ক্রিয়েটিভ রাইটিংঃ- মানসিক প্রশান্তি!!!

in hive-129948 •  7 months ago 

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ পরিবার,

প্রিয় পরিবারের সকল ভাই ও বোনেরা আসসালামু আলাইকুম। আশা করি বন্ধুরা সবার দিনকাল ভালো যাচ্ছে পরিবারের সবাইকে নিয়ে। পরিবেশটা বেশ ভালো আছে ওয়েদার টা বেশ সুন্দর যাচ্ছে। যেহেতু বেশি গরম নেই হালকা পাতলা মাঝে মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে। এই ধরনের পরিবেশ থাকলে বেশি ভালো লাগে। সেই সুন্দর পরিবেশে চেষ্টা করতেছি কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার। আজকে আমি উপস্থিত হয়েছি নতুন একটি টপিকস নিয়ে। প্রতি সপ্তাহে একটি করে জেনারেল রাইটিং শেয়ার করার চেষ্টা করি। বেশ ভালো লাগে এই ধরনের ক্রিয়েটিভ রাইটিং গুলো সবার সাথে শেয়ার করতে।

Untitled design.jpg

Image Source

আজকে আমি যে বিষয় নিয়ে লেখা শেয়ার করবো অবশ্যই আপনারা শিরোনাম দেখেই বুঝতে পারছেন। এই পৃথিবীতে সবচেয়ে দামি জিনিস হচ্ছে মানসিক প্রশান্তি। আমরা যে যাই করি না কেন আমাদের যত টাকা থাকুক না কেন আমরা যতই রূপে গুণে ভরপুর হই না কেন দিন শেষে যখন আমাদের মানসিক প্রশান্তি থাকে না তখন আমরা সুস্থ থাকি না। আমাদের শরীরের যেরকম হবে হোক যদি আমরা মানসিকভাবে অস্থির হয় তাহলে কোনদিন আমরা সুস্থ থাকতে পারবো না।

কারণ এই মানসিক প্রশান্তি গুলো চোখে দেখা যায় না কারণ মানুষ নীরবে সহ্য করে থাকে। এই মানসিক প্রশান্তি গুলো টাকা দিয়ে কিনা যায় না। এমন হাজারো মানুষ আছেন যাদের ধন-সম্পদে ভরপুর টাকা-পয়সার অভাব নেই। কিন্তু মানসিক প্রশান্তি থাকে না। কারণ মানুষ এই মানসিক প্রশান্তি গুলো নিজের ব্যক্তিগত দোষের কারণ হয়ে থাকে। আবার অনেক সময় দেখা যায় যে পারিপার্শ্বিক সমস্যার কারণে মানুষ মানসিক প্রশান্তিতে ভোগে থাকেন। অনেক সময় দেখা যায় অনেক সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং অনেক পারিবারিক দায়বদ্ধতার কারণে হয়ে থাকে। যখন আমরা সেই দায়বদ্ধতা থেকে মুক্ত হতে পারি না তখন মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ি।

এছাড়াও দেখা যায় যে আমরা হয়তো আমাদের প্রিয় মানুষকে কাছে পাইনা। অথবা প্রিয় মানুষের অবহেলা পাচ্ছি এর চেয়ে জঘন্য মানসিক যন্ত্রণা আর থাকতে পারে না। শুধু যে ভালবাসার ক্ষেত্রে বিপর্যয়ের কারণে মানুষ মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়বে কিংবা মানসিক শান্তি পাবে না সেটা নয়। কারণ যখন একজন মানুষ তার পরিবারকে সুখী রাখতে পারে না সে ক্ষেত্রেও মানুষ মানসিকভাবে অশান্তিতে থাকেন। এই মানসিক প্রশান্তি গুলো আমরা তখনই খুঁজে পাবো যখন আমরা আমাদের মত করে সব কিছু জিনিস পেয়ে যাবো। কিছু ভালো মানুষ আছেন যারা সমাজের জন্য কিছু করতে চাই এবং করতে পারে না তার কারণে মানসিকভাবে শান্তি পাই না।

আবার আমাদের সমাজে কিছু খারাপ লোক আছে যারা পরিবেশকে অশান্ত করে তোলে। এই ক্ষেত্রে দেখবেন একজন খারাপ মানুষ তার পাপের কারণে তার কর্মফলের কারণে মানসিকভাবে ভোগান্তিতে থাকেন। এক্ষেত্রে অবশ্যই সমাজ কিংবা আত্মীয়-স্বজন বা পরিবার দায়ী থাকে না। এক্ষেত্রে নিজের কর্মফলের কারণে নিজেরাই দায়বদ্ধ হয়। অনেক সময় দেখা যায় মানুষ ইচ্ছে পূরণ করতে পারে না যার কারণে মানুষ মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। নিজের ইচ্ছে মত কাজ করতে না পারলে নিজের স্বপ্নগুলো পূরণ করতে না পারলে এর থেকে জীবনে ব্যর্থ আর কিছু হতে পারে না।

সবচেয়ে মানুষ মানসিকভাবে তখনই ভেঙ্গে পড়েন যখন মানুষ তার ইচ্ছে গুলো পূরণ করতে পারেনা এবং স্বপ্নগুলো পূরণ করতে পারে না। যখন মানুষ তার কাঙ্খিত লক্যে পৌঁছাতে পারে না তখন মানুষ মানসিকভাবে খুব ভেঙ্গে পড়েন। এই ধরনের মানসিক সমস্যা থেকে বিরাট ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। এই মানসিক সমস্যাগুলো থেকে মানুষ সহজে বেরিয়ে আসতে পারে না। তাই আমাদেরকে সব সময় চেষ্টা করতে হবে অতিরিক্ত স্বপ্ন না দেখা অতিরিক্ত ইচ্ছে না করা। এছাড়াও অতিরিক্ত কোন কিছুর দায়িত্ব বহন না করা। কারণ আমাদেরকে এভাবে চলতে হবে যে,আমি কি কাজ করতে পারবো কিংবা আমার দ্বারা কি কাজ করা সফল হবে। অথবা আমি কতটুকু দায়বদ্ধতা বহন করতে পারবো সেই বিষয়ে বিবেচনা করে আমাদেরকে সামনে থেকে এড়িয়ে যেতে হবে।

vecteezy_back-view-of-man-is-relaxingly-practicing-meditation-yoga_39655306.jpg

Image Source

এছাড়াও আরেকটি বিষয় আছে যে এমন কাজ না করা উচিত। যেমন একজন মানুষ প্রেমের ক্ষেত্রে বলেন কিংবা কোন কিছু নেশাগ্রস্ত হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত না হওয়া। প্রেম ভালবাসা জীবনে আসবে কিন্তু এত বেশি বাড়াবাড়ি না করা ভালো। কারণ সেখান থেকে বেরিয়ে আসা আমাদের জন্য খুবই কষ্টকর হবে শেষ মুহূর্তে যেয়ে। অনেক সময় দেখা যায় যে মানুষ অনেক খারাপ নেশায় মত্ত থাকেন। কিন্তু একজন সুস্থ মানুষ কখনো এভাবে খারাপের দিকে চলে যেতে পারে না। যদি আমরা সচেতন মানুষ হয়ে এভাবে খারাপের দিকে ধাবিত হয় তাহলে সেই দায় শুধু আমাদের নিজের উপরেই পড়ে যায়। কারণ একজন মানুষ যখন মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে তার কারণে অকালে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। একজন পরিবারের প্রধান যখন মৃত্যুবরণ করে তখন পুরো পরিবারের উপর প্রভাব পড়ে থাকে।

আমাদেরকে এমন চেষ্টা করতে হবে যখন আমরা কোন কিছুতে ব্যর্থ হয় তখন যেন আমরা অন্য কিছুকে নিয়ে ব্যস্ত থাকি। কারণ যখন আমরা কোন কিছুতেই আঘাত পেয়ে থাকি তখন আমরা যদি ঘর বন্দি হয়ে কিংবা একাকীত্ব জীবন যাপন করি তাহলে এই মানসিক সমস্যাটা আমাদের দিন দিন বাড়তে থাকবে। তাই এই মানসিক সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য মানসিক প্রশান্তির জন্য আমাদেরকে একটু ব্যস্ত জীবন যাপন করতে হবে। যার কারণে হবে কি যখন আমরা বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়বো তখন আমরা সেই মানসিক অশান্তি থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো। আমরা সবাই যদি সেই বিষয় বিবেচনা করে চলাফেরা করি তাহলে আমরা মানসিক শান্তি খুঁজে পাবো।

হয়তো জীবনে কোন একটা বিষয়ে ব্যর্থ হয়েছি কিন্তু তাই বলে যে আমাকে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়তে হবে এমন কোন কথা নেই। আমাকে চেষ্টা করতে হবে অন্য কোন পদ্ধতি অন্য কোন বিষয় নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার। ধরুন আমি পড়ালেখা করেছি কিন্তু শেষ পর্যায়ে যেয়ে চাকরি পাচ্ছি না। চাকরি পাচ্ছি না বলে আমাকে একদম ভেঙ্গে পড়তে হবে এমন কথা আমার যুক্তিতে নেই। বিকল্প পদ্ধতি আমাদেরকে বের করতে হবে আমরা কিভাবে ব্যস্ত হয়ে যেতে পারি অথবা কিভাবে ইনকাম করতে পারি। তাই আমাদেরকে কৌশল অবলম্বন করে চলাফেরা করতে হবে। তাহলে আমরা মানসিক প্রশান্তি খুঁজে পাবো।

কারণ এই পৃথিবীতে শান্তিতে থাকার জন্য মানসিক প্রশান্তি হচ্ছে সবচেয়ে বড় শক্তি। যখন আমরা মানসিকভাবে শান্তি পাবো তখন আমরা সামনের দিকে অগ্রসর হতে পারবো। আমরা শারীরিকভাবে সুস্থ থাকবো আমাদের পরিবার সুস্থ থাকবে জীবন সুন্দর হবে। মানসিক প্রশান্তি আমাদের ভবিষ্যৎ জীবন সুন্দর হবে। তাই আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে আমাদেরকে খুঁজে নিতে হবে কোন বিষয়ে কিভাবে থাকলে আমরা মানসিকভাবে প্রশান্তি খুঁজে পাবো। তার মানে এই নয় যে আমরা খারাপ একটি অভ্যাসে জড়িয়ে যাব। এই ধরনের খারাপ অভ্যাসে জড়িয়ে থেকে মানসিক প্রশান্তি নেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই আমি মনে করি। তার চেয়ে মানসিক অশান্তিতে ভুগে দুনিয়ায় থেকে চির বিদায় নেওয়ার সবচেয়ে বেটার।

কারণ সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। এই বিষয়টা যদি আমরা বুঝে থাকি তাহলে খুব ক্লিয়ার যে মানসিক প্রশান্তির জায়গা আমাদের নিজেদেরকে খুঁজে নিতে হবে। যেখানে আমরা শান্তি পাবো আমরা শারীরিকভাবে সুস্থ থাকবো আমাদের পরিবার সুস্থ থাকবে সবকিছু মিলিয়ে যেন জীবনটাকে অসাধারণভাবে উপভোগ করতে পারবো আমরা। মানসিক প্রশান্তি টাকা দিয়ে কেনা যায় না। তা নিজের থেকে তৈরি করে নিতে হয়। আশা করি বন্ধুরা আমার আজকের লেখা বিষয়গুলো আপনারা বুঝতে পারছেন। সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার লেখাগুলো পড়ার জন্য।

268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png

লেখার উৎসনিজের অনুভূতি থেকে
ইমেজ সোর্সভিক্টিজি ডক কম
অবস্থানকক্সবাজার, বাংলাদেশ
ক্যাটাগরিক্রিয়েটিভ রাইটিং


সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।

268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png

🥀আল্লাহ হাফেজ সবাইকে🥀


আমার পরিচয়
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে অনেক ভালবাসি। রান্না করতে আমি অনেক পছন্দ করি। তাছাড়া সময় পেলে ভ্রমণ করি আর প্রকৃতিকে অনুভব করি। ফটোগ্রাফি করতে আমার ভীষণ ভাল লাগে। আমি মাঝে মাঝে মনের আবেগ দিয়ে কবিতা লেখার চেষ্টা করি। আমার প্রিয় শখের মধ্যে তো গান গাওয়া অন্যতম। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের/ভালবাসার কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।

D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7DiLvzq9baKkST8T1mkhiizFXSFVv2PXDydTeMWpnYK2gToiY733FT9uwSdBSXWz7RnGmzsa8Pr9pGoyYaQFsuS3p.png

24QmLBi2hi5sxeF4rfhXesN4Z3rEWTikWPFADtR6zyMx1Ehur2Z3EsVgTD2AcTmkokXePYxgzpSqwnBNBj3ZteFgQGBvoV1Gau6PdZ2iRjGoCbkshRWuRQSfGSpuzhGGAeLA4Vf5U1Hc8iJwwxD89QHRxVn1je1P4CmpDJ3i8T6K3VVLivshpofZcmEc1F66yhadmSAKB5S67TB9CT5ts8F67pFjTnJQ9RnA2Qqq1Qc1.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

মানুষের জীবনে ব্যর্থতা আসবে সাফল্য আসবে এটাই স্বাভাবিক। তবে কোন ব্যার্থতা নিয়ে যে ভেঙে পড়তে হবে এটা বোকামি ছাড়া কিছুই নয়। তবে সাময়িক কষ্ট মনের মধ্যে আসবে এটা স্বাভাবিক। সেই সময়টা আমাদের অবশ্যই ধৈর্য ধারণ করতে হবে। কারণ কথায় আছে না বিপদ সব সময় থাকে না। তেমনি মন খারাপের সময়টা কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী নয়।

একদম ঠিক বলছেন জীবন থাকলে ব্যর্থতা থাকবে। তাই বলে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়তে হবে এটা মোটেই ভালো নয়।

পৃথিবীতে শান্তিতে থাকার জন্য মানসিক প্রশান্তি হচ্ছে সবচেয়ে বড় শক্তি।

উপরের কথা একদমই ঠিক বলেছেন আপু। প্রতি সপ্তাহে একটি করে জেনারেল রাইটিং লেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেনে খুশি হলাম। জেনারেল রাইটিং গুলো লেখার মধ্যে অন্য রকম ভালো লাগা কাজ করে। আপনাদের ওখানে বেশ ভালো আবহাওয়া। আমাদের এখানে প্রচুর গরম। জি আপু বেশি স্বপ্ন দেখলে স্বপ্ন পুরন না হলে অনেকেই ভেঙে পরে। তবে এটা সবচেয়ে বড় বোকামি। পরিকল্পনা করে আস্তে আস্তে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাওয়া এবং সময় মতো সফল হতে হবে। শারীরিক অসুস্থতার চেয়ে মানসিক প্রশান্তি দরকার বলে আমি মনে করি। মন ভালো থাকলে শরীর যতই অসুস্থ হোক না কেন সেটা আস্তে আস্তে ভালো হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। আপনার লেখা পড়ে ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে।

আমাদেরকে আমাদের আর্থিক অবস্থা বুঝে চাহিদাটা নির্ধারণ করা উচিত। আমাদের আর্থিক অবস্থা বুঝে আমাদের স্বপ্নটা দেখা উচিত। তাহলে আমরা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবো না। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।

প্রিয় মানুষের অবহেলা পাচ্ছি এর চেয়ে জঘন্য মানসিক যন্ত্রণা আর থাকতে পারে না।

এটার থেকে বাজে অনূভুতি বাজে মানসিক ব‍্যাপার হয়তো আর নেই। ঠিকই বলেছেন আপু ঐসব নিয়ে বেশি সিরিয়াস না হওয়াই ভালো। পরবর্তীতে সেটা খুবই খারাপ একটা প্রভাব ফেলে। দিনশেষে মানসিক প্রশান্তির চেয়ে বড় কিছু আর নেই। বেশ চমৎকার লিখেছেন আপনি।

একদম ঠিক ভাইয়া প্রেমের ক্ষেত্রে যত বেশি সিরিয়াস হবেন তত বেশি মানসিকভাবে কষ্ট পাবেন। তাই এসব সম্পর্কের ব্যাপারে সিরিয়াস না হওয়া উচিত।