লেবুর শরবত নিয়ে মজার একটি গল্প

in hive-129948 •  6 days ago 
❤️আসসালামুআলাইকুম/আদাব❤️

আমি @rahnumanurdisha বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ এর সকল ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা?আশা করছি সকলেই অনেক ভালো আছেন?আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়।ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে।

ginger-1918107_1280.jpg

ছবির উৎস

আজকে আপনাদের সাথে আমার ইন্টারমিডিয়েট লাইফের একটি মজার ঘটনা শেয়ার করব।আমার ইন্টারমিডিয়েট লাইফটা বেশ ভালো কেটেছিল।আমার দুই বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল।তো একজনের নাম মীম এবং অন্যজন সুবর্ণা।ইন্টারমিডিয়েট সময়টা সবচেয়ে ব্যস্ততম জীবনের মধ্যে একটি।আমরা যেহেতু বিজ্ঞান বিভাগের ছিলাম আমাদের টোটাল ছয় সাব্জেক্টে পড়তে হতো।ওই সময়টায় স্যাররা আবার তিনদিন করে এক সাব্জেক্টে পড়াতেন।আমাদের কলেজের সময় বাদে দেখা যেত তিন চার ঘণ্টা ডেইলি কোনো না কোনো প্রাইভেট থাকতো।সবচেয়ে দৌড়াদৌড়ির সময় বলা যায় ওই ইন্টারমিডিয়েট লাইফটাকে।

তো একদিন আমাদের বিকেলের জীববিজ্ঞান পড়াটা আমরা মিস দিয়ে সবাই ঘুরতে যায়।আসলে আমাদের স্যার যিনি ছিলেন তিনি দেড় ঘণ্টা থেকে দুই ঘণ্টা পড়াতেন।আসলে সে যেই কদিন পড়াতেন তার রুটিনে কোনো ফাঁকিবাজি বিষয় ছিলনা।কোনো একদিন গ্যাপ গেলে অন্যদিন সেটা পূরণ করে দিতেন।আসলে যারা ভালো স্টুডেন্ট তারা বোধ হয় এরকমই হয়। স্যার ওই সময় মেডিক্যাল ফোর্থ ইয়ারে স্টুডেন্ট ছিলেন।আর আমাদের প্রতিদিন পড়া দিয়ে আবার সেগুলো মুখস্ত নিতেন।জীববিজ্ঞান বিষয়টাই তো মুখস্ত এর বিষয় ছিল সেখানে।

তো সেদিন আমরা সবাই সিদ্ধান্ত নিই যে আজকে আমরা স্যারকে বলে ছুটি নিয়ে ঘুরতে যাব। স্যার আবার কারণ জিজ্ঞেস করবেন এজন্য আমরা মনগড়া অসুস্থ হওয়ায় কারণ বলে কোনরকমে ছুটি টা পাই।ওইদিন বৃহস্পতিবার ছিল তাই সেইদিনটি আমরা বিকেলে নদীর পাড়ে ঘুরতে যাওয়ার জন্য বরাদ্দ রেখেছিলাম আরকি।আমাদের ফরিদপুরে পদ্মার পাড় হচ্ছে ধলার মোড়।ওই সময়টায় কোনো বাধ ছিলনা ।আর এখনকার মতো আশেপাশে কোনো রেস্টুরেন্ট বা দোকানের ব্যবস্থাও ছিলনা।জাস্ট লোকজন ঘুরতে যেত এরকম একটি নিরিবিলি জায়গায় আরকি।

আমরা সেদিন বিকেল পাঁচটার মধ্যে পৌঁছে যায় ধলার মোড়।কিন্তু পৌঁছে গিয়েই আমাদের বান্ধবী মীম একটু দূর যেতেই একটি টং দোকান দেখে দাঁড়িয়ে পড়ে।এদিকে টং দোকানটি তে বিক্রি হচ্ছিল লেবুর শরবত।আর দোকানদার শরবত বানাচ্ছিল ফিল্টার এর পানি দিয়ে।এখন ওই নদীর পাড়ে তারপর আবার ফিল্টারের পানি দিয়ে লেবুর শরবত কোনো ফ্রিজ এর ব্যাবস্থা নেই।তাই আমি দেখেই মোটামুটি বুঝলাম খেতে একদমই খারাপ হবে।তাই আমি ওকে টোটালি নিষেধ করলাম না খেতে।আর সুবর্ণার এবং বাকিদের কোনো মতামত এর ব্যাপার থাকতো না ও সবকিছুতেই রাজি একদম নিরপেক্ষ ঠান্ডা মাথার মানুষ ছিল।

আমি ওই শরবত খেতে নিষেধ করছিলাম কারণ দেখেই মনে হচ্ছে ভালো হবেনা খেতে।আমার আবার যেকোনো জিনিস দেখলেই একটা মোটামুটি আইডিয়া এসে যায় বিশেষ করে খাবার এ ২০ বছরের অভিজ্ঞতা কিনা,হাহাহা।এবার মীম আবার একটু জেদি প্রকৃতির ছিল তাই সে যা বলবে সেটাই করবে।তো আমার নিষেধ না শুনেই অর্ডার দিয়ে নিজে খেয়ে নিল।আর আমরা যদি কেউ না খাই বিশেষ করে আমি আর সুবর্ণা তাহলে তো আমাদের দুজনের উপর ক্ষেপে যাবে।তাই আমাদের আর না খেয়ে কোনো উপায় নেই। তো সে এমনভাবে খেল সেই শরবত যে খেতে কতই না ভালো।

এবার আমার আরেক বান্ধবী সুবর্ণা ছিল মীমের কাছে জিজ্ঞেস কেমন খেতে জানতে চাইলে বলল দারুন জাস্ট। মীম যেহেতু খেয়েই নিয়েছে তাই সবাই যাতে ওই স্পেশাল শরবত খাই এজন্য সবাইকে বলছিল দারুন খেতে । ওর মুখের এক্সপ্রেশন দেখে মোটামুটি বুঝার উপায় নেই যে বেচারা একটা যায় তাই জিনিস খেয়ে নিয়েছে।তাই আমরা বাকিরাও লেবুর শরবত বানাতে বললাম দোকানদার মামাকে।আমরা যেহেতু মোট পাঁচজন বান্ধবী ছিলাম।তো সবাই একে একে মুখে দিতেই বুঝলাম আসলেই কতটা ভালো ছিল খেতে।তখন তো সবাই মিলে মীম কে বলা হলো এত ভালো শরবত আরও কয়েক গ্লাস খা দোস্ত।

এদিকে মীম তখন বলল সব কিছুর অভিজ্ঞতা থাকা ভালো জীবনে।আমি নিজে যেহেতু বাশ খেয়েছি তোরা আমার বান্ধবী তোরাও টেস্ট কর,হাহা।এইযে আজকে আমরা লেবুর শরবত খেলাম সবাই এটা স্মৃতির পাতায় থাকবে।এতদিন পর হঠাৎ আজকে মনে হলো পুরোনো গল্পটি তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলে এলাম আমাদের স্মৃতির এক অংশ।

সেই লেবুর শরবত নিয়ে আমাদের প্রত্যেকের হাসাহাসির ব্যাপারটা কিন্তু দারুন ছিল।সবসময় উল্টাপাল্টা জিদ করাও কিন্তু ঠিক না কি বলুন বন্ধুরা!তারপর আমরা সবাই মিলে অনেকক্ষণ সময় কাটালাম নদীর পাড়ে এবং ছবি তুললাম।আমরা পাঁচজন প্রায় প্রায় ঘুরতে যেতাম ওই সময়টায়।আমাদের বেশ ঘুরতে যাওয়া হতো শুক্রবার বা বৃস্পতিবার এর দিনগুলোতে।অনেক বেশি মিস করি সেই লেবুর শরবত কে। আমরা আর আগের মতো ঘুরতেও যায়না আর নানা রকম অভিজ্ঞতার ও সম্মূখীন হওয়া হয়না।সময়ের সাথে আমরা সবাই এখন অনেকটা ম্যাচিউর।কিন্তু সেই ব্যস্তময় ইন্টারমিডিয়েট লাইফটাই বেটার ছিল।

ধন্যবাদ সবাইকে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য।আমার আজকের ব্লগটি কেমন লেগেছে কমেন্টে জানতে ভুলবেন না কিন্তু বন্ধুরা । আবার নতুন কোনো ব্লগ নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো।


❤️আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি❤️
আমি রাহনুমানূর দিশা।আমার জাতীয়তা বাংলাদেশী।আমি বর্তমান অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়াশুনা করছি।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সাথে দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় থেকে যুক্ত রয়েছি।বাংলা ভাষায় লিখতে, পড়তে এবং নতুন নতুন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে আমার ভালো লাগে।এছাড়াও ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতে অনেক ভালো লাগে।অবসর সময়ে গান শুনতে এবং বাংলা নাটক দেখতে পছন্দ করি।

Post by-@rahnumanurdisha
Date - 25th September,2024


Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Twitter_Banner_24.3.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

গ্রুপ মিলে পড়া মিস দেয়া, কলেজ লাইফের যেন এক অন্যরকম এডভেঞ্চার!! আপনার পড়া মিস দিয়ে ঘুরতে যাওয়া, লেবুর শরবত খাওয়ার অভিজ্ঞতা পড়ে বেশ হাসি পেলো আপু। ফ্রেন্ডস দেরআঝে তো এমন হয়ই!! আমি একা কেন বাজে এক্সপেরিয়েন্স করবো, সবাই মিলেই করুক- এইটা বেশ চলে বন্ধুদের মাঝে! 😂😂 যেটা আপনার বান্ধবীও করেছিলো! যার জন্য দারুণ এক স্মৃতি তৈরি হয়েছে, যা এতদিন পরেও মনে পড়ে হাসি আসে।

হাহা জি আপু একদম ,ধন্যবাদ।

ইন্টারমেডিয়েট লাইফটা ব্যস্ততা পূর্ণ হলেও এনজয়েবল একটা সময়। সবাই আমরা কম বেশী উপভোগ করেছি এই সময়টা। আপনাদের জীবনের একটা মজার ঘটনা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্যে ধন্যবাদ আপনাকে। তবে এধরণের শরবত এভোয়েড করাটাই ভাল! নন হাইজেনিক!


ক্ষুদে স্বাস্থ্যবার্তা

একজন মহিলার যদি (১) মাসিকের সময় অত্যধিক ব্লিডিং হয়, (২) ওজন অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পায়, এবং (৩) রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড (Triglyceride) নামক লিপিড বেড়ে যায়, তাহলে তার থাইরয়েড হরমোন (thyroid hormone) পরীক্ষা করে দেখা উচিত। হতে পারে সেই মহিলা হাইপোথাইরড (Hypothyroidism) রোগে ভুগছেন।

জি আপনি ঠিক বলেছেন একদম এনজয়েবল একটি টাইম বস্ততাপূর্ণ হলেও ইন্টারমিডিয়েট লাইফ টা,ধন্যবাদ।

আপনাদের বান্ধবী মীম জেদ করেছিল বলেই তো আপনাদের সবাইকে শেষ পর্যন্ত লেবুর শরবত খেতে হয়েছিল। বাহিরের লেবুর শরবত,আখের শরবত না খাওয়াই ভালো। তবে এটা ঠিক, জীবনে সব ধরনের অভিজ্ঞতার দরকার আছে হা হা হা। যাইহোক বন্ধু বান্ধবীদের সাথে কাটানো মুহূর্ত গুলো কিন্তু প্রায়ই আমাদের মনে পড়ে। আর সেসব স্মৃতিচারণ করতেও খুব ভালো লাগে। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

জি ভাইয়া,ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।