মেরাজ যাত্রা পর্বঃ ১

in hive-129948 •  2 years ago 

আসসালামুআলাইকুম,

আশাকরি সকলেই ভাল আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আজ পবিত্র শবে মেরাজ, ইংল্যান্ডে ছিল গতকাল। প্রতিটি মুসলিমই শবে মেরাজ সম্পর্কে বেশ ভালোভাবেই জানে এবং আমরা সকলেই চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করি আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এই দিনে সপ্তাকাশে ভ্রমণ করে আল্লাহর দিদার লাভ করেছিলেন। আল্লাহর সাথে সরাসরি কথোপকথন হয়েছিল। এটি ছিল এক বিস্ময়কর যাত্রা। আমার এই আলোচনাকে দুটি পর্বে ভাগ করেছি, আজকে তার প্রথম পর্ব। পরবর্তীতে শেষ পর্ব নিয়ে হাজির হব। নিম্নে শবে মেরাজ সম্পর্কে আমার এই ক্ষুদ্র জ্ঞান হতে আপনাদের সাথে কিছু আলোচনা করব।

80CAF9BE-BB97-4DF7-80FC-503148DCD77E.jpeg

copy right free image

শবে মেরাজ সম্পর্কে পবিত্র কোরআন শরীফেও রয়েছে। সত্যি এটি ছিল এক বিস্ময়কর যাত্রা। যখন নবীজি তাঁর প্রথম স্ত্রী মা খাদিজা এবং চাচা আবু তালিবকে হারিয়েছিলেন তখন খুবই ভেঙ্গে পড়েছিলেন। তাই আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় হাবিবকে (সাঃ) খুশি করার জন্য জিবরাঈল আলাইহিস সালামকে পাঠিয়েছিলেন সশরীরে নবীজিকে তাঁর আরশে নিয়ে আসতে। মানব ইতিহাসে, এমনকি আল্লাহর সমস্ত সৃষ্টি কুলের কারো পক্ষে সম্ভব হয়নি সরাসরি আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করা।

গভীর রাত, নবীজি ঘুমাচ্ছিলেন এমন সময় জিব্রাইল (আঃ) হাজির হয়ে যান নবীজিকে নিয়ে যেতে। এরপর জিব্রাইল (আঃ)তাঁকে কাবা শরীফের কাছে নিয়ে যান। এরপর নবীজির সিনা চাক করা হয় অর্থাৎ বুক চিরে হৃদপিণ্ড বের করে পবিত্র পানি দ্বারা ধৌত করা। এই ঘটনা নবীজির সাথে ছোটবেলায়ও একবার ঘটেছিল। ওলামাদের মতে তাঁর সিনা চাক করার উদ্দেশ্য হচ্ছে তাঁর মনকে শক্ত করে গড়ে তোলা কারণ তিনি এমন সব আশ্চর্য জিনিস দেখতে যাচ্ছেন এতে করে তিনি তার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলতে পারেন। এ কারণেই সিনা চাক করা হয়।এরপর ভ্রমণের জন্য জিবরাইল (আঃ) বোরাক নিয়ে আসেন। বোরাক হচ্ছে একটি প্রাণী যা ঘোড়া থেকে ছোট এবং গাধা থেকে একটু বড়। এরপর বোরাক নবীজিকে নিয়ে চলতে শুরু করলো। নবীজি বলেছিলেন বোরাক কতটুকু চলতে পারে, খালি চোখে যতটুক এলাকা দেখা যায় প্রতিটি ধাপে বোরাক ওই এলাকা পার হয়ে যায়। তাহলে চিন্তা করা যায় তার গতি কত দ্রুত ছিল। নবীজি বোরাকে করে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত প্রথমে ভ্রমণ করেন। এরপর বোরাকে করে যাত্রার দ্বিতীয় ভ্রমণ হয় সপ্তাকাশে। যাত্রা শুরুতে জিব্রাইল আলাইহিস সালাম নবীজিকে দুটি পাত্র দেন একটি পাত্রে থাকে দুধ, আরেকটি পাত্রে থাকে মদ, নবীজিকে বেছে নিতে বলা হয়। তিনি দুধের পাত্রই বেছে নেন। তখনও মদকে হারাম করা হয়নি।তখন জিব্রাইল (আঃ) বললেন আপনি যেমন, ঠিক সিলেক্টও করেছেন তেমন। এরপর সেখান থেকে প্রথম আকাশ থেকে শুরু করে একে একে হযরত আদম (আঃ) থেকে শুরু করে বেশ কয়েকজন নবীর সাথে সাক্ষাৎ করে সপ্তম আকাশ পার হয়ে সিদরাতুল মুনতাহায় পৌঁছে যান।

আজকে তাহলে এইটুকুই, আগামী পর্বে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎসহ জান্নাত, জাহান্নাম পরিদর্শন সহ আরো অনেক কিছু নিয়ে হাজির হব।

1927F0BC-A81B-459C-A2F6-B603E4B2106C.png


👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :

👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :

VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

সুবহান আল্লাহ্। শুকরিয়া যে আমরা এমন একজন নবীর উম্মত হতে পেরেছি। মেরাজের কথা বা ঘটনা অনেক শুনেছি। তবে আজ যে ঘটনা পড়লাম এমন করে মেরাজের ঘটনা পড়া হয়ে উঠেনি। যাই হোক আপনার পোস্টের মাধ্যমে আমাদের পেয়ারা নবী হুজুরে পাক (সাঃ) এর মেরাজ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানার অপেক্ষায় রইলাম।

আপু শবে মেরাজ সম্পর্কে খুব সুন্দর তথ্য আপনি আপনার ব্লগে তুলে ধরেছেন, পড়ে ভাল লাগলো। শবে মেরাজ সম্পর্কে সবাই সবটা জানলেও আপনার পোস্টের মাধ্যমে আবার জানতে পাবে।কারন জানার তো আর শেষ নেই।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ব্লগটি শেয়ার করার জন্য।

ইসলামের এই কাহিনী গুলো পড়তে অনেক ভালো লাগে,একদম মন ঠান্ডা হয়ে যায়।এই পর্বে বিশ্ব নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সপ্তম আকাশ ভ্রমণ করেছিলেন সেটা তুলে ধরেছেন। সত্যি বলতে ইসলামের এই কাহিনী পড়ার প্রতি আলাদা একটা আগ্রহ থাকে।পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।

দেখতে দেখতে শবে মেরাজ চলে এসেছে।আমি মাঝে মাঝে ভাবি আমরা কত ভাগ্যবান আমরা এই নবীর উম্মত হতে পেরেছি।বুক চিরে হৃদপিণ্ড বের করে জমজমের পানি দ্বারা ধৌত করা হয়েছে কত দামি নবী ছিলেন। আল্লাহর তায়ালার ধিধার লাভ করেছেন,কত ভাগ্যবান নবী ছিলেন যে আল্লাহ তায়ালা সালামকে পাঠিয়েছিলেন।কত কষ্ট করে গিয়েছেন তার নিজের উম্মতের জন্য।আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে হেদায়ত দান করুক,এবং পরিপূর্ন ইবাদত করতে সাহায্য করুক।আপু ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে।ধন্যবাদ

নিজেকে অনেক ধন্য এবং সফল উম্মত মনে হয় কেননা আমরা এই নবীর উম্মত হিসেবে পৃথিবীতে আসতে পেরেছি। শবে মেরাজ সম্পর্কে সূরা বানি ইসরাইলের প্রথম আয়াতেই অনেক সুন্দর ভাবে আল্লাহ ঘোষণা করে দিয়েছেন।।। শবে মেরাজ নিয়ে আপনি অনেক সুন্দর আলোচনা করেছেন খুবই ভালো লাগলো।।

  ·  2 years ago (edited)

গতকালকে মেরাজ শরীফের প্রোগ্রামে চট্টগ্রাম গিয়েছিলাম। আসলে মেরাজ শরীফ আমাদের ঈমানী হৃদয়ের হৃদস্পন্দন।
আল্লাহতাআলার প্রকাশের ঈদ-
আল্লাহরাসূলের সাক্ষাতের ঈদ-
আল্লাহতাআলার নৈকট্যের ঈদ-
শানে রেসালাত বুঝার ঈদ-
মেরাজ শরীফের মহান ঈদ।
💝💝💝💝💝
সত্যের চূড়ান্ত প্রকাশ,জীবনের পরম দিশা ও ঈমানী হৃদয়ের অনন্ত উৎসব,সকল সৃষ্টির জন্য অসীম রহমতময়, অসীম আলোকময়, অসীম প্রেমময়, মহাগৌরবময় ঈমানী ঈদ - মহান ঈদে মেরাজুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লামের অশেষ অসীম মোবারকবাদ আপনাকে।

আগামী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।

সত্যি আপু ইসলামের ইতিহাসের শবে মেরাজ একটি বিশাল ঘটনা। যখন আল্লাহর ইচ্ছায় নবী করীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম কে জিব্রাইল (আ:) এসে বলে হে আল্লাহর বন্ধু আল্লাহ আপনাকে মেরাজে যাওয়ার জন্য বলেছেন। তখন জিব্রাল আসলাম বরাক নামে একটি এই মেরাজে যায়।আসলে ওই দিনের ওই মেরাজ ছিল আল্লাহ তাআলার এক বিশেষ মর্যাদা। নবী সাল্লাল্লাহু সালাম ওজু করে,তিনি এই মেরাজের সাত আসমান পার হয়ে এসে দেখেন এখনো ওযুর পানি গড়ে যাচ্ছে। আল্লাহ সুবহানাতায়ালা আমাদের নবীকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করেছেন।আমিন

আমরা অনেক ভাগ্যবান আমরা হযরত (সঃ)এর উম্মত। আর শবে মিরাজ সম্পর্কে আপনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছেন। আসলে এসকল কথা আমরা যতই শুনি ততোই আমাদের ঈমানের কথা স্মরণ হয়। আল্লাহ প্রতি
টি মানুষকে তৌফিক দান করুন নবীজীর দেখানো পথে চলার আর তার ইবাদত পালন করার।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ শবে মিরাজ নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।