RE: বুক রিভিউ :- দুর্যোধন || লেখক- হরিশংকর জলদাস

You are viewing a single comment's thread from:

বুক রিভিউ :- দুর্যোধন || লেখক- হরিশংকর জলদাস

in hive-129948 •  yesterday  (edited)

মহাভারতের গল্প যা কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস লিখেছেন তাঁর অনুবাদে অনেক কিছুই সংযোজন ঘটেছে৷ তা মূল গল্পে হয়তো নেই। আর পরবর্তী লেখকরা বলা ভালো ক্রিটিকরাই এভাবে বলেছেন। পান্ডব পুত্ররা পান্ডুর ঔরসে নয় তারা দেবতাদের ঔরসে কুন্তী এবং মাদ্রির গর্ভজাত সন্তান৷ এই বিচার্য উল্লেখ করে যদি পান্ডবরা হস্তিনাপুরের অধিকারী না হয়ে থাকে তবে দুর্যোধনের ও কোন অধিকার নেই। কারণ পান্ডু এবং ধৃতরাষ্ট্র এই দুজনেই কিন্তু কেউই শান্তনু পুত্র চিত্রাঙ্গদ বা বিচিত্রবীর্য তথা হস্তিনাপুর রাজবংশের সন্তান নয়। বেদব্যাসের ঔরসে অম্বা অম্বিকার গর্ভজাত৷ তাই দুর্যোধনের ওই বক্তব্য একেবারেই ধোপে টেকে না৷

এরপর আসি ছল চাতুরীর প্রসঙ্গে৷ পাশা খেলাও পুরোপুরি প্রহসন ছিল৷ যুদ্ধে জয়লাভের জন্য রণনীতির প্রয়োজন। অভিমন্যু হত্যাও কিন্তু যুদ্ধের নিয়ম লঙ্ঘন করেই ঘটানো হয়েছিল৷ আসলে শকুনি তার প্রতিশোধ স্পৃহায় বাকি সব কিছুই ধ্বংস করে দিয়েছিলেন৷ যুদ্ধের মধ্যে অনেক কিছুই ঘটেছিল৷ দৈহিক বলের থেকে যে বুদ্ধির বল অনেক দামী তা প্রমাণ করে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ৷

দুর্যোধন আসলে আদরে বাঁদর একটি ছেলে। ধৃতরাষ্ট্রের অতিরিক্ত পুত্র স্নেহ এবং শকুনির প্রতিশোধ স্পৃহা দুই মিলেই দুর্যোধনকে সুপুরুষ হওয়া থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

একটা বিশাল রাজ্য, রাজবংশ টিকিয়ে রাখার জন্য বংশ পরম্পরায় সে কত চল-চাতুরী! আর ভীষ্ম যা করেছিলেন শকুনীর পুরো বংশের সাথে, তারপর শকুনীর প্রতিশোধস্পৃহাও কি যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত নয়? একথা ঠিক যে যুদ্ধে বলের চেয়ে বুদ্ধির জোর এর খেলা ভালোমতোই চলেছে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে। কোনো পক্ষই বুদ্ধির খেলায় পিছিয়ে ছিলো না কারোর থেকে!

এক পক্ষ তো অবশ্যই পিছিয়ে ছিল৷ নইলে হারতেই পারত না৷

শকুনির রাগ ক্ষোভ সমস্ত ভীষ্মের প্রতি যথাযথ। সেক্ষেত্রে প্রতিশোধ তিনি ভীষ্মের ওপর নিতেই পারতেন। কিন্তু ভীষ্ম যেহেতু হস্তিনাপুরের রক্ষক তাই হস্তিনাপুরের ভরত বংশ তচনচ করার মারণ খেলায় মেতেছিলেন। দুর্যোধন তাঁর ঘুঁটি বই কিচ্ছু না। এখানে প্রতিশোধ ধ্বংস এতোটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল যে দুর্যোধন যে আসলেই তার বোনের সন্তান তা ভুলে গিয়েছিলেন৷ যে কারণে গান্ধারীর অভিশাপ কুড়িয়ে ছিলেন। পরিনতির আন্দাজ কি শকুনি করতে পেরেছিলেন না বলে মনে হয়?

অথচ দেখুন ভীষ্মের প্রতি রাগ অম্বারও ছিল। তিনি কিন্তু হস্তিনাপুর ধ্বংস করতে উঠে পড়েননি।

যাইহোক, মানুষে মানুষে তফাৎ তো থাকবেই৷ কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন বেদব্যাস আমার দেখা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ লেখক যিনি এমন একটি মহাকাব্য সৃষ্টি করেছিলেন এবং যার ভেতরে প্রবেশ করলে তল খুঁজে পেতে রীতিমতো হিমসিম খেতে হয়।