SBD recovery case #1 : beneficiary rme [round 39]

in hive-129948 •  9 months ago 

This post is made for recovering lost SBD : 1470

Recovered so far : 1346.928 SBD


গল্প (রক্ত তৃষা) - পর্ব ৩৭


vampire-2115396_1280.jpg
Copyright Free Image Source : PixaBay


কমলাদেবীর দুই হাত পিছমোড়া করে বাঁধা, দুই পায়ের গোছও এক করে দড়ি দিয়ে শক্ত করে বেঁধে রাখা, বিন্দুমাত্র নড়বার ক্ষমতা নেই তাঁর । মুখে কাপড় দিয়ে শক্ত করে বাঁধা । কী ঘটতে যাচ্ছে তা বেশ বুঝতে পারছেন কমলাদেবী, কিন্তু তাঁর যে কিছুই করার ক্ষমতা নেই । শুধু বিস্ফারিত দুই চোখ মেলে তাকিয়ে থাকা ছাড়া ।

এতক্ষণে দ্বিতীয় যমদূতটি খাঁড়া হাতে এসে পড়লো । বলি দেওয়ার খাঁড়াটি যেমন দীর্ঘ তেমনই ভারী । একটু আগে তাতে শান দিয়ে ধার তোলা হয়েছে । মশালের আলো পড়ে খড়গের ধারালো প্রান্ত মাঝে মধ্যে ঝিলিক মারছে । সেই শানিত খড়গের ভয়াল রূপ প্রত্যক্ষ করে শিউরে উঠলেন কমলাদেবী । তাঁর ভবিষ্যৎ পরিণতির কথা ভেবে ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললেন ।

কাপালিক খাঁড়া হাতে দাঁড়ানো যমদূতটার কপালে সিঁদুর পরিয়ে দিলো কাঁপা হাতে । তারপরে রক্ত জবার মালাটিও গলায় পরালো । সব শেষে খাঁড়াটির গায়ে সিঁদুর দিয়ে একটা চোখ এঁকে দিলো । তারপরে খাঁড়ার মাথার যাকে সিঁদুরের টিপ পরিয়ে অনুচ্চস্বরে সংস্কৃত মন্ত্র আওড়ালো কিছুক্ষণ । বলি দেওয়ার আগে খাঁড়ার পুজো করতে হয়, সেটিই করলো এতক্ষন ধরে কাপালিক । ব্যাস, বলির জন্য খাঁড়া এখন প্রস্তুত ।

যমদূতটি খাঁড়া কাঁধে করে হাঁড়িকাঠের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো । আর প্রথম যমদূতটা এসে পুনর্বার কমলাদেবীর চুলের গোছা ধরে টেনে হিঁচড়ে তাঁকে হাঁড়িকাঠে চড়ালো । যমদূতটা যখন কমলাদেবীর মাথাটা ধরে হাঁড়িকাঠের অপর পাশে ঝুলিয়ে দিয়ে ঘাড়ের ওপর খিলটা শক্ত করে এঁটে দিলো তখন কমলাদেবীর চোখ ফেটে জল এলো । তিনি ততক্ষণে বুঝে ফেলেছেন তাঁর অবধারিত পরিণতি কী । হায়রে নিষ্ঠুর নিয়তি !

হাঁড়িকাঠে গলা দিয়ে পড়ে রয়েছেন কমলাদেবী । মৃত্যু এখন অতি নিকটে তাঁর । পেটে অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে । কমলাদেবীর মনে মৃত্যুভয় সঞ্চার হয়েছে । হাত পা দ্রুত ঠান্ডা হয়ে আসছে তাঁর । গর্ভের শিশুটির জন্য অসহনীয় কষ্টে হৃদয় টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে তাঁর । প্রথমবার মা হতে যাচ্ছিলেন তিনি । কত স্বপ্ন, কত আশা ছিল তাঁর শিশুটিকে ঘিরে । অথচ তাঁর মৃত্যুর সাথে সাথে তাঁর বাচ্চাটিরও মৃত্যু অবধারিত আজ । তিনি হয়তো কোনো মহা পাপ করেছিলেন, তার শাস্তি পাচ্ছেন আজ, কিন্তু তাঁর শিশুটি তো কোনো পাপ করেনি, নিষ্কলুষ অপাপবিদ্ধা সে । তবে, বিধাতা তাকে কেনো এতো নিষ্ঠুর শাস্তি দিচ্ছেন ? জন্মের আগেই মৃত্যুই কি তার একমাত্র পাওনা ছিল ?

অবরুদ্ধ কান্নার বাষ্পে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসছে কমলাদেবীর । মানুষকে বিশ্বাস করার ফল যে এতটা মারাত্মক হতে পারে আজ জীবন দিয়ে তা উপলব্ধি করতে যাচ্ছেন কমলাদেবী । চন্ড, বিশ্বাসঘাতক ! জ্বলন্ত চক্ষে চন্ডের দিকে চাইলেন কমলাদেবী । দাঁতে দাঁত ঘষে একটা অভিশাপবাণী উচ্চারণ করলেন কমলাদেবী । কিন্তু, মুখে কাপড় বাঁধা থাকাতে শুধু মাত্র একটা অস্পষ্ট গোঙানির মতো শোনালো সেটাকে ।

আরো একবার বিদ্যুৎ চমকালো । সহসা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে উঠলো মন্দির প্রাঙ্গন । সেই উজ্জ্বল আলোয় কমলাদেবী দেখলেন কাপালিকের বাঁ হাতের মুঠিতে একটা ট্যাঁক ঘড়ি । ঘড়ি !!! কাপালিকের হাতে ঘড়ি ? এ যে অসম্ভব ব্যাপার ! ধুম করে কমলাদেবীর মনে পড়ে গেলো - মন্দিরে যখন প্রথম পা দিয়েছিলে তখন দূর থেকে তিনি কাপালিককে পুজোতে বসে থাকতে দেখেছিলেন । তখন কাপালিকের ডান উরুর উপরে রাখা এই ঘড়িটিই দেখতে পেয়েছিলেন তিনি। আর ঘড়িটি দেখে তাঁর তখন বড্ড বেমানান মনে হয়েছিল । একজন সর্বত্যাগী, শ্মশানচারী কাপালিকের কাছে ঘড়ি যে একদমই বেমানান । তাই তখন তাঁর মনে খটকা লেগেছিলো । কিন্তু, পরমুহূর্তে ভুলে গিয়েছিলেন খটকা লাগার কারণটি । খুব সম্ভবতঃ কাপালিক যখন এক পলকের জন্য ঘুরে বসে কমলাদেবীর দিকে তাকিয়েছিল তখন তার উরু থেকে ঘড়িটি নিচে মাটিতে পড়ে যায়, তাই আর সেটাকে দেখতে পাননি পরে তিনি ।

[চলবে]

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আজকেও পরিণতিটা লিখলেন না দাদা,আর কতো পাঠক পাঠিকাদের অপেক্ষা করাবেন।এরপর তো আপনার উপর ক্ষেপে যাবে, হাহাহা।
দারুণ আগাচ্ছে দাদা গল্পটি।

কমলাদেবীর বাচ্চাটার জন্য খারাপ লাগছে। তাছাড়া কমলাদেবী শেষ মুহূর্ত হলেই চন্ড যে বিশ্বাসঘাতক বুঝতে পেরেছে দেখে ভালো লাগলো। অদৃশ্য মূর্তিটি এখনো পৌঁছাতে পারলো না। আরেকটু জোরে দৌড় দেয়ান দাদা। যেন পৌঁছে যেতে পারে।

কমলাদেবীর জন্য আসলেই খুব খারাপ লাগছে দাদা। কমলাদেবীর সাথে সাথে গর্ভে থাকা শিশুটাও ভীষণ কষ্ট পাচ্ছে। কমলাদেবী শেষ পর্যন্ত বাঁচতে পারবে নাকি না,সেটা জানার আগ্রহ বেড়ে গিয়েছে দাদা। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

যতই পড়ছি ততই যেন মনে হচ্ছে, এই বুঝি কি যেন হয় আবার হুট করে এসে গল্প শেষ হয়ে যাচ্ছে, তবে আগ্রহ বাড়ছে বারবার। অপেক্ষায় থাকলাম পরের পর্বের জন্য ভাই।

So cute, I'm going to conquer her