স্বপ্নগুলো স্বপ্নই থেকে যায় মধ্যবিত্তের চোখে

in hive-129948 •  13 days ago 

আসসালামু আলাইকুম/🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


আমাদের এই সমাজে তিন শ্রেণীর মানুষ বসবাস করে। উচ্চ শ্রেণীর মানুষ, মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন শ্রেণীর মানুষ। মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষগুলোরই জীবনের সবচাইতে বেশি কষ্ট হয়ে থাকে বলে আমি মনে করি। কারণ যারা উচ্চ শ্রেণীর মানুষ, উচ্চ বিলাসিতা যাদের জীবন। তাদের মনের ভিতর হাজারো স্বপ্ন থাকে, সেই স্বপ্নগুলো তারা পূরণ করতে পারে। কিন্তু যারা নিম্ন মানুষ শ্রেণীর মানুষ রয়েছে, তাদের স্বাদ আলাদ,বা স্বপ্ন বেশি থাকে না। তাদের শুধু স্বপ্ন থাকে খেয়ে-দেয়ে জীবন বাঁচাবো। আসলে এইসব মানুষের কোন স্বপ্ন নেই এইসব মানুষের কোন চিন্তা নেই। আর যারা উচ্চ বিলাসিতা তাদের তো শখ আলাদ সবই মিটানো যায়।কিন্তু মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষগুলো হাজারো স্বপ্ন দেখে কিন্তু এই স্বপ্নগুলো তারা পূরণ করতে পারে না। যার কারণে তাদের মনের ভিতর যেন হাজারো কষ্ট লুকিয়ে থাকে। এই কষ্টগুলো তারা প্রকাশ করতে পারে না, আবার বুকের ভিতর জমা করে রেখে সহ্য করতেও পারেনা।


people-8386051_1280.jpg

source

একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানের চোখে মুখে হাজারো স্বপ্ন থাকে। এই স্বপ্নগুলো তারা পূরণ করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে। তেমনি মধ্যবিত্ত পরিবারের বাবা মারও অনেক স্বপ্ন থাকে, তাদের সন্তানকে নিয়ে। তাদের সন্তানের আশা যেন পূরণ করবে মুখে হাসি ফোঁটাবে এই লক্ষ্য নিয়ে তারাও যেন এগিয়ে যায়। কিন্তু মধ্যবিত্ত হওয়ার কারণে জীবনটাকে অনেক কঠিন ভাবে তারা উপলব্ধি করে। কারণ জীবনের স্বাদ আলাদ তারা পূরণ করতে পারে না। চাইলেও তারা সন্তানের মনের আশা পূরণ করতে পারেনা। জীবন তারা পরিচালনা করে খুবই সহজ এবং সরল ভাবে। নিম্ন শ্রেণীর মানুষের মতো কারো কাছে হাত পাততেও পারে না, আবার উচ্চ শ্রেণীর মানুষের মতো বিলাসিতাও তারা অর্জন করতে পারেনা। আর এই নিম্ন শ্রেণীর মানুষ না হওয়াতে তারা অন্যের কাছে সাহায্য চাইতেও নিজের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয় এবং নিজের বিবেকের কাছে বাঁধা থাকে।যার কারণে তারা নিরবে মনের ভিতর কষ্টগুলো জমা করে সহ্য করতে থাকে।


একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানের আশা এবং স্বপ্ন খুব একটা বড় থাকে না। তাদের স্বপ্ন থাকে তাদের মনের মত একটা বাইক হবে এবং ভালো একটা মোবাইল তারা কিনবে। এই স্বপ্ন নিয়ে যেন তারা এগোতে থাকে, কিন্তু উচ্চু শ্রেণীর মানুষের কাছে এই মোটরসাইকেল গুলো কেনা যেন কোন ব্যাপারই না। তারা ২/৩ মাস পরপরই নতুন নতুন দামি দামি বাইক কিনে এই মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানের সামনে দিয়ে তারা চালিয়ে থাকে। আর তখনই তারা মনের ভিতর স্বপ্ন দেখে তাদেরও একদিন এরকম স্বপ্নের বাইক হবে। আসলে বাইক প্রত্যেকটা ছেলেরই একটা স্বপ্ন। আর এই স্বপ্নগুলো পূরণ করার জন্যই মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানেরা হাজারো কষ্ট সহ্য করে ধীরে ধীরে কিছু টাকা জমিয়ে থাকে এই বাইক কেনার জন্য।


রাস্তাঘাটে এরকম স্বপ্নের বাইক যখন চলাচল করে তখন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানের হৃদয়ে যেন দাগ কেঁটে যায়। তাদেরও মনের ভিতর ধাক্কা লাগে, যে তারাও ভাবে একদিন এরকম বাইকের মালিক হবে। এভাবেই যেন তারা আস্তে আস্তে জীবন পার করে নেয়। একসময় এই বাইক কেনার স্বপ্ন তারা আর দেখতে পারে না, কারণ পরিবারের নানা চাপে পরিবারের অভাব অনটনের কাছে হার মেনে যায় তার এই স্বপ্নের বাইক কেনার জমানো টাকা, কারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের অনেক দায়িত্ব থাকে।


এই মধ্যবিত্ত পরিবারে অনেক ধরনের অভাব অনটন দেখা দেয়। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত পরিবারের অভাব অনটের মধ্যে তাদের বাবা-মা যদি অসুস্থ হয়ে যায় তখন তাদের জমানো অর্থ দিয়ে পরিবারের মুখে হাসি ফোঁটানোর জন্যই সর্বোচ্চ চেষ্টা করে। বাবা-মাকে চিকিৎসা করায়। তখন তাদের স্বপ্নকে বিসর্জন দিতে এই মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানেরা একবারও ভাবে না। তেমনি আমার বন্ধুর মানিক এই কাজ করেছে, ও তিলে তিলে কিছু টাকা জমিয়ে ছিল বাইক কেনার জন্য।হঠাৎ ওর বাবা অসুস্থ হয়ে যায়। ও যেন বাইক কেনার স্বপ্নকে একবারে নিঃশেষ করে বাবা চিকিৎসা করিয়েছিলো।



মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানেরা বাবা মাকে অনেক বেশি ভালোবাসে। তারা তাদের বাবা-মাকে হাসিখুশিতে দেখতে চায়। বাবা-মার স্বপ্ন পূরণ করতে চায়, কিন্তু অভাব অনটনের কাছে হার মেনে যায় এই স্বপ্নগুলো। তবুও তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে নিজের শেষ বিন্দু পর্যন্ত দিয়ে বাবা মাকে সুখে রাখার জন্য। কিন্তু তারা মুখ ফুটে বলতে পারে না বাবা মাকে অনেক বেশি ভালোবাসে। কারণ তাদের ভিতরে অনেক কষ্ট থাকে, এই কষ্টগুলো তারা প্রকাশ করতে পারে না। আবার সহ্য করতে পারে না। তাই মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের যেন সবসময়ই কষ্টের মধ্যে দিয়ে জীবন পার করতে হয়। তবুও তারা কষ্টকে লুকিয়ে হাসি দিয়ে পরিবারের সাথে জীবন চালিয়ে যায়।🙏🤲🙏


আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

GridArt_20250212_000442704.jpg

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষদের জীবন সত্যি অনেক কঠিন। তারা অনেক স্বপ্ন দেখে, কিন্তু সেই স্বপ্নগুলো পূরণ করতে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হয়। একদিকে ব্যক্তিগত ইচ্ছা, অন্যদিকে পরিবার ও সামাজিক চাপ এই দ্বন্দ্বে তারা বারবার হোঁচট খায়। মানিকের মতো ছেলে তার বাইক কেনার স্বপ্ন একেবারে ত্যাগ করলো বাবার চিকিৎসা খরচের জন্য, যা মধ্যবিত্ত জীবনের ত্যাগ এবং আত্মত্যাগের এক সুন্দর উদাহরণ।

আসলে মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের জীবনে কখনো সবকিছু পূরণ হয় না। কেননা আপনি এত মধ্যবিত্ত মানুষদের নিয়ে যে কথাগুলো বলেছেন সেগুলো একদম সঠিক কথা। আর তাদের সেই প্রিয় জিনিসটা যখন অন্য কেউ তাদের সামনে দিয়ে নিয়ে যায় তখন তাদের সেই জিনিসটা সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগে।

আসলে ভাই আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়লাম। মধ্যবিত্তের স্বপ্নগুলো কখনো পূরণ হয় না তা খুবই বাস্তব। শুধু মধ্যবিত্তের স্বপ্ন হৃদয়ের মাঝে কষ্ট সৃষ্টি করে। আপনি ঠিক বলেছেন, মধ্যবিত্তের স্বপ্নগুলো স্বপ্নই থেকে যায়। ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।

মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেদের হাজারো স্বপ্ন থাকে এই স্বপ্নগুলো তারা নিমিষেই শেষ করে দেয় পরিবারের অভাবের কারণে। আসলে আজকে আপনার পোস্ট পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। একদম হৃদয়ের কথাগুলো যেন শেয়ার করেছেন।

PUSS Task এর স্ক্রিনশটগুলো এখনো শেয়ার করা হয় নাই অথচ পোষ্ট শেয়ার করেছেন ২২ ঘন্টা হয়ে গেলো। এটা অনাকাংখিত ও অপ্রত্যাশিত।

দুঃখিত আমি, আমি কাজগুলো করে রাখছি কিন্তু আপলোড করব সেটাই ভুলে গিয়েছিলাম। কিরকম আর হবেনা।