হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন।আজ আমি আপনাদের মাঝে কালী পূজায় ঘোরাঘুরি ও ফটোগ্রাফি এর শেষ পর্বটি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
বাজারে বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ার পর আরও কিছু সময় সেখানে ঘুরাঘুরি করে আমরা রওনা করলাম মধ্যমগ্রামে উদ্দেশ্যে। সেখানে কিন্তু অনেক বড় করে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। সব জায়গায় ক্লাবভিত্তিক পূজার আয়োজন করা হয়ে থাকে। আগেই বলেছি যে এখানে প্রত্যেক বছর কিন্তু পুরস্কারের আয়োজন করা হয়ে থাকে। তাই প্রতিবছরের মতন এবারও পুরস্কারের আয়োজন করা হয়েছে সরকার থেকে। প্রথম স্থান জায়গাটি যে অর্জন করেছে সেটি হল মধ্যমগ্রামের এই পূজাটি। তার মানে এখানে এত সুন্দর প্রতিমা এবং প্যান্ডেলের আয়োজন করা হয়েছে আর লাইটিং সবকিছু মিলিয়ে এই পূজাটিকে প্রথম স্থানে জায়গা দেওয়া হয়েছে। আমি আগের পর্বে যেসব জায়গার পূজা আপনাদের দেখিয়েছি তারমানে আপনারা বুঝতেই পারছেন সব থেকে আলাদা হবে এই পূজাটি। যাইহোক রাস্তায় প্রচুর জ্যাম ছিল যার কারণে আমাদের পৌঁছাতে অনেক সময় লেগে গিয়েছিল। যাই হোক তারপরেও অনেক কষ্ট করে আমরা এলাম। কিন্তু এখানে আরেকটি প্রবলেম হয়ে গেল কারণ আমরা আস্তে আস্তে গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু টেনশনের কোন কারণ নেই কারণ কিছু সময় পরপর গেট খোলা হচ্ছে। কারণ ভিতরে অনেক জ্যাম হয়ে যাওয়ার কারণে অনেক সমস্যা হতে পারে তার জন্য কিছুক্ষণ পরপর গেট খোলা হচ্ছে আবার বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে যাতে ভেতরের পরিবেশটা সঠিক থাকে। যাইহোক এই ব্যাপারটা খুবই ভালো কারণ ভিড়ের ভেতর কোন কিছু ভালোভাবে দেখা যায় না।
প্রায় ২০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পর আমরা ভিতরে প্রবেশ করলাম ভেতরে ঢুকতেই চোখগুলো বড় বড় হয়ে গেল। কারণ এখানের প্যান্ডেলটি একদমই অন্যরকম ছিল। সম্পূর্ণ প্যান্ডেলটি গোল্ডেন কালারের ছিল আর লাইটিং এর জন্য বিভিন্ন ধরনের রং কিন্তু পরিবর্তন হচ্ছিল যেটি আরো আকর্ষণ করছিল। ভেতরে অনেক জায়গা ছিল যার কারণে মানুষের গরম টা একটু কম লাগছিল। বাইরে কিন্তু শীত শীত লাগছিল কিন্তু ভিতরে ঢোকার পর প্রচন্ড গরম লাগছিল কারণ মানুষের শরীরের একটা তাপ যার কারণে ভিতরে একটু গরম লাগছিল। এই প্যান্ডেলটি অনেকটি শ্রীকৃষ্ণের বাল্যকালের কিছু বৈচিত্র এখানে তুলে ধরা হয়েছে। যেমন শ্রীকৃষ্ণ সখীদের সঙ্গে এবং রাধার সঙ্গে যে নীলা করেছিল সেই নীলাটি এখানে তুলে ধরা হয়েছে। কৃষ্ণ কালীয় নাগকে দমন করে তার মাথার উপর নৃত্য করেছিল সেই রূপ কিন্তু এখানে তুলে ধরা হয়েছে যেটি খুবই অসাধারণ ছিল দেখতে। আর ওইখানে মিশরের কিছু বৈচিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ভেতরের পরিবেশটা আরো অনেক সুন্দর ছিল যেমন বিভিন্ন ধরনের সুতা দিয়ে অনেক নকশা তৈরি করা হয়েছিল। এখানে যে মায়ের প্রতিমা করা হয়েছিল সেটি দেখতে অসাধারণ লাগছিল।
ক্যামেরা পরিচিতি:oppo
ক্যামেরা মডেল:oppo A53s 5G
ক্যামেরা দৈর্ঘ্য:3.37mm
তারিখ:১৩.১১.২০২৩
সময়:০৪.৩০মিনিট
স্থান: কলকাতা
যাইহোক অনেকটা সময় ঘোরাঘুরি করলাম। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে প্রায় ভোর পাঁচটা বেজে গিয়েছে। দাদা তো বলেছিল আরো অনেকটা সময় ধরে ঘুরবে কিন্তু আমি দাদাকে বললাম আমি আর পারছিনা। কারণ অনেকটা সময় ধরে হাঁটাহাঁটি করেছি সারারাত ধরে পূজা আমি খুব কমই দেখেছি। যেহেতু অভ্যাস ছিল না তার জন্য আমার অনেকটাই কষ্ট হয়ে যাচ্ছিল পা ও কিছুতেই সামনের দিকে আঘাত ছিল না। এখানে কিন্তু বাজার ছিল আমরা সবাই বাজারে গেলাম। এখানে যে প্রথমে বন্দুক দিয়ে বেলুন ফাটালাম যেটি অনেক মজার। তারপর নির্দিষ্ট জায়গায় দাঁড়িয়ে বল নিক্ষেপ করে ছোট ছোট গ্লাস থেকে সাজানো সেগুলো সব গুলো ফেলে দিতে পারলে পুরস্কার আছে। আমরা কিন্তু সেগুলো সবাই মিলে ট্রাই করলাম। দুঃখের বিষয় হলো সবাই কিছু না কিছু পেল কিন্তু আমি কিছুই পারলাম না😞😞😞।
যাই হোক সেখান থেকে কিছু খাওয়া দাওয়া করে আমরা বাড়ির দিকে রওনা করলাম। আমার প্রচন্ড ঘুম আসছিল মনে হচ্ছিল বাড়িতে যে ঘুমিয়ে পড়বো সারাদিনে আর উঠবো না। রাতে পূজা দেখার আনন্দটাই অন্যরকম। কারণ আগেই বলেছি দিনে অনেকেরই কাজ থাকে আর দিনে পূজা দেখলে লাইটিং দেখা যায় না প্যান্ডেলের সৌন্দর্যটা কিন্তু বোঝা যায় না। আর সন্ধ্যার পরে দেখলে লাইটিং এবং প্যান্ডেলের সৌন্দর্যটা কিন্তু বোঝা যায়। সবকিছু মিলিয়ে সারা রাত ঘুরে যেসব প্যান্ডেলগুলো আমি দেখেছি সেইসব প্যান্ডেল গুলোর থেকে মধ্যমগ্রামের এই প্যান্ডেলটি আমার কাছে সব থেকে সেরা লেগেছে এবং আরো একটি প্যান্ডেল আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে সেটি ছিল বয়েজ স্কুলের ওই প্যান্ডেলটি। বাইরে ও সৌন্দর্য ফুটে তোলা হয়েছিল তেমন ভিতরের সৌন্দর্যটা ও কিন্তু একইভাবে ফুটে তোলা হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে এ বছরের কালী পূজা দেখে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আর সারারাত ধরে পূজা দেখার অভিজ্ঞতা ও অর্জন করা হয়েছ।