃপ্তি আমি এবার ঈদে অনুভব করেছি।

সেই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই প্রোগ্রামিটিকে ঘিরে অনেক আনন্দই লেগেছে। প্রথমে প্ল্যানে এবং পরে প্রোগ্রামে। আর তারপর নিজের হাতে কেনাকাটা, প্যাকেট করা ও তাদের মাঝে বিলানো সে এক অন্যরকমের অনুভূতি যা মনে প্রশান্তি এনে দেয়।বললাম না যে সেইরকম ভাবে করতে পারিনি। তবে এই সামান্য একটুতে যে তাদের মুখে যেই হাসি দেখেছি সেই হাসিটির মূল্য কোটি টাকা দিয়ে কেনা যাবে না। তারা এতটুকুতেই এত সন্তুষ্ট। আর আমরা ঈদে এত বাজার করি এত আইটেম করি তারপরও যেন আমাদের অতি কম বলে মনে হয়।

আমি যখন একটি প্যাকেট নিয়ে একজনকে দিতে যাচ্ছিলাম। তখন একটি রিক্সা দিয়ে গিয়েছিলাম। আর যার উদ্দেশ্যে গিয়ে ছিলাম তাকে পাইনি। পরে সেই প্যাকেটি আবার ফেরত নিয়ে ঐ রিক্সা দিয়েই চলে আসছিলাম। উনি জানতো না যে আমার প্যাকেটে কি। তার সাথে কথা বলতে বলতে জানা গেল সেদিন তার ঘরে বাজার করার মত পয়সা ছিল না। বৃদ্ধ বাবা মাকে ঈদে খাওয়াবে তাই ঈদের পোলাও মাংস বাদ দিলাম, সেমাই চিনি কেনার মতও টাকা ছিল না। কান্না করছিল আর বলছিল রিক্সা ওয়ালা মানুষটি।তখন আমার হাতের প্যাকেটি উনাকে দিয়ে দিলাম। তখন উনি চোখে আর মুখে খুশি ভরা কান্না নিয়ে বলল আল্লাহপাক বলছে যে বান্দা তুই ধৈয্য ধর, তোর রিজিক তোর রিক্সায় বসে আছে। তখন ঐ রিক্সা ওয়ালার কথাটি শুনে আমার চোখ বেয়ে পানি চলে এলো। সেই কান্না ভরা হাসি মুখটি আমি আজও ভুলতে পারছি না। যেন আমাকে বার বার ডাকছে তাদের এই খুশির কান্না ভরা হাসিটি দেখার জন্য।

পরিশেষে আর কি লিখবো। আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন আমার যতটুকু সামর্থ্য আছে অতন্তঃ পক্ষে একজন অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারি। আপনাদের সকলের মুখের সবসময় হাসি আর সুস্থতা কামনা করে আজকের মত আমার ব্লগটি এখানে শেষ করছি। পরবর্তীতে আবারও কোন ভালো ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হবো। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।