হ্যালো,
আমার বাংলা ব্লগ বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা করছি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের আশীর্বাদ ও সৃষ্টিকর্তার কৃপায়।
আমি @shapladatta বাংলাদেশ থেকে। আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাই নিয়মিত ইউজার। আমি গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সঙ্গে যুক্ত আছি।
ইমেজ সোর্স
আজ আমি আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো একটি সত্যি ঘটনা নিয়ে গল্প।
বেশ কিছু দিন থেকে মনে পড়ে গেছে আমাদের বাড়ির পারমানেন্ট কাজের লোকের সাথে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনার কথা।
তো চলুন ঘটনাটি কি ছিলো।
আমার বাড়ি গ্রামে ও গ্রামেই বেড়ে ওঠা তাই গ্রামীন অনেক ভালো মন্দ জেনে এসেছি।
গ্রামের মানুষের অনেক চাষবাসের জমিজমা থাকে সেরকম আমাদের ও আছে। চাষবাসের জমিজমা, গরু দেখাশুনার জন্য আলাদা আলাদা লোক ছিলো।কেউবা গরুকে মাঠে চরাতেন কেউবা কৃষিকাজের কৃষকদের দেখাশুনা করতেন, কেউবা জমি চাষ করতেন গরু দিয়ে,কেউবা জমিতে সেচ দিতেন আর এসব গুলোই দূরদূরান্ত থেকে কাজের জন্য আসতেন এবং পারমানেন্ট থাকতেন আমাদের বাড়িতে।সবাই মাসিক বেতন ভুক্ত ছিলেন ও থাকা খাওয়া ফ্রী ছিলো।আগে তো এখনকার মতো এতো কলকারখানা ছিলো না তাই অভাবে মানুষের বাড়িতে কাজ করতেন।
আমার দিদু আমাদের ডাক শিখিয়েছেন তাদেরকে ডাকতে বলতেন কাউকে ছোট কাকা,কাউকে দাদা,কাকা এসব নামে তাই আমরাও তাদেরকে এভাবেই ডাকতাম। আমিও আমার ভাই পিঠাপিঠি হওয়ার কারণে মাকে পাইনি বেশি আমি আর আমাকে ছোটকাকাই দেখাশুনা করতেন ও বড়ো করে তুলেছেন মায়ের আদর যত্ন দিয়ে।
মেয়ে কাজের মানুষ পাওয়া যেতো না আমাদের এলাকায় তাই মা,পিসি ও দিদুকেই বাড়ির কাজ সামলাতে হতো।এতো গুলো কাজের লোকের টাইম মতো খাওয়া বাড়ির সবার টাইম মতো খাবার সব আমার মা রান্না করতেন নিজ হাতে।
আসল কথায় আসি গ্রামের অনেক কুটনৈতিক নেতা থাকে তাদের কাজ কুটনামো করা।আমাদের বাড়ির কাজের লোক গুলো এতোটাই ভালো ছিলো যে আমাদের বাড়িকে নিজের বাড়ি ভেবে নিয়ে কাজ করতো। আমাদের বাড়ির কোন ক্ষতি তারা করতেন না।
আমাদের যদি কোন ফসল কারো গরু কিংবা ছাগল খেয়ে নষ্ট করতো তখনি সেগুলোকে তারিয়ে দিতো এবং তাদের কে শাসন করতো।এই জিনিস গুলো কারো কারো সহ্য হতো না।একদিন আমাদের আলুতে এক ব্যাক্তির গরু লেগেছিল এবং আলুর গাছপালা খেয়ে নষ্ট করে দিয়েছিলো আর সেজন্য ছোটকাকা সেই গরুওলাকে শাসিয়েছে এবং তখন দুজনার কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ের মারামারিতে রুপ নিয়েছে।
গরুওয়ালা ব্যাক্তির কথা তুই কাজ করিস তোর তো নিজের নয় তাহলে তোর কেন এতো মাথা ব্যাথা। তুই কেন এতো খেয়াল রাখবি তাদের সব বিষয়ে। তোর তো ক্ষতি হচ্ছে না।জমিতে একবার ছোট কাকাকে মেরেছে ওই ব্যাক্তি এবং বলেছে তুই চাকর চাকরের মতো থাকবি।
এই কথাটি কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি ছোট কাকা।ওনার কথা যে বাড়িতে কাজ করি তারা কোনদিন চাকর বল্লো না আর তোর এতোবড়ো সাহস চাকর বলিস।তাদের বেতন নেই আমি আমার দায়িত্ব তাদের সব কিছু দেখাশুনা করা। এই নিয়ে তুমুল মারামারি। সে মারামারি এক পর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে শুরু হয়ে গেছে। পারলে একে অন্যকে খুন করবে।এই ঝামেলা বেশকিছু দিন চলার পর সালিসির মাধ্যমে সমাধান হয়।
এখন কথা হলো আসলেই তো বেতনভুক্ত কাজের লোকের কিংবা দিনমজুরের কাজ মালিকের জানমাল রক্ষা করা।তা নিজ দায়িত্বে হোক বা মালিকের হুকুমে হোক।একজন কাজের লোককে তো কখনোই প্রশ্ন করা ঠিক নয় যে কেন সে এতো দায়িত্ব নিয়ে মালিকের কাজ করে।বিবেক বুদ্ধিহীন সমাজের ভাইরাস এই ধরনের লোকেরাই শুধু এমন কথা বলে। একজন কাজের লোককে আঙ্গুল তোলার অধিকার নেই কারো।সে তার দায়িত্ব থেকে দায়িত্ব পালন করবেই তাই বলে তাকে অপমান, তাকে মেরে রক্তাক্ত করবে।একজন কাজের লোকের উচিত মালিকের সব কাজ নিজ দায়িত্বে পালন করা ও মালিকের হুকুম মানা একজন কাজের লোকের কর্তব্য।
এই ধরনের লোক কখনোই উন্নতি করতে পারে না।না পারে নিজের উন্নতি করতে না পারে দেশের ও দশের ভালো দেখতে। এরকম হাজারো সমাজের কলঙ্কিত ব্যাক্তির জন্য অনেকে তার নিষ্ঠাবান দায়িত্ব থেকে দূরে সরে আসে। কখনো ভয়ে কখনো লজ্জায়।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি আবারও দেখা হবে অন্যকোন পোস্টের মাধ্যমে সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।
টাটা
পোস্ট | বিবরণ |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @shapladatta |
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
ডিভাইস | OppoA95 |
লোকেশন | বাংলাদেশ |
আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।
বেশ সুন্দর একটি বিষয়ের অবতারণা করলেন। তবে হেডিং এ শ্রমিক শ্রেমিক হয়ে গেছে। আর একটা কথা বলতে পারি। আপনার পোস্ট পড়লে একটা নির্মল গ্রাম্য ছবি পাই। অসাধারণ লাগে। আসলে রোজকার এই কলকাতা শহরের দিনে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠি আমরা। তারমধ্যে এই ছাগল, গরু চড়ে বেড়ানোর দৃশ্য, গাছপালা, পুকুরঘাট এসব বড় মন ভালো করে দেয়। অসাধারণ। আর যে যার দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করা বড় প্রয়োজন। ঠিকই বলেছেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা ভুল ধরিয়ে দেয়ার জন্য। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মালিকের কাজে সর্বদা যারা ব্যস্ত থাকে তারা জীবনে বেশিদূর এগিয়ে যেতে পারে না। কারণ মালিক যখন যে ভাবে তাকে হুকুম করে তখন তাকে সেভাবেই শুনতে হয়। আর সব সময় এই সমস্ত ব্যক্তিগুলো কথা শুনে ছোট হয়, যেমন তাকে চাকর বলে সম্বোধন করা হয়েছে। একটু কথা বলাতেই তাকে কথা শুনতে হয়েছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যে কোন সরকারি বেসরকারি অফিসে চাকুরী করলেও মালিকের কথাই শুনতে হয়। আপনি একটি শ্রমিক নেবেন এবং তাকে দিয়ে আপনি ধানও কাটতে পারেন বাঁশও কাটতে পারেন। চাকর বলে দুষ্ট লোকেরা। সে যার বেতন খাবেন তার কাজে ব্যাস্ত না থেকে কি বসে থাকবে।ধন্যবাদ পোস্ট টি খুব ভালো করে পড়ে মন্তব্য করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদম ঠিক বলেছেন আপু একজন কাজের লোককে কখনো এভাবে বলা উচিত নয়। সে তো তার দায়িত্ব পালন করছিলো নিষ্ঠার সাথে। আপনার গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। এমন লোক তো এখন খুঁজে পাওয়া অনেক কষ্টের। আর আসলে সমাজে এমন কিছু লোক থাকে যাদের কাজই হচ্ছে ঝামেলা লাগানো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বর্তমানে এইরকম কাজের লোক পাওয়া সত্যি দুস্কর।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit