ওয়েব সিরিজ রিভিউ: রুদ্রবীনার অভিশাপ- রুদ্রপুরের নারী ( সিজন ১- পঞ্চম পর্ব )

in hive-129948 •  2 years ago 
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে রুদ্রবিনার অভিশাপ ওয়েব সিরিজটির পঞ্চম পর্ব রিভিউ দেব। আজকের পঞ্চম পর্বের নাম হলো "রুদ্রপুরের নারী"। আগের পর্বে লাস্ট দেখা গিয়েছিলো যে বিক্রম দুটি চাকতি তানসিনের তানপুরার বক্সটিতে লাগিয়েছিল এবং গোবিন্দ বলে একজন লোক সাবধান করার জন্য বাঁশির সুর ব্যবহার করেছিল। আজকে ঘটনাটা কতদূর কি হয় দেখা যাক।


স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব


✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠

সিরিজটির নাম
রুদ্রবিনার অভিশাপ
প্লাটফর্ম
hoichoi
সিজন
পর্ব
রুদ্রপুরের নারী
পরিচালকের নাম
জয়দীপ মুখার্জি
অভিনয়
বিক্রম চ্যাটার্জি, রূপসা চ্যাটার্জি, সৌরভ দাস, দিতিপ্রিয়া রায়, উষশী রায় ইত্যাদি
মুক্তির তারিখ
২৪ ডিসেম্বর ২০২১( ইন্ডিয়া )
সময়
২১ মিনিট ( পঞ্চম পর্ব )
ভাষা
বাংলা
কান্ট্রি অফ অরিজিন
ইন্ডিয়া


❂মূল কাহিনী:❂


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

এই পর্বের শুরুতে দেখা যায় যে বিক্রমদের বাড়ির একটা মেয়ে মানে দিতিপ্রিয়া বাড়ির থেকে একা একা বেরিয়ে চলে যায়। এদিকে তার বাবা মা সবাই খুঁজে খুঁজে হয়রান অবস্থায় পড়ে যায় আর তারপর তাদের বাড়ির ঘোড়ার গাড়ির ড্রাইভার করিমকেও খুঁজে পাচ্ছে না। দিতিপ্রিয়া আসলে বাড়ির থেকে একা একা কাউকে কিছু না বলে জঙ্গলের মধ্যে চলে যায় যেখানে সমাধিস্থল। সালামত খানের কবরের পাশে দিতিপ্রিয়া বাঁশি বাজাতে লাগে এবং সেখানে আবার লুকিয়ে লুকিয়ে নাদ নামক লোকটা তাকে দেখছিলো। দিতিপ্রিয়া সেখানে আসলে তার গুরু সালামত খানের সেখান রাগটা বাজাচ্ছিল। নাদ লোকটা সেখানে এসেছিলো দিতিপ্রিয়াকে মেরে ফেলার জন্য, ঠিক যেভাবে সালামত খানকে মেরেছিলো। ঠিক একইভাবে সেই অদ্ভুত বাঁশির সুরে যেভাবে হার্টএটাক করিয়ে মেরেছিলো। কিন্তু নাদ লোকটা দিতিপ্রিয়াকে দেখার পরে কেন যেন হঠাৎ থমকে গেলো এবং তাকে মারলো না। এদিকে সেখানে জঙ্গলের ভিতরে কবর স্থানে তার বাবা-মা খুঁজতে খুঁজতে চলে আসে। বাড়ির সবার জন্য এটা একটা টেনশন এর ছিল কারণ আগে দুটো দুটো ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে এইভাবে তার একা একা আসা উচিত হয়নি।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

দিতিপ্রিয়ার মা-বাবা এসে সেখান থেকে বাইরে নিয়ে আসলো কিন্তু নাদ লুকিয়ে লুকিয়ে তাদের একপ্রকার কথা শুনছিলো। এরপর সেখানে দিতিপ্রিয়ার বাহাদুর জ্যেঠু চলে আসে, কারণ সেও তাদের বাড়ির মেম্বার হওয়ায় একটা আতঙ্ক সবার মতো কাজ করে। দিতিপ্রিয়ার বাবা এবং মায়ের কাছেও চাকতি আছে যেটা শ্রুতির বাবা এবং মায়ের কাছে ছিল। তবে তাদের চাকতি কলকাতাতে রাখা আছে আর তারা কলকাতার দিকে রওনা দেয় সেই চাকতি নিয়ে আসার জন্য। বিক্রম আর শ্রুতি এখন রাগ সঞ্জীবনীর সন্ধানের দিকে এগিয়ে চলেছে আস্তে আস্তে, কারণ তার মাকে মুক্ত করার জন্য এই ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। তবে এই বিষয়টা এখনো পর্যন্ত সবার কাছেই গোপন, তার বাড়ির কোনো সদস্যই এই কথাটা জানে না যে তার মা কিডন্যাপ অবস্থায় আছে। যাইহোক এরপর দেখা যায় যে রুদ্রপুরের সেই মন্দিরে রুদ্রভৈরব একজন নারীকে গান গাইতে বলে, কিন্তু এখনো কিন্তু সেই কুসংস্কার নিয়ে সেই স্থানের লোকজন এগিয়ে চলেছে। যে ১০০ বছর আগে মহিলাদের রুদ্রবিনা স্পর্শ করার পাশাপাশি গান গাওয়াও নিষেধ ছিল আর সেই ধারাকে এখন অক্ষুন্ন রেখেছে। তবে ওই মহিলাকে শুধুমাত্র পুরুষদের সামনে বর্তমান রুদ্রভৈরব লোকের নির্দেশে গান গাইতে বলা হয়, তাছাড়া আর কোনো স্বাধীনতা দেওয়া নেই তার জন্য।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

ওই মহিলার কণ্ঠে গান শুনে বিক্রমের মায়ের অনেক ভালো লাগে কিন্তু যখন জানতে পারে সেখানে একজন গার্ডে থাকা লোকের কাছে যে শুধুমাত্র রুদ্রভৈরবের নির্দেশেই গান গাইছে তখন শুনে খারাপ লাগে কারণ এইরকম সুন্দর গলা থাকা সত্বেও বাইরে কারো সামনে গান গাইতে পারবে না, এটা কোন যুগের নিয়ম। এদিকে বিক্রমের কাছে রুদ্রভৈরব ফোন করে এবং তাকে হুমকিও দিতে লাগে যে যদি প্রয়োজনের থেকে বেশি সময় লাগাও তাহলে তোমার মায়েরও সময় ফুরিয়ে আসবে। কারণ বিক্রম রাগ সঞ্জীবনীর সূত্র পেয়ে গেছে সেটা জেনে গেছে তার ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা গুপ্তচরদের কাছ থেকে । তবে একটা চাকতি হেমন্ত নামক লোকটার কাছে আছে সেটা বিক্রম আর শ্রুতিও জানে কিন্তু এটা জানেনা যে সেই হেমন্ত লোকটি জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে। তবে ওই চাকতিটাও লাগবে সবকিছু মেলাতে গেলে। এরপর শ্রুতি কিছু মিষ্টির প্যাকেট, হাড়ি নিয়ে আসে আর সেগুলো নিয়ে গ্রামে একটা ব্রাম্মন এর বাড়িতে যায়, তবে সে ব্রাম্মন না, তাদের বন্ধু, ব্রাম্মন সেজেই বসে আছে। এদিকে নাদ টোটোই করে করে তাদের ফ্লো করেই যাচ্ছে।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

তাদের ওই বুদ্ধু নামক বন্ধুটি আসলে গ্রামের ওই একটা আশ্রম মতো জায়গায় তার গুরুর সাথে থাকতো। আর এই গুরুর কাছে তারা এসেছিলো চাকতি নিতে, কারণ সেই সময় তাদের অন্নপ্রাশনের সময় আমানত খাঁ যে একটি করে চাকতি দিয়েছিলো সেখানে এনাকেও দিয়েছিলো। কিন্তু চাকতিটি দেওয়ার কথা বললে বলে কোথায় রেখেছি মনে নেই। এরপর তাকে খুঁজতে বলে বেরিয়ে আসে গ্রামটা দেখতে। আর তাদের একটু বাজারও করে দেয় কারণ তাদের অবস্থা খুব খারাপ, ঘরে খাওয়ার মতো কোনোকিছুই ছিল না। এরপর গ্রামের সেই দোকানের পাশে ছোট ছোট কিছু হাঁসের বাচ্চা দেখতে পায় আর কিউট দেখতে বলে শ্রুতি সেগুলোকে ধরার জন্য তাদের পিছু পিছু দৌড়ায়। দৌড়াতেই থাকে কিন্তু ধরতে আর পারে না , এরপর অনেকদূর দৌড়ে চলে যায় শ্রুতি একা, আর নাদ লোকটি একটি গাছের আড়ালে লুকিয়ে বন্দুক নিয়ে শ্রুতির দিকে নিশানা লাগিয়ে রাখে। শ্রুতিকেও হত্যা করার পরিকল্পনা নিয়ে রাখা নাদ।


❂ব্যক্তিগত মতামত:❂

এই পর্বে দেখা গেলো যে প্রথম দুটি চাকতি পাওয়ার পরে রাগ সঞ্জীবনীর প্রধান সূত্রের হদিশ পেয়ে যায় এবং বিক্রম আর শ্রুতি পরে সেইসব আরো চাকতির খোঁজে লেগে পড়ে যাতে রাগ সঞ্জীবনীর পুরোপুরি উদ্ধারের চাবিকাঠি খুঁজে পায়। কিন্তু এখানে যেসব ব্যক্তিকে এই চাকতি দেওয়া হয়েছিল তাদের খুঁজে বের করাও একটা সমস্যা ছিল কিন্তু এখানে শ্রুতির বাবা সাহায্য করে, কারণ যখন চাকতিগুলো দেওয়া হয়েছিল তখন তাদের কয়েকজনকে চিনতো। তবে এখন সবার চেনা থাকলেও সবাই আর দিতে চাইবে না, যেমন গ্রামে যে ব্যক্তির কাছে চাইতে গেছে তার কাছে থাকা সত্বেও কথাটা ঘুরিয়ে বলে দিলো যে কোথায় আছে মনে নেই। তাদের বাড়ির লোকজনদের কাছ থেকে চাকতি পেয়ে যাবে কিন্তু বাইরের লোকদের কাছ থেকে পাওয়া চাপের হয়ে যাবে তাদের জন্য। হেমন্ত লোকের কাছে যে চাকতি আছে সেটাও পেতে গেলে অনেক ঝামেলায় পড়তে হবে কারণ লোকটা সুবিধার না সেটা সবাই জানে আর তারা এটাও জানে না যে সে জেলের বাইরে আছে। এখন শেষে যে ঘটনা ঘটলো যে শ্রুতিকে নাদ গুলি করবে না কি করবে সেটা পরের পর্বে বোঝা যাবে স্পষ্টভাবে।


❂ব্যক্তিগত রেটিং:❂
৮.৫/১০


❂ট্রেইলার লিঙ্ক:❂


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

এ পর্বটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো।গল্পটি অনেক রহস্যময়। আসলে দাদা আপনার ওয়েব সিরিজ গুলো যত পড়ি ততই ভালো লাগে। বিক্রম আর শ্রুতি পরে চাকতির খোঁজে লেগে পড়ে। যাতে রাগ সঞ্জীবনীর পুরোপুরি উদ্ধারের চাবিকাঠি খুঁজে পায়।তবে হেমন্তের লোকের কাছে যে চাকতি আছে কিন্তু সেটা পাওয়া যাবে না।কারণ লোকটা সুবিধার না।তাই তার কাছ থেকে এটি পাওয়া যাবে না। তারপর সবাই জানে সে জেলের বাইরে আছে।দেখা যাক আগামী পর্বে কি হয়। আপনার এই সিরিজের পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

দিতিপ্রিয়া মেয়েটি অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছে। ওকে মারতে গিয়েও কেন মারল না? চাইলে তো মেরে ফেলতে পারতো। একাইতো পেয়েছিল । তাছাড়া বিক্রমের মা যে কিডন্যাপ হয়েছে বাড়ির লোকজন জানে না কেন? এতদিন কোথায় আছে জানতে চায় না বাড়ির লোকজন। তাছাড়া সবগুলো চাকতি হাতে না পেলে তো সঞ্জীবনী উদ্ধার করা সম্ভব নয়। বাইরের লোকজনের কাছ থেকে এই চাকতিগুলো উদ্ধার করা বেশ কঠিন হবে মনে হচ্ছে।শ্রুতিকে মেরে ফেলার জন্য বন্দুক তাক করল। আগামী পর্বে বোঝা যাবে যে শ্রুতিকে মারতে পেরেছি কিনা। আমার মনে হয় শ্রুতি বেঁচে যাবে কোনোভাবে। তাছাড়া ওই একটি মহিলাকে শুধু রুদ্র ভৈরবের সামনে গান গাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। বাকিদের সামনে গান গাওয়ার অনুমতি দেয় নি সেই ১০০ বছরের কুসংস্কারের জন্য। যাই হোক আজকের পর্বটি বেশ ভালই হয়েছে মনে হচ্ছে।। ধন্যবাদ দাদা।

ওকে মারতে গিয়েও কেন মারল না? চাইলে তো মেরে ফেলতে পারতো। একাইতো পেয়েছিল । তাছাড়া বিক্রমের মা যে কিডন্যাপ হয়েছে বাড়ির লোকজন জানে না কেন?

মেরে ফেলতে পারতো কিন্তু সেখানে নিজেকেই তার বাঁশির সুরে হারিয়ে ফেলেছিলো বা তার চেহারার প্রতি মোহিত হয়েছিল, এইরকম একটা কিছু হবে, কারণ ক্লিয়ার এখনো বোঝা যায়নি। আর কিডন্যাপের বিষয়ে বাড়ির লোকজনদের বলেনি, কারণ এতে সবাই একটা টেনশন করবে আর যদি কেউ ভুল কোনো স্টেপ নেয় তাহলে তার মায়ের ক্ষতি হতে পারে। এইসব চিন্তা করে কাউকে কিছু বলেনি, আর তাকে মানাও করে রেখেছিলো।

দাদা আজকের পর্বটি এই গল্পের মজার একটি পর্ব। চাকতি গুলো খুজে বের করা নিয়ে মজার মজার কাহিনী হতে পারে। যেটা আশা করি আমরা দেখতে পারবো। শ্রুতির বাবার সাহায্য নিয়ে হয়তো কিছু চাকতি পাওয়া যেতে পারে। তবে নাদ শ্রুতিকে গুলি করলে সব শেষ। দেখা যাক পরের পর্বে নাদ কি করে। ধন্যবাদ দাদা।

ওয়েব সিরিজের এবারের পর্বটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো দাদা। নতুন নতুন পর্ব মানেই নতুন নতুন চমক। রহস্য কিন্তু আরো বেশি গভীরে যাচ্ছে। চাকতি খোঁজার জন্য তারা কিন্তু বেশ রিক্স নিয়েছে। যেহেতু অনেক সূত্র এই চাকতির সাথে জুড়ে আছে তাইতো তারা এতটা রিস্ক নিয়েছে। তবে দিতিপ্রিয়া কিন্তু অল্পের জন্য বেঁচে গেছে। তার মৃত্যু হতেও পারতো। সঞ্জীবনী উদ্ধার করা জন্য চাকতি খুবই দরকার। দেখা যাক আগামী পর্বে কি হয়। শ্রুতির কোন বিপদ হলো কিনা কিংবা শ্রুতিকে মারা হলো কিনা সেসব তথ্য হয়তো আগামী পর্বের মাধ্যমে জানতে পারবো। তবে শ্রুতির জন্য চিন্তা হচ্ছে। হয়তো বড় বিপদ হয়ে যেতে পারে। দাদা আপনার শেয়ার করা ওয়েব সিরিজের এবারের পরবর্তী পড়ে অনেক ভালো লাগলো। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

দিতিপ্রিয়া শেষ পর্যন্ত বেঁচে গেছে, তবে নাদ হঠাৎ কেন থমকে গেলো? যাক তার প্রান রক্ষা পেয়েছে। সবাই যেভাবে ঐ চাকতির পেছনে লেগেছে, মনে হচ্ছে এক এক করে সবগুলো যেভাবেই হোক উদ্ধার করবেই। তবে নাদ লোকটা বেশ মারাত্মক খুনি। শ্রুতি কি শেষ পর্যন্ত রক্ষা পাবে কিনা এখন এটাই দেখার বিষয়। সামনের পর্বে ধামাকা হবে মনে হচ্ছে।

দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য 🥀

সবমিলিয়ে চাকতি নিয়ে বড় একটা রহস্য আছে বোঝা যাচ্ছে।দিতিপ্রিয়াও কি একইভাবে বাঁশির সুরে মরা মানুষকে জীবিত করতে চাইছে দাদা?আর নাদ লোকটি সবাইকে এভাবে মারার পরিকল্পনা ও কেন করে? যাইহোক শ্রুতির বিষয়টি পরের পর্বে জানা যাবে।আজকের পর্ব বেশ ইন্টারেস্টিং ছিল, ধন্যবাদ দাদা।