দুঃস্বপ্নের মতো সেই দিনগুলো।

in hive-129948 •  2 years ago 

আজ- ১০ ই আশ্বিন , | ১৪২৯ , বঙ্গাব্দ | শরৎকাল ||


আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।

আজ আমি আপনাদের সাথে করোনা কালের সেই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি গুলোর আলোচনা শেয়ার করব।




corona-g5f5055615_1920.jpg
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

মনে পড়ে সেই সব দিনগুলোর কথা, যখন আমরা সর্বপ্রথম কোভিড-১৯ শব্দের সাথে পরিচিত হয়। শুরুতে চীনে এই ভাইরাসটি ধরা পড়লেও ধীরে ধীরে সারাবিশ্বে এটি ছড়িয়ে পড়ে। তখন পুরো পৃথিবীর পরিবেশেরটা যেন পাল্টে গিয়েছিল। দেশে দেশে এলাকায় এলাকায় শুরু হলো লকডাউন। যদিও অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় আমাদের বাংলাদেশ ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা খুবই কম ছিল তবে সময়ের সাথে সাথে তা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে, উন্নত দেশগুলোতে ব্যাপকভাবে ভাইরাসে আক্রান্তের ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে যায়। আমাদের দেশে সর্বপ্রথম ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ছিল মাত্র তিনজন। যারা কিনা বহিরাগত অর্থাৎ অন্য দেশ থেকে এসেছে। তাই সরকার দেশ স্থানান্তরের মাধ্যমে অর্থাৎ বিমান চলাচল স্থগিত ঘোষণা করে।

এছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়। আর এভাবে চলতে থাকলো কয়েকটি বছর। এক লকডাউনের পর আরেক লকডাউন ঘোষণা করছে সরকার, করোনার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য। টিভি নিউজ, খবরের কাগজ গুলোর শিরোনাম ছিল বিভিন্ন দেশের করোনা পরিস্থিতি সংক্রান্ত বিষয়ে। আসলে সময়গুলো খুব বেশি পুরনো নয়। এখনো মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে তবে সেক্ষেত্রে প্রাণহানির সংখ্যা অনেক কম।

ভাইরাসের সময়গুলোতে দৈনন্দিন জীবন আমাদের প্রায় অনেকেরই একইভাবে কেটেছে। সারাক্ষণ গৃহবন্দি হয়ে থাকতে হতো। মোবাইল টিভি বিভিন্ন ডিভাইস নিয়ে আমাদের বেশিরভাগ সময় পার হতো। তবে এই লকডাউন গুলো কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ভিন্ন প্রতিফলন হয়েছে। যারা কিনা সারা বছর ধরে নিজ নিজ কর্মকাণ্ডকে খুবই ব্যস্ত থাকে পরিবারকে সময় দিতে পারেনা তাদের জন্য এই লকডাউন এর সময় এগুলো ছিল একটু ভিন্নরকম এবং আনন্দের।


connection-g2a6dc051e_1920.jpg
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

যাই হোক, ওই দুই-তিনটি বছর আমাদের জীবনটাকে এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা এবং বাস্তবতার মধ্যে পার করতে হয়েছে। অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার তাদের নিজ নিজ শহর ছাড়তে হয়েছে শুধুমাত্র আর্থিক সংকটের কারণে। করোনার ওই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সরকার যখন দেশে লকডাউন ঘোষণা করেন তখন দিনে এনে দিনে খেটে খাওয়া মানুষগুলো তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য কোন মাধ্যম খুঁজে পায়নি। তাই তারা বাধ্য হয়ে তাদের এই শহর ছাড়তে হয়। এছাড়াও বিভিন্ন কোম্পানিতে কর্মরত ব্যক্তিদেরকে ও তাদের চাকরি হারাতে হয়েছে কেননা এই দুরবস্থার মধ্যে কোম্পানিগুলো যথাযথভাবে সচল রাখা সম্ভব হয়ে উঠছিল না। তবে কিছু সহৃদয়বান ব্যক্তি আছেন যারা কিনা ওই দুঃসময় গুলোতে তাদের সমর্থন অনুযায়ী বিভিন্ন অভাবগ্রস্ত পরিবারের সাথে দাঁড়িয়েছেন।

আসলে সে সকল দুঃস্বপ্নের মতো দিনগুলোর কথা জীবনে কখনোই ভোলার নয়। কত পরিবার, আত্মীয়-স্বজন হারাতে হয়েছে আমাদের ওই সময় গুলোতে। হয়তো বেঁচে থাকলে বৃদ্ধ বয়সে ও গল্প করব জীবনের ওই সময়গুলো নিয়ে।



ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় যুগে যুগে বহু এরকম কিছু মহামারী বিশ্বে আগমন ঘটে এবং প্রচুর মানুষের প্রাণ সংশয় হয় তাতে। ১৯ শতকে ও বেশকিছু মহামারী হয়েছিল যেমন- কলেরা, হাম বা বসন্ত। বিশ শতকে এসে ও কোভিড-১৯ ভাইরাসের আগমন ঘটে এবং এই মহামারী ইতিহাসের পাতায় মর্মান্তিক একটি মহামারী হিসেবে সাক্ষী হয়ে থাকবে।

ভবিষ্যতে জানিনা আমাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে। তবে খুব করে চাই যাতে এমন কোন ভাইরাস আর পৃথিবীতে যেন না আসুক। পৃথিবী সুস্থ থাকুক পৃথিবীর মানুষগুলো সুস্থ থাকুক এটাই একান্ত কাম্য। ।



আপনারা হয়তো অনেকে ভাবছে হঠাৎ করে আমি এসব নিয়ে কেন আলোচনা করছি। আসলে আজ বেশ পুরোনো একটি খবরের কাগজ চোখে পরলো। আর কাগজের প্রথম পেজে লেখা আছে ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা এবং আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুর সংখ্যা। আর এই খবরের কাগজটি দেখে আমার মনে পড়লো সে ভয়ঙ্কর সময়গুলো গুলোর কথা যখন আমরা এই সকল পরিস্থিতি গুলোর মধ্যে দিয়ে পার হয়েছি । তাই ভাবলাম সে পুরানো বিষয়গুলো আপনার সাথে আলোচনা করি।

তো এই ছিল আমার আজকে আলোচনা। আপনার সকলেই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে অন্য কোন বিষয় নিয়ে হাজির হব। আল্লাহ হাফেজ।


সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

**

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



ঠিক বলেছেন ভাই, করোনার কারণে লকডাউন দেয়া হয়েছিল জনগণের মাঝে যেন এই ভাইরাস বেশি না ছড়াতে পারে কিন্তু খেটে খাওয়া মানুষগুলো অসহায় হয়ে পড়েছিল। তাদের কর্ম হারিয়েছে পাশাপাশি কোম্পানির চাকরিরত ভাইদেরও নানান ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। হারাতে হয়েছে চাকরি। আর এই সংকটময় সময়গুলো অনেক মানুষের নানান দুর্ভোগের শিকার হতে হয়েছে।

আসলেই ঐ দিনগুলোর কথা ভাবলেই কেমন লাগে।সন্ধ্যা হলেই রাস্তা ঘাট কেমন থমথম পরিবেশ ছিলো।কারোনাকালীন ঈদ বেশ কষ্টের ছিলো, ভাইয়া ঢাকার বাহিরে থাকা এবং ডাক্তারী ডিউটির জন্য মায়ের সাথে ঈদ করতে পারেনি।মায়ের কি আফসোস আর কান্না।পরিবেশে আপনার মতই বলতে চাই ভাইয়া পৃথিবীতে আর কোন মহামারী না আসুক।ধন্যবাদ

আসলেই ভাই,কি যে এক দুর্বিষহ সময় গেলো জীবনের উপর দিয়ে ভাবতেও অবাক লাগে।

জী ভাইয়া কি ভয়ংকর একটি সময় আমরা অতিক্রম করেছি। মনে হলে এখনও ভয় হয়। এক মাস দশ দিন আমি বাড়িতে টোটালি বন্দী অবস্থায় ছিলাম। ঐ সময় টা আর মনে করতে চাই না ভাইয়া। ধন্যবাদ।

Hi @moh.arif,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

এই দিন গুলো সবার মনে থাকার মতো,মানুষ যা জীবনে কল্পনা করেনি তার সম্মুখীন হয়েছে ,আপন মানুষ গুলোর লুকিয়ে থাকা চেহারা গুলো দেখার ও সুযোগ হয়েছে। কি পরিস্থিতির সম্মুখীন হলাম আমরা। করোনার শুরুতে আমার বিয়ে হয় ,এমন একটা অবস্থায় দিন পার করেছি যে না বলতে পেরেছি আর না সহ্য করতে। যাক আল্লাহ মাফ করুক।

কোভিড-১৯ ভাইরাস মানুষের মনে ভয়াবহ আতঙ্কের সৃষ্টি করেছিল।যার জন্য কয়েকটি বছর মানুষকে খুবই ভাবিয়েছে নিজের জীবন নিয়ে ,আপনজনকে নিয়ে এবং আপনজন হারানোর বেদনা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠেছিল সময়টা।লকডাউনে সব স্কুল-কলেজ ছুটি থাকায় বাচ্চারাও বন্দি দশায় মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল।সবমিলিয়ে দুর্বিষহ অবস্থা।এই অবস্থার সম্মুখীন আর যেন কখনো হতে না হয় সেই প্রে করি, ধন্যবাদ ভাইয়া।

আল্লাহ যে কত বড় একটি বিপদ থেকে আমাদের রক্ষা করেছেন তা কেবল আমরাই বলতে পারি। কি ভয়ংকর সময় যে কাটিয়েছি ওই সময়টা বলে বোঝানো যাবে না আমাদের থেকেও বেশি ভয়াবহ সময় গিয়েছে যারা দিন এনে দিন খায় তাদের । যাই হোক এই খারাপ সময়ের কথা আবারও মনে পড়ে গেল আপনার পোষ্টের মাধ্যমে। এমন দিন যেন আর ফিরে না আসে সেই দোয়াই করি।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির লকডাউনের পরিবেশ সচক্ষে দেখেছি ভাই। কঠিন একটা ভিতি নিয়ে পুলিশ প্রশাসন, সংবাদ কর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে চলাফেরা করতে হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষগুলোর নাভিশ্বাস উঠে গিয়েছিল। যাইহোক বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশ ে এর প্রভাব খুবই সীমিত। আর যেন এভাবে কোন ভাইরাস আক্রান্ত না হয় বাংলাদেশ এই প্রত্যাশা ঈশ্বরের নিকট।