আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম
অপ্রীতিকর ঘটনার মধ্য দিয়ে দুপুরের মধাহ্নভোজ
কেমন আছেন সবাই? আশা করি বেশ ভালো আছেন সবাই। প্রতিদিনের মত করে আজও আপনাদর মাঝে চলে আসলাম নতুন একটি ব্লগ নিয়ে। আজ আমি আপনাদের সামনে আবারও একটি লাইফ সাস্টাইল ব্লগ নিয়ে এসেছি। প্রতি সপ্তাহে ভিন্ন রকমের ব্লগের মধ্যে কিন্তু একটি লাইফ স্টাইল ব্লগ না থাকলে কি চলে? আর আমার কাছেও এ ধরনের ব্লগ শেয়ার করতে বেশ ভালো লাগে। কারন হাজারও ব্যস্ততার মাঝে প্রতিদিন জীবনে ঘটে যায় কত রকমের ঘটনা। আর সে সমস্ত ঘটনা গুলোর কিছু যদি লিখনির মাধ্যমে প্রকাশ করা যায় তাহলে কিন্তু খারাপ হয় না। তাই তো আজ দু একদিন আগে ঘটে যাওয়া তেমন একটি ঘটনা আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো।
আপনারা যারা আমার ব্লগ পড়েন তারা অনেকেই জানেন যে আমি একটু ভ্রমন প্রিয় মানু্ষ। তাই একটু সুযোগ পেলেই চলে যাই প্রকৃতির প্রেমে নিজেকে রাঙিয়ে তুলতে। আর দেহ ও মন কে সতেজ করতে। তাই গত দুদিন আগে গিয়েছিলাম ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জের প্যারাবো এলাকায়। অবশ্য সেখানে আমি এর আগেও আরও একবার গিয়েছিলাম বাংলার তাজমহল দেখার জন্য। কিন্তু সেদিন সময় স্বল্পতার জন্য অনেক কিছুই দেখা হয় নাই। তাই এবারের যাত্রা। আর এবারও দুপুরের খাবার ভর্তা ভাত খাওয়ার নিয়ত করলাম। কারন আমার আবার হোটেলের খাবারের ক্ষেত্রে ভর্তা ভাতই ভালো লাগে।
আমরা প্যারাবো বাসস্ট্যান্ড নেমে দুটো হোটেল দেখলাম। ভাবলাম দুপুরের খাবারটি এর যে কোন একটিতে সেরে নেই। তবে দুটো হোটেলের বাহিরেই তাদের লোক দাঁড়ানো ছিল যাতে করে কাস্টমার ডেকে হোটেলে ঢুকানো যায়। তো আমরা গেলাম প্রিন্স হোটেলে খাওয়ার জন্য। ভিতরে বসার পরপরই বুঝতে পারলম যে তাদের কাস্টমার হ্যান্ডেল করার মত ভালো কোন ওয়েটার নেই। তাই একবার বের হতে চেয়েও আর হলাম না। এরপর আমরা খাবার অর্ডার করলাম ভর্তা ডাল আর ভাত। ভাবলাম পরে মাছ বা মাংস অর্ডার করবো।
আমি যখন হাত ধুয়ার জন্য গেলাম তখন দেখলাম একজন পঙ্গু লোক খাওয়ার জন্য হোটেলের চেয়ারে বসে আছে। হোটেলের ওয়েটার কে ডেকে বললাম যে তাকে খাবার দিতে। আর বিলটা আমি দিয়ে দিবো। তবে আমি যখন হাত ধুয়ে যাচিছলাম তখন দেখলাম সেই পঙ্গু লোকটি খাচ্ছে। আমি তাকে বললাম আপনার যা ইচ্ছে তাই খান। কিন্তু দূর থেকে লক্ষ্য করলাম যে লোকটি নরমাল জিনিস দিয়েই খাচ্ছে। আমাদের খাবার চলে আসায় আমরা খাওয়া শুরু করে দিলাম। খাওয়ার এক পর্যায়ে আমরা আমাদের জন্য ঝাল ফ্রাই অর্ডার করলাম। তবে আগে দাম জেনে নিলাম। ওয়েটারের কাছ হতে। ঝাল ফ্রাই এর দাম বলল ১২০/- টাকা করে প্লেট। তারপর আমরা দুই প্লেট অর্ডার দিলাম। আমরা মোট তিনটি ভর্তা, ডাল, দুটো ঝাল ফ্রাই এবং ভাতের অর্ডার করলাম।
এক সময়ে সেই পঙ্গু লোকটি খাবার শেষে করে আমাদের সামনে এসে তার কৃতজ্ঞতা জানিয়ে চলে গেল। কিন্তু ভুলবশত তাকে আর জিজ্ঞেস করা হয়নি তিনি কি খেয়েছেন? সেই পঙ্গু লোকটি চলে যাওয়ার পর হোটেলের ওয়েটার এসে বলল যে পঙ্গ লোকটি মোট ২০০/- টাকার খাবার খেয়েছেন। কিন্তু বিশ্বাস না হলেও কিছুই করার নেই। কিছুক্ষন পর আমাদের খাওয়া শেষ হলে আমারা বিলের কথা বলি। তখন মেসিয়ার সাহেব আমাদের কে বলল যে মোট বিল ১০০০/- টাকা বিল হয়েছে। আমাদের একটু সন্দেহ হলো। তাই তাকে লিখিত বিল দিতে বললাম। তখন সেই ওয়েটার একটু আমতা আমতা করতে ‘লাগলো। বেশ কিছুক্ষন পর উনি একটি বিল নিয়ে আসলো যাতে বিল লেখা আছে ৮৫০/- টাকা। আমাদের তাও সন্দেহ হলো।
এরপর আমর বিল চেক করে দেখি যে প্রতিটি খাবারের দাম বেশী করে লেখা হয়েছে। এবার তো আমার হাসবেন্ড গেল রেগে। একে তো সে ঐ এলাকার স্থানীয়, তার উপর অন্যায় সে সহ্য করতে পারে না। এক পর্যায়ে ক্যাশে বসে থাকা ভদ্রলোক ভয় পেয়ে যায়। তখন সে আমাদের কে বলে আপনারা যা দিবেন দেন। কিন্তু আমরা তো সঠিক দাম না দিয়ে আসবো না। অবশেষে দেখা গেল সেই পঙ্গু লোকটির বিল সহ মোট বিল আসলো ৬৫০ টাকা। এখন ভেবে দেখেন তো কি অবস্থা এ দেশের হোটেলগুলোর। সাধারন মানুষ কোথায় নিরাপদ বলেন তো?
এদিকে হোটেলের খাবারের মানও কিন্তু তেমন ভালো ছিল না। না আমাদের কাছে ভালো লেগেছে কোন ভর্তা, আর না ভালো লেগেছে ঝাল ফ্রাই। সব মিলিয়ে সেদিনে দুপুরের খাবারটা আমাদের বেশ খারাপই খেতে হয়েছে। জীবনে প্রথম বার এমন এক অপ্রীতিকর ঘটনার মধ্য দিয়ে দুপুরের মধ্যাহ্নভোজ আমাদের সারতে হলো। এক তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে বের হয়ে গিয়েছিলাম সেদিন সেই হোটেল হতে। সেদিনেই বুঝতে পারলাম বিশ্ব রোডের পাশে অবস্থিত এই হোটেলগুলো কিভাবে মানুষ ঠকায়।
আজ এখানেই রাখছি। আগামীতে আবারও ফিরে আসবো নতুন করে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে। কেমন লাগলো আমার আজকের ব্লগটি? জানার আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় রইলাম। আশা করি আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য দিয়ে উৎসাহিত করবেন।
নিজেকে নিয়ে কিছু কথা
আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।
আমার ব্লগটির সাথে থাকার জন্য এবং ধৈর্য সহকারে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য সবাই কে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। সেই সাথে সবার প্রতি আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
আমার ব্লগটির সাথে থাকার জন্য এবং ধৈর্য সহকারে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য সবাই কে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। সেই সাথে সবার প্রতি আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
Tweet
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে বর্তমানে মানুষ কোথাও গিয়ে চোখ বন্ধ করে কাউকে বিশ্বাস করতে পারে না।খেয়েও শান্তি নাই।আপনারা পঙ্গু লোকটিকে খাইয়েছেন ভালোবেসে আর সেটার সুযোগ নিয়েছে ওয়েটার।খাবারের মান ভালো ছিলো না আবার এমন এক কাহিনী করেছে।সব মিলিয়ে ভালোই তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্যেই মধ্যাহ্ন ভোজ করতে হয়েছে। ধন্যবাদ আপু পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সবচেয়ে বাজে অভিজ্ঞতা ছিল। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আজকাল কাউকে বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে গেছে।বিশ্বাস শব্দটি মনে হয় আর কিছুদিন পর জাদুঘরে গিয়ে খুঁজতে হবে। বেড়াতে গিয়ে বেশ ঝামেলায় পড়েছিলেন দেখছি। তবুও ভাইয়া স্থানীয় দেখে সাহস করে কথা বলেছেন। অন্য এলাকার লোক হলে তো তাদের হাতেই হেনস্তা হতে হতো। তাই নতুন কোন জায়গায় বেড়াতে গেলে বেশ সাবধান থাকতে হয় ।আপনার লেখার মাধ্যমে নিজেও সাবধান হলাম।ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দারুন বলেছেন তো । বিশ্বাস আবার জাদুঘরে খুঁজতে হবে। হি হি হি। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে বর্তমানে মনে হয় যেন মানুষকে ঠকানো ট্রেন্ডে পরিণত হয়ে গেছে। মানে যেখানে যাকে যেভাবেই পাই না কেন ঠকাতে পারলেই হলো। আপনারা যদি তখন হিসাব নিয়ে না বসতেন তাহলে তো জায়গায় আপনাদেরকে ঠকিয়ে দিত। আপনারা না হয় সেখানে হিসেব করেছেন বলে শেষে সঠিক বিলটা দিতে পেরেছেন কিন্তু যারা হিসেব করেনা তাদের তো বেশ ভালো মতোই ঠকায় তারা। সত্যিই এদেশে চলাচল করতে হলে অনেক সাবধানে চলাচল করতে হয়। যাইহোক ধন্যবাদ আপনাকে এই তিত্ব অভিজ্ঞতা নিয়ে আমাদের মাঝে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য যেন আমরাও পরবর্তীতে এ বিষয়ে সতর্ক হতে পারি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আরে ঠকায় মানে, মানুষ তো তাদের এমন ঠকানো বুঝতেই পারে না। ধন্যবাদ মন্তব্য করে উৎসাহিত করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit