ওয়েব সিরিজ রিভিউ: মার্ডার ইন দ্যা হিলস-ডেঞ্জারাস বব ( সিজন ১-তৃতীয় পর্ব)

in hive-129948 •  2 years ago 
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে মার্ডার ইন দ্যা হিলস ওয়েব সিরিজটির তৃতীয় পর্ব রিভিউ দেব। আজকের তৃতীয় পর্বের নাম হলো "ডেঞ্জারাস বব"। আগের পর্বে ডায়রি নিয়ে কাহিনী চলছিল। তারপর কি ঘটনা ঘটছে দেখা যাক। আজকের পর্বের নামের সাথে সাথে কিছুটা অনুভব করা যাচ্ছে যে বব এই পর্বে বিপদজনক কিছু কাহিনী ঘটাতে চলেছে, এখন দেখা যাক কি হয়।


স্ক্রীনশর্ট: ইউটিউব


☀কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:☀

সিরিজটির নাম
মার্ডার ইন দ্যা হিলস
প্লাটফর্ম
hoichoi
সিজন
পর্ব
ডেঞ্জারাস বব
পরিচালকের নাম
অঞ্জন দত্ত
অভিনয়
অর্জুন চক্রবর্তী, অনিন্দিতা বোস, সৌরভ চক্রবর্তী, রাজদীপ গুপ্তা, সন্দীপ্তা সেন, রজত গাঙ্গুলি ইত্যাদি
মুক্তির তারিখ
২৩ জুলাই ২০২১ ( ইন্ডিয়া )
সময়
২৫ মিনিট ( তৃতীয় পর্ব )
ভাষা
বাংলা
কান্ট্রি অফ অরিজিন
ইন্ডিয়া


☬মূল কাহিনী:☬


স্ক্রীনশর্ট: hoichoi

কাহিনীর শুরুতে দেখা যায় যে শৈবাল আর তার বোনকে এক দল গুন্ডা রাস্তায় ফেলে লাঠি দিয়ে পিটাচ্ছে আর যতক্ষণ না মরে ততক্ষন পিটাতে থাকে। এই ঘটনাটা অনেক আগেই ঘটে গেছে যেটা আমি আগের পর্বে বলেছিলাম আর এই ঘটনার পুনরাবৃত্তিটা বব স্বপ্নের মধ্যে দেখে এবং এইটা ভেবে দুঃখ প্রকাশ করতে লাগে। শৈবাল আর তার বোন ববের বাবা আর পিসি ছিল ফলে তার এইটা ভেবে খারাপ লাগারই কথা। আর এদিকে অর্জুন সেই ডাইরিটা নিয়ে রহস্যের সন্ধানে বের হয় অর্থাৎ টনির পুরানো অফিসে যায় আর সেখানে একজনের সাথে দেখা করতে চায় কিন্তু সেখানে একজন বলে সেই লোকটা অনেকদিন হলো মারা গেছে। কিন্তু আরেকজন স্টাফ আছে কিন্তু সে মাতাল অবস্থায় থাকে তাই তার মুখের থেকে কথা বলতে গেলে ১ বোতল সাথে করে নিয়ে তারপর তার সামনে যেতে হবে। অর্জুন সেই মতে ১ বোতল নিয়ে তার কাছে যায় এবং তখন খেতে খেতে বলতে লাগে বিষয়গুলো। এই লোকটা তখন টনির বাড়িতে তার বাবা রাজা বাবুর সাথে থাকতো, ফলে তাদের কথাবার্তা সে শুনতো আর সেই হিসেবে অর্জুনকে বলতে লাগে। টনির বাবা আসলে থানার একজন ইন্সপেক্টরকে টাকা খাইয়ে বিষয়টাকে ধামা চাপা দিতে বলেছিলো। কিন্তু ইন্সপেক্টর প্রথমে রাজি হয় না কিন্তু তার দুর্বল পয়েন্টগুলো ধরে ভয় দেখাতে লাগে। কারণ টনির বাবা জানতো যে উদয় নামক এই ইন্সপেক্টরের এই মুহূর্তে টাকার প্রয়োজন ছিল আর এই দুর্বল পয়েন্টকেই সে টার্গেট করে।


স্ক্রীনশর্ট: hoichoi

ইন্সপেক্টরকে ভয় দেখানোর পরে রাজি হয়। টনির বাবা এই মার্ডার এর বিষয়টাকে সাজাতে বলে এমনভাবে যাতে সবার মনে হয় এটা তাদের নিজেদের দোষে হয়েছে অর্থাৎ তারা দুই ভাইবোন মদ খেয়ে গাড়ি চালাচ্ছিল আর সেই সময় তারা এক্সিডেন্ট করে। কিন্তু এখানে ইন্সপেক্টরের একটা ভয় কাজ করছিলো ফরেনসিক রিপোর্ট এর, কারণ ফরেনসিক রিপোর্ট অলরেডি বেরিয়ে গেছে আর সেখানে তাদের শরীরে কোনো এলকোহল পাওয়া যায়নি। তখন টনির বাবা রাজা সাহেব বলে ওই ডক্টরকেও কিনে নিতে আর রিপোর্ট বদলে দিতে। ইন্সপেক্টর এইসব শুনে টাকাগুলো নিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর দেখা যায় টনি মানে অঞ্জন দত্ত এর মৃত্যুর পর তার বাড়িতে সব এক্টররা আসে এবং তার মৃত্যুর শেষ কাজ অর্থাৎ অনুষ্ঠানসূচি যেসব বাকি থাকে সেগুলো করতে লাগে।


স্ক্রীনশর্ট: hoichoi

টনির মৃত্যুর পরে সবাই যখন তার অনুষ্ঠানসূচি আর শোক পালনে ডুবে ছিল তখন সেখানে মিডিয়ার লোকজন আসে এবং সেখানে প্রত্যেকে তার নামে ভালো ভালো কথা বলে সম্মান জানিয়ে , কিন্তু তারা প্রত্যেকে একটু হলেও তার ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে জানা সত্বেও বিষয়গুলো লুকিয়ে যায়। এরপর যে ইন্সপেক্টরকে টনির বাবা ঘুষ খাইয়েছিল তারপরে ইন্সপেক্টর ওই কাজ করার পরে নিজেই খুব ইতস্তত বোধ করে। এরপর সে নিজেই নিজেকে গুলি করে দেয় আর মারা যায়। এরপর এইসব বিষয় আর ঘটনাগুলো অর্জুন রেকর্ড করে নেয় কাগজে ছাপাবে বলে মুম্বাইতে তার বসের কাছে ফোন করে এবং এই বিষয়ে ছাপানোর জন্য অনুমতি চায়, কিন্তু অনুমতি দেয় না এই ঘটনাগুলো ছাপানোর জন্য। টনি আর টনির বাবা মিলে শুধু যে এই একটা মার্ডার করেছে তাই না, বিগত ৩০ বছরে বহু এইরকম মার্ডার কেসের সাথে জড়িত ছিল যেগুলো ওই লোকটার কাছে থেকে শুনে অর্জুন সব রেকর্ড করে রাখে। এরপর অর্জুন যে শিলার বাড়ির থেকে ডায়েরিটা নিয়ে এসেছিলো সেখানে ভুল করে তার সানগ্লাস রেখে আসে আর শিলা সেটা পরে দেখে ফেলে আর অর্জুনের বাড়িতে আসে সেটা ফেরত দিতে।


স্ক্রীনশর্ট: hoichoi

শিলা তার বাড়ির থেকে ডাইরি চুরি করে নিয়ে আসার জন্য অনেক রেগে যায় অর্জুনের উপরে এবং তাকে চোর অপবাদ দেয়। তাদের মধ্যে এই নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় আর তাদের সম্পর্কটা খারাপ হয়ে যায়। এখানে বব এর বিষয়ে কথা উঠলে শিলা বলে ওকে আগে ভালোবাসতাম এখন আর বাসি না কিন্তু ও একা যার জন্য ওকে আমি একা কোথাও ছাড়িনা যাতে কিছু না করে বসে। আর এই ডায়েরিতে লেখা সমস্ত বিষয়েও শিলা পড়েছে আর অর্জুন যখন বললো যে বব এই টনিকে খুনটা করেছে তখন শিলা বিষয়টা বিশ্বাস করতে চায় না। অর্জুন পরে বব এর বিষয়ে খোঁজখবর নিতে লাগে আর এই বিষয়টা বব এর কাছে কিভাবে যেন কেউ জানিয়ে দেয়, সম্ভবত শিলা জানায়। দার্জেলিং এর মধ্যবর্তী পাহাড়ের কাছে অর্জুন এর সাথে ববের দেখা হয় অর্থাৎ বব আগে থেকেই তার জন্য সেখানে দেরি করছিলো। অর্জুন ববের সাথে না যেতে চাইলে বব জোর করে তাকে গাড়িতে তুলে নেয় এবং কিছু পথ যাওয়ার পরে সেখানে বিজয় বলে লোকটা উল্টো দিক থেকে গাড়ি নিয়ে আসে। বব গাড়ি খারাপ হয়ে যাওয়ার নাটক করে সেখানে দাঁড়িয়ে যায়। অর্জুন বিষয়টা বুঝতে পেরে জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে দৌড়ে পালাতে লাগে এবং ববও তাকে ধরার জন্য তার পিছু পিছু দৌড়ায়।


☬ব্যক্তিগত মতামত:☬

এই কাহিনীতে আমি একটা জিনিস যেটা বুঝলাম অর্থাৎ আমার মনে হচ্ছে এই টনির মৃত্যুর পিছনে আর টনির পকেটে চিরকুটের পিছনে ববের হাত থাকার রহস্য পাওয়া যাচ্ছে। কারণ বব অনেক আগেই জানতে পেরেছিলো যে তার বাবার খুনি এই টনি, ফলে টনিকে মারার একটা বড়োসড়ো প্ল্যান করে রেখেছিলো। আর এখানে অর্জুনেরও একই বক্তব্য যে টনির মৃত্যু কোনো স্বাভাবিক হার্টএটাক এ হয়নি, এটা সম্পূর্ণ একটা সাজানো প্ল্যান ছিল। রাস্তায় যখন ববের সাথে দেখা হয়েছিল তখন ওই চিরকুটটাও সম্ভবত বব দিয়েছিলো আর জন্মদিনের পার্টিতেও হয়তো বব কোনো প্ল্যান করে এইটা করেছে। এখন ববের বিষয়ে অর্জুন খোঁজখবর নিচ্ছে বলে বব একপ্রকার তার জন্য বিপদজনক হয়ে উঠেছে। এখন ববের হাত থেকে বাঁচার জন্য দৌড়ে পালাচ্ছিল অর্জুন কিন্তু বব গাছের আড়ালে দেখে ফেলেছিলো তাকে। বাকি ঘটনাটা পরের পর্বে বোঝা যাবে যে কাহিনীটা এইবার কোনদিকে মোড় নেয়, কারণ কিছুটা হলেও এইসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সন্দেহটা ববের দিকেই যাচ্ছে।


☬ব্যক্তিগত রেটিং:☬
৮.৮


☬ট্রেইলার লিঙ্ক:☬


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

হইচই বেশ ভাল কাজ দেখাচ্ছে।প্লটফর্মটির কল্যানে বেশ ভাল ভাল কিছু কনটেন্ট দেখা যাচ্ছে।আগের দুইটি পর্ব পড়া হয়নি।তাই নাম দেখে ভেবেছিলাম বুঝি ইংরেজী সিরিজ। অনেক সুন্দরভাবে এক্সপ্লেইন করেছেন।একটি পর্ব পড়েই দেখার আগ্রহ জেগে উঠল।ধন্যবাদ দাদা সুন্দর রিভিউটির জন্য।

"ডেঞ্জারাস বব" ওয়েব সিরিসজ পর্বগুলো পড়া হয়নি। তাই কাহিনীও বুঝে উঠতে পারলাম না । তারপরেও বুঝলাম যে বিপদজনক ও ভয়ানক কাহিনী। এমন
ভয়ানক কাহিনী পড়তে বা মুভি সিরিজ যাই হোক তা দেখতে ভীষণ ভালো লাগে। আমি সময় করে অবশ্যই আগের পর্বটি পড়ে নেব ।

ওয়েব সিরিজ রিভিউ: মার্ডার ইন দ্যা হিলস-ডেঞ্জারাস বব মনে হচ্ছে খুবই একটি ইন্টারেস্টিং সিরিজ। এই ধরনের সিরিজ গুলোর কাহিনী মোটামুটি বেশ লম্বা হয়ে থাকে। কাহিনী মনে হয়ে শেষ হয়ে যাবে কিন্তু শেষ হয় না। এখানে বব আগেই জেনেছিল যে তার বাবার খুনি টনি। যদি ও তা প্রথমে প্রকাশ পায়নি। এদিকে ববের ব্যাপারে অর্জুন খোঁজখবর নিচ্ছে। যাইহোক পরের কাহিনীতে কি হয় অবশ্যই জানার জন্য আশাবাদী।

টনির মৃত্যু স্বাভাবিক নয় এটা আগেই বোঝা যাচ্ছিলো। বব সবকিছু পরিকল্পনা করে ঘটাচ্ছে। চিরকুট দেয়া থেকে শুরু করে মার্ডার সবকিছু বেশ ঠান্ডা মাথায় করেছে সে। বব যে মারাত্মক খিলাড়ি তা ধীরে ধীরে আরো বোঝা যাবে। সামনের পর্বে হয়তো অনেক কিছু পরিষ্কার হবে। ধন্যবাদ দাদা চমৎকার ওয়েভ সিরিজটি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।

দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য 🥀

পুরো কাহিনী পড়ে আমারও তো দাদা তাই মনে হচ্ছে ববের বাবা এবং পিসির মৃত্যুর বদলা নেয়ার জন্যই হয়তো এই টনি এর পকেটে চিরকুট রেখে দেয় এবং টনিকে কোন কৌশলে মেরে ফেলে। তাছাড়া অর্জুন সবকিছু জেনে ফেলেছে বুঝতে পেরেই বব হয়তো অর্জুনকেও মেরে ফেলার জন্য গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছিল। ভাগ্য ভালো অর্জুন গাড়ি থেকে পালাতে পেরেছে। কিন্তু ববতো অর্জুনকে দেখে ফেলেছে। এখন অর্জুনকে কি বব আবার ধরে ফেলবে চিন্তার বিষয়। তাছাড়া শিলাই হয়তো ববকে সকল কাহিনী জানিয়ে দিয়েছে। শিলার সঙ্গে ববের যদিও সম্পর্ক নেই কিন্তু সিমপ্যাথি রয়েছে। তার জন্যই হয়তো জানিয়ে দিয়েছে। টনি লোকের টাকার কাছে সব পুলিশ, সাংবাদিক বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। বব হয়তো পালাতে সক্ষম হবে তা না হলে তো টনির মৃত্যুর রহস্য বের হবে না। যাই হোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

ওয়েব সিরিজ কখনো দেখা হয় না। তবে আপনার শেয়ার করা ওয়েব সিরিজ রিভিউ গুলো পড়তে বেশ ভালো লাগে দাদা। অর্জুনের সন্দেহই ঠিক হল। টনির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। টনির এই মৃত্যুর পিছনে অনেক রহস্য আছে। নিজের বাবার খুনের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যই হয়তো বিভিন্ন রকমের ষড়যন্ত্র করেছিল বব এবং টনির মৃত্যু ঘটিয়েছে। হয়তো তার ষড়যন্ত্রের সফলতার ফলেই সহজে কোন প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে অর্জুন ঠিকই সবকিছু আন্দাজ করতে পেরেছিল। তবে একটি জিনিস লক্ষ্য করলাম চিরকুট দেওয়া থেকে শুরু করে খুন পর্যন্ত সবকিছুই খুনি খুবই শান্তভাবে এবং বেশ বুদ্ধি করে করেছে। খুনি অনেক দিনের পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়তো কাজগুলো করেছে। তবে খুনি যে বেশ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ সেটা বোঝাই যাচ্ছে। তার খুনের পরিকল্পনা অনেকদিন আগেই করা ছিল মনে হচ্ছে। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়। অর্জুন কোন বিপদে পড়ে কিনা তাও তো বোঝা যাচ্ছে না। হয়তো তার কোন বিপদ হতে পারে অর্জুনের। পরবর্তী পর্বে জন্য অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

দাদা এই পর্বে এসে টনির মৃত্যুর জন্য ববকে দায়ী করলে সিউর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। অর্জুন যেহেতো ববের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে ভয় না পেলে কিছু একটি তথ্য বের করতে পারবে। ববের পিছনে আবার কেউ কলকাঠি নাড়ছে কিনা সেটাও ভাবার বিষয়। এখানে যদিও কাহিনীর কিছুটা খুলাসা দেখা যাচ্ছে,তারপরও দেখা যাক কি হয়। ধন্যবাদ দাদা।