টেলিভিশন - শৈশবের স্মৃতি।steemCreated with Sketch.

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)

হ্যালো বন্ধুরা।
আসসালামুয়ালাইকুম। কেমন আছেন সবাই ? সবাইকে আমার আরও নতুন একটা পোস্টে স্বাগতম। আজকে কথা বলব নব্বইয়ের দশকের টেলিভিশন এবং বিটিভি চ্যানেল নিয়ে। এখন তো ঘরে ঘরে টিভি। আর বিটিভি চ্যানেলকে সবাই এখন বাতাবিলেবু চ্যানেল বলে জানে। কিন্তু নব্বইয়ের দশকে এগুলোর অবস্থা কেমন ছিল??

আমি তখন ক্লাস ওয়ান কিংবা টু তে পড়তাম। আমার খুব ভালোভাবেই মনে আছে । আমাদের গ্রামে তখন হাতেগোনা দু-একটা টিভি ছিল। তবে সেগুলো সাধারন কেউ যেয়ে দেখতে পারত না। বড়লোক বাড়ির টিভি, ওখানে সবার যাওয়ার অনুমতি ছিল না। একদিন সকালে আমি খেয়াল করলাম আমাদের বাড়িতে মামা এসেছে। তো এরপর আমি যখন ঘরে ঢুকলাম তখন দেখি আব্বু, মামা, আম্মু সবাই বসে টাকা গুনছে। ওখানে খুচরা টাকা ছিল অনেক। হয়তো আব্বু জমিয়েছিল মাটির ব্যাংকে। সব টাকা মিলিয়ে প্রায় এক ব্যাগ মত টাকা হবে। খুচরা টাকা অনেক ছিল তো এই জন্য । আব্বু মামাকে কাজ দিয়েছিল সেই খুচরা টাকা গুলো বাজারে গিয়ে নোট করে আনতে। এতো টাকা একসাথে দেখে আমি বুঝতেছিলাম না কেন এত টাকা এক জায়গায় গুনা হচ্ছে। পরে জানতে পারলাম আমাদের টিভি কেনা হবে। আমার খুশি দেখে কে। আমি এতই খুশি হয়েছিলাম যা বলে বোঝানোর বাইরে।
tv-3699176_1280.png
image source & credit: copyright & royalty free PIXABAY

ঠিক দু-তিন দিন পর দেখলাম আব্বু একটা ২১ ইঞ্চি কালার টেলিভিশন কিনে নিয়ে আসলো। আমাদের এলাকায় কালার টেলিভিশন মনে হয় আমাদের প্রথম কেনা হয়েছিল। টিভি কেনার পর কি আনন্দ!! সবাই শুধুমাত্র টিভি দেখতে আসতেছিল আমাদের বাড়িতে। আমাদের একটা রুম ছিল, ওই রুমে কেউ থাকত না৷ শুধু টিভি রাখা হয়েছিল। ওই সময় তো ডিসের লাইন বা ইন্টারনেটে কিছুই ছিলনা। তখন অ্যান্টেনা লাগিয়ে বিটিভি দেখতে হতো। বিটিভি ই ছিল তখন একমাত্র বিনোদনের উৎস। সম্ভবত প্রতি বৃহস্পতিবার আর শুক্রবার বিটিভিতে বাংলা সিনেমা হত। আর শুক্রবার রাতে আলিফ লায়লা হত।

আমার একদম স্পষ্ট মনে আছে, একদিন দুপুর বেলা যেদিন বিটিভিতে মুভি হত ঐদিন আমাদের বাড়ীতে এত মানুষ এসেছিল যে আমাদের রুমে পা ফেলার জায়গা ছিল না। সবাই মুভি দেখার দিন, আর আলিফ লায়লা দেখার সময় আমাদের বাড়িতে চলে আসত। দুপুরবেলা আম্মু আমাকে খাইয়ে দিচ্ছিল। আর আমি রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে টিভি দেখছিলাম। রুমের মধ্যে যেতে পারতেছিলাম না কারণ ভিতরে অনেক মানুষ ছিল। এ বিষয়টা আমার দারুণ মজা লাগত। যখন বাড়ি ভর্তি মানুষজন থাকত তখন বেশ আনন্দ পেতাম।

আলিফ লায়লা শুরু হতো সম্ভবত রাত আটটায়। রাত আটটার আগে মানুষজন চলে আসতো আমাদের বাড়িতে। সারা সপ্তাহ অপেক্ষায় থাকতাম এ আলিফ-লায়লার জন্য। প্রত্যেক বৃহস্পতি এবং শুক্রবার দুপুর এবং শুক্রবার রাতে আলিফ লায়লার সময় আমাদের বাড়িটা অনুষ্ঠানের মত লোকজনে ভরপুর থাকতো। আমার বয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যে এক্সট্রা প্রায়োরিটি পেতাম বাইরে গেলে। হিহিহিহি। যাইহোক, ওই সময় আরও একটা অনুষ্ঠান ছিল সেটা হচ্ছে মিনা রাজুর কার্টুন। আমার ভীষণ প্রিয় ছিল। মিনা রাজু কার্টুন আমি কখনোই মিস করতাম না। প্রত্যেকটা পর্বই দেখতাম। একটি পর্ব একাধিকবার চালাত। এইজন্য একবার দেখা মিস গেলে সময় পেলে পরে দেখে নিতে পারতাম।

মীনা_লোগো.jpeg
Wikipedia

কয়েক বছর পর আমাদের বাড়ির পাশের এক চাচা সাদাকালো টিভি কিনেছিল। আমার মনে আছে একদিন স্কুল চলাকালীন সময়ে আমি স্কুলে না গিয়ে চাচাদের বাড়িতে গিয়ে দেয়ালের উপর দাঁড়িয়ে মিনা রাজু কার্টুন দেখতেছিলাম। কারণ বাড়িতে গেলে তো সমস্যা, পিটাবে ধরে। তো আমি ওখানে দাঁড়িয়ে কার্টুন দেখছিলাম আর চাচাতো ভাইয়ের সাথে মিনা রাজু কার্টুন নিয়ে গল্প করছিলাম। হঠাৎ স্কুলের স্যার রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আমাকে দেখে ফেলেছিল। আমাকে বলছিল স্কুলে না গিয়ে টিভি দেখা ?? স্কুলে আয় খবর আছে।

সত্যি দিনগুলো অনেক সুন্দর ছিল। এখন কত আধুনিক টিভি, ইন্টারনেট সবকিছু কত সহজ লভ্য। বিনোদনের অনেক মাধ্যম আছে এখন। কিন্তু ওই দিনগুলো জীবনের গোল্ডেন ফ্রেমে বাঁধানো। একটা মজার ঘটনা কি জানেন আমাদের ওই টিভিটা এখনো ভালো আছে। আমাদের বাড়িতে নতুন আর কোন টিভি কেনা হয়নি পরে। টিভি দেখাই হয়না তেমন। কনকা ব্রান্ডের সেই ২১ ইঞ্চি কালার টেলিভিশনটি এখনো চলছে। আর ধরে রেখেছে আমার শৈশবের এক গুচ্ছ স্মৃতি।



JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abbVD.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

৯০ দশকের সেই দিনগুলো ছিল গোল্ডেন ডে। তখন মানুষের মাঝে একটা ভ্রাতৃত্ব বন্ধন, আত্মীয়তার বন্ধন, প্রতিবেশীর বন্ধন ছিল অটুট। আজকাল তো আর কেউ কারো দিকে তাকায় না। কেউ কারো বাসা বাড়িতে যায় না। অনেকে স্বজনদেরও খোঁজখবর নেয় না। সত্যি ৯০ দশকের সেই স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সোনালী অতীতকে মনে করিয়ে দিলেন। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

এউ সৃতি গুলো সত্যি অনেক দারুন ভাইয়া।আমারো বেশ মনে আছে ২০০৭-৮ সালে আমার বাবা একটা সাদা কালো টেলিভিশন কিনেছিল যেটা নিয়ে আমরা সবাই মেতে থাকতাম।সিসিমপুর,মিনা,আলিফ লাইয়লা,আর প্রতি বৃহস্পতিবার আর শুক্রবার তো থাকছেই বাড়ি টা যেনো মনে হতো কয়েক ঘনটার জন্য সিনেমা হল।অসম্ভব দারুন ছিল শৈশব টা।মিস করি খুব।

নব্বইয়ের দশকের টেলিভিশন নিয়ে আমার ও অনেক স্মৃতি রয়েছে। তবে তার মধ্যে কিছু স্মৃতি আপনি এখানে তুলে ধরেছেন। বিশেষ করে আলিফ লায়লা মিনা কার্টুন আরো কিছু ব্যাপার। এটা সত্য বলেছেন তখন কারো ঘরে যদি একটা টিভি থাকতো, দূর দুরান্ত থেকে ও লোক আসতো সেখানে টিভি দেখার জন্য। আমাদের ঘরেও তেমন একটি টেলিভিশন ছিল এবং রাত্রে যখন ব্যাটারি ভাড়া করে নিয়ে আসতো আলিফ লায়লা দেখার জন্য তখন টিভিটি উঠোনে লাগানো হতো। যাতে করে সবাই একসাথে দেখতে পারে। যাইহোক অনেক বাস্তবতা নিয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন ধন্যবাদ।

বিটিভি চ্যানেলকে সবাই এখন বাতাবিলেবু চ্যানেল বলে জানে এই কথা অনেক ভালো লেগেছে। আপনার বাসার টিভি কেনার সাথে আমাদের বাসার টিভি কেনার কিছুটা মিল আছে। আমাদের বাসায় ও আসে পাশে মানুষ টিভি দেখতে আসতো। আপনার পোস্টটি পড়ে আগের দিন গুলোর কথা মনে পড়ে গেল। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া এতো সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।

ভাইয়া আপনার পুরো কাহিনী কি পড়ে মনের অজান্তেই আমার চোখের কোনে পানি চলে এসেছে। আপনার শৈশবের স্মৃতিগুলো যেন আমার মত একই সূত্রে গাথা। ভাইয়া আপনার মত আমারও সেই সনি কোম্পানির টেলিভিশন এখনো আছে। আর সবচেয়ে বড় কথা আমরা এখনো বাতাবি লেবুর চ্যানেলটাই দেখি হাহাহা।😆😆 পৃথিবী যতই আধুনিক হোক না কেন সেই আনন্দ গুলো এখন আর নেই। শৈশবের সেই স্মৃতি চুরি করে টিভি দেখা, সবাই একসাথে এক ঘরে টিভি দেখা, মিনা কার্টুন দেখা, আলিফ লায়লা দেখা, এবং বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবারে বাংলা ছায়াছবির জন্য অপেক্ষা করা এর চেয়ে স্মৃতিমধুর আর কি হতে পারে।

ছোটবেলার সব স্মৃতি গুলো একবারে মনে করিয়ে দিলেন ভাইয়া। আগেকার দিনে একটা চ্যানেল থাকলেও সেই চ্যানেল দেখার যে কি আনন্দ ছিল তা এখনকার দিনে হাজার চ্যানেলের মাঝেও খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। আগে যখন গ্রামের বাড়িতে যেতাম তখন দেখা যেত যে শুক্র শনিবার সিনেমা দেখার সময় পুরো রুম ভর্তি হয়ে যেত। পা ফেলার জায়গা থাকতো না। আপনার মতো আলিফ লায়লা মিনা কার্টুন আমারও পছন্দের ছিল । যদি দূরে কোথাও মিনা কার্টুনের গান শুনতাম তখন দৌড়ে বাসায় এসে টিভি চালিয়ে দেখতাম যে মিনা কার্টুন শেষ হয়ে গিয়েছে। আসলে সেই সব স্মৃতি বলে শেষ করা সম্ভব নয়।

আপনার পোস্ট পড়তে পড়তে আমার গা ছমছম করছিল কারন আমার অনেক স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়েছেন। আমি জানিনা কোইন্সিডেন্স নাকি সবার বেলা একই অবস্থা যে, আপনার টিভি নিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো প্রায় ৮০ ভাগ আমার সাথে মিলে গিয়েছে। পয়সা থেকে টাকায় রুপান্তর করে আপনার আব্বুর টিভি কিনার ঘটনাটা আমার খুব মজা লেগেছে। আমাদের কাঠের ফ্রেমের ভেতরে কাঠের বডির টিভি ছিল তাও সেই নব্বই এর দশকে। কত মানুষ শুক্রবার ভীড় জমাত। আলিফ লাইলা, মীনা-রাজু কার্টুন তখন দেখে নাই এমন লোক কম পাওয়া যাবে। আপনি মানুষের ভীড়ের জন্য নিজের বাসায় আরেক রুম থেকে টিভি দেখছিলেন শুনে খুব হাসি পাচ্ছিল। ধন্যবাদ ভাই।

সম্ভবত প্রতি বৃহস্পতিবার আর শুক্রবার বিটিভিতে বাংলা সিনেমা হত। আর শুক্রবার রাতে আলিফ লায়লা হত।

সত্যি ভাইয়া শৈশবের সোনালী দিনগুলো এখনো খুবই মনে পড়ে। আমার এখনো মনে পড়ে সেই বিটিভির সিনেমা দেখার কথা। যেদিন সিনেমা থাকতো সেদিন সিনেমা শুরু হওয়ার এক ঘণ্টা আগে থেকেই যে যার জায়গা দখল করে বসে থাকতো। ঘরের মধ্যে ঢোকার মত জায়গা থাকতো না। সেই টিভিটি এখনো আছে বাসায়। তবে দেখা হয় না। সেই সময় মানুষ এই টিভির সিনেমার মাঝে এবং আলিফ লায়লার মাঝে অনেক বিনোদন খুঁজে নিতো। সত্যি সেই সময়গুলো অনেক মধুর ছিল। তবে বর্তমানে সবকিছু উন্নত হয়েছে তাই এখন আর কোন কিছুই হৃদয়ে ছোঁয়া লাগেনা। প্রতি সপ্তাহে অপেক্ষায় থাকতাম আলিফ লায়লা দেখার জন্য। আর মিনা কার্টুন আমার খুবই প্রিয় ছিল। তবে এখন আর কেন জানি কোন কিছুই আর প্রিয় হয়ে ওঠে না। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া শৈশবের মধুর স্মৃতি শেয়ার করার জন্য।

ভাইয়া আপনার পোস্ট পড়ে সত্যি অনেক ভালো লেগেছে। শৈশবের স্মৃতি গুলো মনে পড়ে গেল। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারে মুভি দেখার জন্য লোকের ভিরে ঘরে ঢুকতে পারছিলেন না সেটা একটা আনন্দের বিষয় ছিল। আপনি যে স্কুল ফাঁকি দিয়ে চাচার বাসায় মিনার কার্টুন দেখতে গিয়ে স্যারের হাতে ধরা খেয়েছেন ব্যাপার টা দারুণ মজার তাই না ভাইয়া। পৃথিবী যতই আধুনিক হোক না কেন শৈশবের সেই স্মৃতি গুলো আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।সত্যিই শৈশবের স্মৃতি আনন্দময় ছিল। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

ভাইয়া লেখাটি পড়ে ছোট বেলার স্মৃতি গুলো কথা মনে পড়ে গেল। আগে যখন দুই টা চ্যানেল দেখতাম এখন অনেক চ্যানেল থাকার পরও ভালো লাগে না দেখতে। আগে শুক্রবার হলে বিকেলে সিনেমা দেখার জন্য পাশের বাসায় চলে যেতাম।এই জন্য কতো বকা খেয়েছি মায়ের হাতে সেটার হিসাব নেই। সবচেয়ে বেশি ভালো লাগতো আলিফ লায়লা দেখতে। এইটা দেখার জন্য বেশি আগ্রহ ছিলাম।যদি কারেন্ট না থাকতো তা হলে পাশের এলাকায় চলে যেতাম আলিফ লায়লা দেখার জন্য। এই সব দিনগুলো যে কেন হারিয়ে গেল। আগের দিন গুলো বেশি মধুর ছিল। সেই সমস্ত দিনের স্মৃতি গুলো বলে শেষ করা যাবে না। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে সুন্দর এবং ছোট বেলার স্মৃতি গুলো কথা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য।

সত্যি ভাইয়া আপনার গল্পটা পড়ে মনে হচ্ছিল যেন আমিও সে ছোটবেলায় হারিয়ে গিয়েছি। যদিও আমরা এতটা টিভির অভাব দেখিনি। তবুও আমাদের গ্রামেও এখনো হাতে গোনা কয়েকটি টিভি রয়েছে। তাও ডিশ এখনো আনা হয়নি আমাদের গ্রাম। কিন্তু ওয়াইফাই আর মোবাইল সবার হাতে হাতে। টিভি ঢোকার আগে আমাদের গ্রামে মোবাইল বেশি ঢুকে গিয়েছে 😁। আমিও কিন্তু আলিফ লায়লা, মিনা কার্টুন দেখেছিলাম ।বেশ আগ্রহী ছিলাম এগুলোর জন্য। বিটিভি তে প্রতি সপ্তাহে শুক্রবারে একটা ছবি দিত। যাই হোক খুবই ভালো লাগলো আপনার সেই ছোটবেলার সাদা কালো, রঙিন টিভি র স্মৃতির মুহূর্ত পড়ে।

আসলে শৈশব স্মৃতি মানে মনের ভেতরের এক ভিন্ন রকমের অনুভূতি যা যতবার মনে পড়ে ততবারই যেন মনটা আনন্দে ভরে যায়। আপনার শৈশবের স্মৃতি -টেলিভিশন এর মাধ্যমে সেই ভাবটা ফুটে উঠেছে। আসলে নব্বইয়ের দশকে বিনোদনের তেমন কোন মাধ্যম ছিল না।রেডিও এবং টেলিভিশনই ছিল মূল মাধ্যম।প্রথমে অবশ্য প্রতিমাসে টেলিভিশনে একবার ছায়াছবি দেখানো হতো। পরে সেটা আবার প্রতি সপ্তাহে।আপনার আব্বার জমানো টাকা দিয়ে টেলিভিশন কিনে আপনাদের মাঝে যে আনন্দ দিয়েছিল যা অন্য কিছু এনে দিলে হয়তোবা এতো পেতেন না।একদিকে প্রতি শুক্রবার ছায়াছবি অন্যদিকে আলিফ-লায়লার মতো বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান খুবই মজা লাগতো। যদিও ছায়াছবি শুরু আগেই আপনাদের টিভির রোমটা লোকে ভরে যেত, যায় দরুন রোমে যেতে অনেক কষ্ট ও হয়েছিল। তাতে ও কিন্তু খুবই আনন্দ পেয়েছিলেন।স্কুল ফাঁকি দিয়ে আপনার চাচার বাড়ির দেয়াল দিয়ে রাজু ও মিনা কার্টুন দেখছে গিয়ে যেই না বিপদে পরেছিলেন।সর্বশেষ স্কুল শিক্ষক কেমন শাসন করেছিল সেটা আমাদের কাছে অজানাই থেকে গেল। যাইহোক, খুবই আনন্দময় কেটেছিল সেই সময়টা যা পুরোটা পড়লেই বুঝা যায়। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া, এত সুন্দর ও চমৎকার করে আপনার সেই শৈশবের টেলিভিশন নিয়ে আনন্দময় স্মৃতিটুকু আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

বাতাবি লেবু চ্যানেল প্রথম শুনলাম তবে যখন গ্রামে আশেপাশে দু একটি টিভি থাকতো তখন শুধু বিটিভি টাই চলতো। আর আমি সকলের মুখে শুনেছি যখন একজন ঘরে থাকতো সবাই ঝড়ো হয়ে টিভি দেখতে সেখানে। তবে আমার মনে আছে সিডি দিয়ে আমরা আলিফ লায়লা দেখতাম। তারা যখন মিনা রাজু কার্টুন আলিফ লায়লা দেখতেন তখন কত সাল হবে ভাইয়া?

আমার বয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যে এক্সট্রা প্রায়োরিটি পেতাম বাইরে গেলে। হিহিহিহি

মজা পেলাম বেশ 😂

আহ্ রে ভাই, কি জন্য যে পুরনো ক্ষত গুলি জাগিয়ে দিলেন বুঝলাম না। সেই সময় টিভি দেখতে গিয়ে মা'য়ের হাতের পিটুনি খাই না এমন কোন সপ্তাহ ছিলো না। আমাদের এলাকায় কারেন্ট ছিলো না, সুতরাং টিভি দেখতে হলে নদী পার হয়ে ওপারে যেতে হতো। আর শুক্রবার ছিল আমাদের হাটের দিন। কিযে একটা মুসিবতে পড়তাম তখন বলে বোঝানো যাবে না।
মিনা কার্টুন, আলিফ লায়লা ছিল টিভি বিনোদনের অন্যতম একটা বিষয়। ধন্যবাদ ভাই এমন একটা পুরনো স্মৃতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

ভাইয়া ওই সময় হাতেগোনা কয়েকটি টিভি ছিল বলে টিভি দেখার প্রতি মানুষের খুবই আকর্ষণ ছিল কিন্তু এখন আর সেরকম আকর্ষণ নেই। ওই সময় ন্যাশনাল নামের টিভিটি খুবই জনপ্রিয় ছিল। ভাইয়া আমরাও দেখেছি যে প্রতি বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার টিভিতে সিনেমা দেখার জন্য প্রায় একটি পাড়ার সমস্ত লোকজনই একটি বাড়িতে গিয়ে ভিড় জমাতো। আর আলিফ লায়লা কেমন একটা দেখা হতো না, কেননা ওই সময় খুবই লোডশেডিং হতো। আর মিনা কার্টুন ওই সময়ের জন্য খুবই জনপ্রিয় একটি প্রোগ্রাম ছিল। সত্যি ভাইয়া ছোটবেলার ওই সময়টুকু আমরা দারুণভাবে মিস করি।

আপনার পোস্টটি পড়ে কত স্মৃতি মনে পড়ছে!৮০র দশকে সাদা কালো টিভি দিয়ে শুরু।প্রথম যেদিন টিভি আসে আমাদের বাড়িতে সেদিন ঈদের আনন্দ বিরাজ করেছিল।সে স্মৃতি সামনে ভাসছে এখন।টারজান,ম্যাগগাইভার,নতুন কুড়ি ,ছায়াছন্দ কত অনুষ্টান!
পোস্টটি করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

ভাইয়া আপনি দুর্দান্ত একটি পোষ্ট শেয়ার করেছেন ৷সময়ের তালে আজ সেই পুরনো দিন গুলো কোথায় হারিয়ে গেলো ৷
যাই হোক নব্বইয়ের দশকে যখন গ্রামের মধ্যে কারো টিভি ছিল না ৷ছিল হাতে গোনা দু একটি তাও আবার ধনী ব্যক্তিদের ৷
আমার খুব ভালো ভাবে মনে পড়ছে যে আমিও ছোট বেলায় আমাদের গ্রামে একটি বাড়িতে টিভি ছিল ৷আর আমরা স্কুল থেকে এসেই টিভি দেখতে যাই ৷যদিও দেখতে দেয না ৷তখন ঘরের ছিদ্র থেকে দেখি ৷আবার মাঝে মধ্যে কান পেতে শুনে থাকি ৷
টিভি দেখতে দিত তবে কিছু শর্তে তাদের বাড়ির দু-একটি কাজ করতে হয়েছিল ৷
সত্যি আজ শুধু চোখের কোনে ভেসে আসছে সেই দিন গুলো৷
আর এখন প্রতি ঘরে টিভি তাও আবার ডিস লাইন অনেক চ্যানেল ৷
ভালো লাগলো ভাই আপনার পোষ্টটি পড়ে ৷আপনার বাবা মাটির ব্যাংকে টাকা জমিয়ে টিভি নিয়েছিল ৷
আসলে তখন টিভি না থাকায় যাদের বাড়িতে টিভি তাদরে বাড়িতে ভিষন ভির করতো ৷বিশেষ করে যে দিন করে মুভি অর্থাৎ ছবি হয় সেদিন ৷

প্রতি বৃহস্পতিবার আর শুক্রবার এ বাংলা সিনেমা হতো, আর আলিফ লায়লার কথা সেটি যেন একটা অন্যরকম রহস্যময় ঘেরা ছিল। সত্যি আলিফ লায়লা দেখার জন্য আমরা অনেক দূরে চলে যেতাম। আর আপনাদের গ্রামে আপনাদের ২১" কালার টিভি প্রথম ছিল। তাও রঙিন টিভি সত্যিই ভাই অসাধারণ। গ্রামের মানুষ আপনাদের বাড়িতে অনেক ভিড় করেছে। টিভির একটা রুমে ছিল বিশেষ করে আলিফ লায়লা দেখার জন্য অনেকেই ভিড় জমাতো। আমাদের বাড়ির বাইরে আলিফ লায়লার জন্য টিভি সেট করা হতো কত। মানুষের ভিড় আর ভিড় দিন গুলো খুব মনে পরছে।

এইযে স্কুলে না গিয়ে টিভি দেখার বিষয়টা বোধহয় সে কালে সবাই ই করেছে কখনো না কখনো!সবার মুখেই এই গল্প শুনেছি!বড় হয়েই সবাই শুধু সাধু সাজে দেখছি।😂
এসব আনন্দ কেমন হয় তা কখনোই টের পাইনি।

ওরে ভাই কি দিনের কথা মনে করায় দিলেন 😅। সেই সাদা কালো দিন,, তাতেই দুনিয়া রঙ্গিন😊। আলিফ লায়লার কথা শুনেই মনে পরলো সেই জিনে গুলফার্ম এর কথা 🤪। আর মনে আছে, শুক্রবার করে দুপুর তিন টায় যখন খুলতো চ্যানেল তার আগে পর্দা নামিয়ে সময়ের কাউন ডাউন হতো,, সেটাও হা করে দেখতাম আর সেকেন্ড গুনতাম 😅। ঐ সময়ের সব চাইতে দারুন মুহূর্ত লাগে আমার কাছে যে টিভি একটু ঝির ঝির করলেই বাঁশের ঐ অ্যান্টেনা ধরে পাকাপাকি 😅।

এন্টেনা ভালই জ্বালাতন করতো।

সেই সাদা কালো দিন,, তাতেই দুনিয়া রঙ্গিন😊।

এ লাইনটা ভাল্লাগছে ।

আমার বয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যে এক্সট্রা প্রায়োরিটি পেতাম বাইরে গেলে।

এটা হলে ঐ বয়সে নিজেকে বেশ অন‍্যরকম লাগত হি হি। আমার জীবনেও এইরকম কিছু স্মৃতি আছে তবে এতটা না। দারুণ লাগল ভাই আপনার অনূভুতি গুলো। তবে সেই টিভি টা এখনো সুস্থ আছে জেনে ভালো লাগল একটা ইতিহাস ঐটা।

ভাইয়া মনে করে দিলেন আগের দিনের কথা গুলো ,সত্যি আপনার পোস্ট পড়তে পড়তে আগের দিন গুলো সব চোখের সামনে ভেসে উঠছিলো ,এই আলিফ লায়লা দেখার জন্যে যা করতাম যদি ও আমি তখন তেমন একটা বুঝতাম না তাই বেশি একটা মনে নেই কাহিনী তবে আলিফ লায়লা শুরুতেযে গানটা দিতো ওটা স্পষ্ট মনে আছে ,আর আমাদের তখন ও রংগিন টিভি ছিলোনা , তখন এক ধরণের গ্লাস ছিল যেখানে অনেক কালার ছিল ওটা লাগানো থাকতো সবসময় টিভিতে। আর মিনা রাজু বাংলা সিনেমা ,,সব মিলিয়ে অনেক মজার ছিল দিন গুলো।

ভাইয়া আপনার পোস্ট পড়ে নিজের ছোটবেলায় ফিরে গেছিলাম কিছুক্ষণের জন্য, আগের দিনে টিভি দেখার কি যে মজা ছিল সেটা এখনকার বাচ্চাদের বোঝানো সম্ভব হবেনা। আমাদের বাড়িতে সাদাকালো টিভি ছিল ১২ ভোল্টের ব্যাটারি দিয়ে চালানো হতো প্রতি শুক্রবার করে সিনেমা দেখার জন্য লোকে লোকারন্য হয়ে যেতো আমাদের বাড়িতে কত যে মজার ছিল সেই দৃশ্য। আপনা৷ আব্বু আম্মু ব্যাংক ভেঙ্গে টাকা দিয়ে টিভি কিনেছে এই বিষয় টি অনেক ভালো লেগেছে, আমিও আমার বাসায় প্রথম টিভি কিনি অনেক কষ্ট করে জমানো টাকা দিয়ে তাই আজও আমি স্মৃতি হিসেবে টিভি টি রেখে দিয়েছি।কষ্টের জমানো টাকা দিয়ে কোনকিছু কেনা জিনিসের প্রতি খুব মায়া হয়। সুন্দর কিছু স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই ভাইয়া।

বিটিভি চ্যানেলকে বাতাবিলেবু চ্যানেল বলে দারুণ নাম তো।তাছাড়া আপনার ক্লাস ওয়ানে পড়ার সময় কেনা টিভি এখনো চলছে জেনে অবাক হলাম।আলিফ লায়লা গুলি খুবই সুন্দর ছিল, আপনার বাবা লক্ষ্মীঘটে টাকা জমিয়ে সেইসময় ২১ ইঞ্চি কালার টেলিভিশন কিনেছিলেন এটি সত্যিই অনেক আনন্দের।ধন্যবাদ দাদা।

ভাইয়া বৃহস্প্রতিবারের ছবিতে এড কম দিতো,দেখে মজা পেতাম। আর শুক্রবারের ছবিতে ১০ মিনিট দেখিয়ে ৩০/৩৫ টা এড দিতো তখন খুব কষ্ট লাগতো। আর আলিফ লাইলা ভাইয়া সাড়ে সাতটার সময় দিতো। আর আটটার সময় খবর শুরু হতো। আর মিনার মিটুর কার্টুন দিনের বেলা দিতো। আমি তো কোন কিছু বাদ দিতাম না ...হা হা হা.. কি সুন্দর ছিল দিন গুলো । ধন্যবাদ ভাইয়া।

জীবনের ফেলে আসা দিনগুলো আসলেই গোল্ডেন ফ্রেমে বাঁধানো। বাড়িতে যখন প্রথম টিভি আসে তখন আনন্দের সীমা থাকেনা। সেটা যদি আবার হয় মহল্লার দু একটা টিভির মধ্যে একটি। আমার জীবনে ছোটবেলায় মাত্র এক বছর গ্রামে ছিলাম। পাড়ায় শুধুমাত্র আমাদের বাড়িতে টিভি ছিল। সন্ধ্যার পর এলাকার লোকজনের যন্ত্রণায় ঠিকমতো পড়তে বসতে পারতাম না। বিশেষ করে আলিফ লায়লা দেখার দিন। মিনা কার্টুন আমারও অনেক প্রিয় ছিল। কিন্তু চাচার বাড়িতে মিনা কার্টুন দেখার সময় স্যার দেখে ফেলল। তারপর স্যার কি খবর করলো সেটা তো অজানাই থেকে গেল।