ওয়েব সিরিজ রিভিউ: রুদ্রবীনার অভিশাপ- মদন্তীর বংশধর ( সিজন ১- ষষ্ঠ পর্ব )

in hive-129948 •  2 years ago 
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে রুদ্রবিনার অভিশাপ ওয়েব সিরিজটির ষষ্ঠ পর্ব রিভিউ দেব। আজকের ষষ্ঠ পর্বের নাম হলো "মদন্তীর বংশধর"। আগের পর্বে লাস্ট দেখেছিলাম যে শ্রুতি কিছু বাচ্চা হাঁসের পিছনে দৌড়াদৌড়ি করছিলো ধরার জন্য আর নাদ লোকটি তাকে মারার জন্য লুকিয়ে বন্দুক নিয়ে তাক করে ছিল। আজকের এই পর্বে ঘটনাটা কি হয় দেখা যাক দেখি।


স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব


✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠

সিরিজটির নাম
রুদ্রবিনার অভিশাপ
প্লাটফর্ম
hoichoi
সিজন
পর্ব
মদন্তীর বংশধর
পরিচালকের নাম
জয়দীপ মুখার্জি
অভিনয়
বিক্রম চ্যাটার্জি, রূপসা চ্যাটার্জি, সৌরভ দাস, দিতিপ্রিয়া রায়, উষশী রায় ইত্যাদি
মুক্তির তারিখ
২৪ ডিসেম্বর ২০২১( ইন্ডিয়া )
সময়
২১ মিনিট ( ষষ্ঠ পর্ব )
ভাষা
বাংলা
কান্ট্রি অফ অরিজিন
ইন্ডিয়া


☫মূল কাহিনী:☫


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

এখানে দেখা যায় শ্রুতি যখন হাঁসের বাচ্চাগুলোর পিছনে দৌড়াতে দৌড়াতে অনেকদূর অর্থাৎ নাদ লোকটির হাতের কাছাকাছি চলে যায় তখন নাদ ট্রিগার প্রায় চাপতে যাচ্ছিলো ঠিক তখনি গৌরাঙ্গ নামক লোক এসে তাকে বাধা দেয়। বিক্রমও কেনাকাটা করে শ্রুতিকেই খুঁজতে ওইদিকেই যাচ্ছিলো ফলে দেখে ফেলতো বিষয়টা আর তারাই সমস্যায় পড়তো এইভাবে গৌরাঙ্গ লোকটি নাদ লোকটিকে বাধা দেয়। আর রুদ্রভৈরব তাকে যে নির্দেশ দিয়েছিলো সেইটা পালন করতে বলে অর্থাৎ শ্রুতি আর তার মাকে শুধু ভয় দেখাতে বলেছে, মারতে নয়। আর এদের না মেরে বাকিদের খুঁজে শেষ করতে বলে। এরপর শ্রুতি আর বিক্রম দোকান থেকে রেশন নিয়ে সেই গুরুর বাড়িতে যায় দিতে আর চাকতিটা খুঁজে নিয়ে আসে। তারা সেগুলো নিয়ে আসার পরে বাড়ি এসে সেই তানসিনের তানপুরার বাক্সে লাগিয়ে দেয় এবং খাপে খাপ সব লেগে যাচ্ছে। আর বিক্রম দিতিপ্রিয়ার বাবা আর মাকে চাকতিটা দেওয়ার কথা বলেছিলো কিন্তু চাকতিটা শুধুই দিতিপ্রিয়ার বাবা পেয়েছিলো, তার মাকে দেওয়া হয়নি বলে জানায়। তাদের বাড়ির বাহাদুর লোকটিকে এই বিষয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করে বা জানতে চায় কিন্তু বাহাদুর লোকটি কিছুই বলে না তাদের। বারবার একই কথা জিজ্ঞাসা করছে কিন্তু সব কথা এভোইড করে যাচ্ছে।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

তানসিনের তানপুরার বক্সের পিছনে যা যা লেখা ছিল সেগুলোর প্রত্যেকটা লাইনের মানে বোঝা খুবই প্রয়োজন আছে এই রাগ সঞ্জীবনী খুঁজতে গেলে। বাহাদুর লোকটা অনেক কিছু জানে এই বিষয়ে কারণ আমানত খানের খুবই কাছের লোক ছিলেন তিনি। এরপরে অনেক উত্তেজিত করে দেওয়ার পরে ভীষণ রেগে যায় বিক্রমের উপরে। পরে বাহাদুর লোকটা কিছু বিষয়ে তাকে জানায় মদন্তীর বিষয়ে। তখন আমানত খান মদন্তীকে জানতো রুদ্রপুরে থাকাকালীন। রুদ্রপুরে তখন মহারাজ রুদ্রভৈরব এর সময়ে মহিলাদের গান গাওয়া বারণ ছিল কিন্তু মদন্তি আমানত খানকে গান শোনাতো লুকিয়ে লুকিয়ে আর মদন্তীর গান তার কাছে ভীষণ ভালো লাগতো। এরপর একদিন রুদ্রভৈরব মদন্তিকে দেখে ফেলে আর তার এই কাজের জন্য সমগ্র রুদ্রপুরে অভিশাপ লাগবে তাই তাকে মেরে ফেলতে চায়, এমনকি তার ৬ বছরের বাচ্চাকেও মেরে ফেলতে চায়। তবে বাহাদুরের দাদামশাই একদিন রাতে মদন্তীর কাছ থেকে সেই ৬ বছরের বাচ্চাকে নিয়ে পালিয়ে আসে। এরপর ৫০ বছর পার হয়ে যায় কিন্তু রুদ্রপুরের লোকজন কিভাবে যেন খোঁজ পেয়ে যায় সেই মদন্তীর ছেলের কথা। এরপর তাকেও একদিন রাতে মেরে ফেলে।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

বাহাদুর লোকটি শুধু তাদের ঐটুকু জানায় কিন্তু তিনি আরো অনেক কিছু জানতেন ওই তানসিনের তানপুরার লেখাগুলোর সম্পর্কে। বিক্রম একটু অসন্তুষ্ট হয় যদিও কারণ পুরো কথাগুলো ক্লিয়ার হলে তার জানতে এবং বুঝতে সুবিধা হয়। আর তাছাড়া অনেক ঝামেলা অনেক বিপদ বাড়ির লোকজনদের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে, তাই আরো কোনো বড়ো বিপদ যাতে না হয় সে ক্ষেত্রে জানলে তার জন্যই ভালো হতো। যাইহোক এরপর তারা দুইজন সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে লাগলে তাদেরকে একটা বাদ্যযন্ত্র দেয় যেন সেটা দিতিপ্রিয়াকে দেয় আর ওটা বাহাদুর নিজেই বানিয়েছিলো। সামনে মিউজিক্যাল কনফারেন্স তাই সেখানে দিতিপ্রিয়া অংশগ্রহণ করবে আর তাই সে যেন ওটা বাজায়। এই মিউজিক্যাল কনফারেন্স এর জজ আবার তাদেরই বাড়িরই মেম্বার অর্থাৎ শ্রুতির বাবা এবং মা। তারা বাড়ির সবাই মিউজিক্যাল কনফারেন্স এ যাওয়ার জন্য বাড়ির থেকে গাড়িতে করে রওনা হয় এবং রাস্তা দিয়ে আসতে আসতে একজনের গান শুনে দাঁড়িয়ে যায়,সেই গান যেন তাদের হৃদয় ছুঁয়ে যেতে লাগে,এতটাই ভালো লাগে। আর এই গান গাইছিলো নাদ নামক লোকটা। তার গানের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে সবাই গাড়ির থেকে নেমে তার কাছাকাছি গিয়ে শুনতে থাকে।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

বেশ খানিক্ষন ধরে নাদ লোকটির গান তারা শোনে এবং শেষে তার গানের প্রশংসা করে শ্রুতির মা। নাদ লোকটি এসে খুব ভদ্রতা দেখায় তাদের সামনে, এমন করছিলো যেন কিছুই জানে না সে। শ্রুতির বাবা আর মাকে গুরু হিসেবে প্রণাম করলো আর তাদের গুরুকুলে আশ্রয় চাইলো। শ্রুতির মা অনেক লোকদের এবং বাচ্চাদের গানের তালিম দেয়, সবাই খুব ভালোভাবে গান শিখে নিজেদের প্রতিষ্ঠিতও করেছে। তাই নাদকে একজন ভালো শিল্পী হিসেবে তার শিষ্য করে নেয় আর পরেরদিন সকালে তাদের বাড়িতে আসতে বলে। এরপর তারা সবাই সেখান থেকে মিউজিক্যাল কনফারেন্স এর অনুষ্ঠানে চলে যায়। এরপর পরেরদিন সকালে নাদ লোকটি তাদের বাড়িতে চলে যায় আর শ্রুতি তাকে উপরে নিয়ে গিয়ে একটা রুম দিয়ে দেয় থাকার জন্য।


☫ব্যক্তিগত মতামত:☫

এই পর্বে আসলে তেমন একটা কিছু দেখা যায়নি। এখানে শুধু মদন্তীর বংশধরের বিষয়ে কিছু আলোচ্য বিষয় সামনে এসেছে। যেটা বাহাদুর লোকটি শ্রুতি আর বিক্রমকে জানায়। এখানে রুদ্রপুরের বাসিন্দারাও অতীতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আর বর্তমানে লোকমুখে শুনে শুনে তারাও মদন্তীর বংশধরদের পেলেই মেরে ফেলছে যেটা মদন্তীর ছেলের খুনের থেকে শুরু হয়েছে আর একইভাবে সেই চিহ্নটা তারা তাদের গর্দানে মারার পরে আঁকিয়ে দিয়ে যাচ্ছে অর্থাৎ বিনার চিহ্ন, যাতে করে সহজেই তার বংশধরদের চিনতে পারে সবাই। যেমন এখানে আনন্দপুরেও সবাইকে ছদ্দবেশে পাঠিয়েছে মদন্তীর বাকি বংশধরদের খুঁজতে। বর্তমানে যে রুদ্রভৈরব এর বেশে মন্দিরে বসে কলকাঠি নাড়ছে সে জেনেছে যে মদন্তীর বাকি বংশধররা আনন্দপুরে বসবাস করছে। আর নাদকে প্রধান গুপ্তচর হিসেবে আনন্দপুরে পাঠিয়েছে আর নাদ বর্তমানে একটা নদীর কাছে ছোট কুটিতে থাকতো সাধারণ মানুষের বেশে যাতে কেউ সন্দেহ না করে। তবে এখন একটা সুযোগ পেয়ে গেছে আনন্দপুরের হাভেলিতে প্রবেশ করার আর সবাইকে চোখে চোখে রাখতে পারবে বিশেষ করে মধুমন্তী অর্থাৎ শ্রুতির মাকে। এখন হাভেলিতেতো প্রবেশ করেছে, বাকি পরে কি করছে বোঝা যাবে।


☫ব্যক্তিগত রেটিং:☫
৮.৭/১০


☫ট্রেইলার লিঙ্ক:☫



শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আসলে এই রহস্যময় সিরিজ পড়ে ভাল লাগলো, তবে এই পর্বটা খুব একটা রহস্যময় ছিলনা, এই পর্বের বিশেষ করে লোকমুখে শুনে শুনে তারাও মদন্তীর বংশধরদের পেলেই মেরে ফেলছে, আর যেটাও মদন্তীর ছেলের খুনের থেকে শুরু হয়েছে।তারপর একইভাবে সেই চিহ্নটা তারা তাদের গর্দানে মারার পরে আঁকিয়ে দিয়েছে।আর বিনার চিহ্ন রয়েছে যাতে করে সহজেই সেই বংশধরদের চিনতে পারে।তারপর আনন্দপুরেও সবাইকে ছদ্দবেশে পাঠিয়েছে মদন্তীর বংশধরদের খুঁজতে, দেখা যাক তারা খুঁজে পাই কিনা। আগামী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম। আগামী পর্বেটা অনেক রহস্যময় হবে আশা করছি।

রুদ্রবিনার অভিশাপ ওয়েব সিরিজটির ষষ্ঠ পর্বের রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লাগলো দাদা। অনেক নতুন নতুন তথ্য সামনে চলে এলো। মদন্তীর বংশধরদেরকে খুন করার জন্য সবাই চেষ্টা করছে। মদন্তীর বংশধরদের অনেক বিপদ রয়েছে। বিনার চিহ্ন দেখে তারা সেই বংশের লোকদের সহজেই চিহ্নিত করতে পারছে।রুদ্রভৈরবের বেশে যে রয়েছে সে জানতে পেরেছে আনন্দপুরে মদন্তীর বংশধররা রয়েছে। তাই তো গুপ্তচর পাঠিয়েছে। নাদকে প্রধান গুপ্তচর করে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে সবাই শ্রুতির মাকে চোখে চোখে রাখছে। হয়তো বড় ধরনের বিপদ অপেক্ষা করছে তার জন্য। ওয়েব সিরিজের প্রতিটি পর্বই যেন নতুন নতুন রহস্য। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

গৌরাঙ্গ লোকটি সময় মত এসেছিল জন্যই শ্রুতি বেঁচে গেল। তা না হলে তো আজকে মেরে ফেলত। তাছাড়া বিক্রমও চলে এসেছিল সময় মত। যাইহোক ওই লোকগুলোকে কিছু খাবার দিয়ে চাকতিটি নিতে পেরেছে এবং তা তানপুরা খাপে খাপ বসে গিয়েছিল। বাহাদুর লোকটা অনেক কিছু জানা সত্ত্বেও বিক্রমকে তেমন একটা ইনফরমেশন দিল না। সবকিছু ভালোভাবে বললে বিক্রমের হয়তো অনেক উপকার হত। তাছাড়া শ্রুতির বাবা-মা নাদকে বাড়িতে এনে কোন বিপদে ডেকে আনলো কে জানে। আসলে আজকের পর্বে খুব একটা রহস্য আগায়নি। দেখা যাক পরবর্তী পর্বগুলোতে কি হয়। ধন্যবাদ দাদা খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার জন্য।

দাদা এই পর্বে তো নাদ তার মূল লক্ষে পৌছে গেছে। নাদ তো প্রধান গুপ্তচর হয়ে আনন্দপুরে তথা শ্রুতির মায়ের কাছে পৌছে গেছে। এখন তো নাদের তথ্য সংগ্রহ করা অনেক সহজ হয়ে যাবে। আর শ্রুতির মাকেও চোখে চোখে রাখতে পারবে। তাছাড়া মদন্তীর সব বংশধররা এই আনন্দপুরেই আছে। পরের পর্বে দেখা যাবে নাদ কি করে। শ্রুতির মায়ের ভাগ্যে কি ঘটে। ধন্যবাদ দাদা।

নাদ লোকটা অবশেষে শ্রুতিকে মারলো না, এ যাত্রায় সে রক্ষা পেয়েছে। মদন্তীর বংশের লোকগুলোকে মেরে ফেলছে ওরা 😕 কি মর্মান্তিক।
নাদ লোকটা কি মারাত্মক শেষে শ্রুতিদের বাড়িতে গিয়ে উঠলো। আবার তার বাবা মায়ের কাছে গানের তালিম নিচ্ছে। দেখা যাক সামনে কি হয়।

দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য 🥀

শ্রুতি এইবারের মত ও বেঁচে গেল।তবে গৌরাঙ্গ লোকটি নাদ লোকটির সঙ্গে যুক্ত বোঝা গেল।এই পর্বে তেমন কিছুই ইন্টারেস্টিং ছিল না।50 বছর পর ও মদন্তীর ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে এটা জেনে খারাপ লাগলো।তাদের গর্দানে মারার পরে বীনার চিহ্ন আঁকিয়ে দিয়ে যায় এটা খুবই ভয়াবহ।বিক্রম তেমন তথ্য জানতে পারলো না।দেখা যাক পরের পর্বে কী হয়!সুন্দর রিভিউ করেছেন, ধন্যবাদ দাদা।