ওয়েব সিরিজ রিভিউ: রুদ্রবীনার অভিশাপ- আমানত খানের চাকতি ( সিজন ১- তৃতীয় পর্ব )

in hive-129948 •  2 years ago 
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আমি রুদ্রবিনার অভিশাপ ওয়েব সিরিজটির সিজন ১ এর তৃতীয় পর্বের রিভিউ দেব। আজকের তৃতীয় পর্বের নাম হলো "আমানত খানের চাকতি"। গত পর্বে দেখা গিয়েছিলো যে বিক্রমের মাকে রুদ্রপুরের একটা মন্দিরে তুলে নিয়ে গিয়ে তার ছবি তুলে বিক্রমের ফোনে পাঠিয়েছিল। আজকে দেখা যাক কাহিনীটা কথার থেকে কোথায় যায়।


স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব


✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠

সিরিজটির নাম
রুদ্রবিনার অভিশাপ
প্লাটফর্ম
hoichoi
সিজন
পর্ব
আমানত খানের চাকতি
পরিচালকের নাম
জয়দীপ মুখার্জি
অভিনয়
বিক্রম চ্যাটার্জি, রূপসা চ্যাটার্জি, সৌরভ দাস, দিতিপ্রিয়া রায়, উষশী রায় ইত্যাদি
মুক্তির তারিখ
২৪ ডিসেম্বর ২০২১( ইন্ডিয়া )
সময়
২২ মিনিট ( তৃতীয় পর্ব )
ভাষা
বাংলা
কান্ট্রি অফ অরিজিন
ইন্ডিয়া


❆মূল কাহিনী:❆


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

এখানে দেখা যায় বিক্রম আর শ্রুতি সেই রুদ্রবিনার চিহ্ন খুঁজে পেয়ে একটা বক্স মতো পেয়েছিলো আর সেটার পিছনে বাংলা অক্ষরে কিছু লেখা ছিল কিন্তু সেটার অক্ষরগুলো উল্টোভাবে লেখা ছিল। এর মধ্যে তার ফোনে তার মায়ের ছবিগুলো পাঠিয়ে দেয় আর বিক্রম এর ফোনে সাথে একটা ভয়েস মেসেজও পাঠিয়ে দেয়। বিক্রম শ্রুতিকে লেখাটা বুঝতে পারে কিনা সেটা দেখতে বলে একটু বাইরে যায় কোনো অর্গানাইজারের সাথে কথা বলার নাম করে। এরপর সেই রুদ্রপুরের মন্দিরের বর্তমান একজন ভন্ড রুদ্রভৈরব নামের লোকটা সেই ভয়েস মেসেজে বলে যে তানসিনের তানপুরা তো খুঁজে পেয়েছো এখন রাগ সঞ্জীবনীও তোমার খুঁজে পেতে বেশি কষ্ট হবে না তাই তোমার মায়ের কিমত হিসেবে এইটুকু নিশ্চই করতে পারো। শ্রুতি সেখান থেকে আবার দিতিপ্রিয়ার ঘরে যায় এবং সেখানে তারা সালামত খানের মৃত্যুর বাকি কাজটা অর্থাৎ শোকের কিছু মুহূর্ত সবাই কাটাতে থাকে, এই সালামত খানটা আসলে দিতিপ্রিয়ার গুরু ছিল, এমনকি সবার সংগীতের গুরু হিসেবেও এক কোথায় তাদের হাভেলির প্রত্যেক মানুষের সাথে অনেক ঘনিষ্ঠ একটা সম্পর্ক ছিল। যাইহোক সেখানে শ্রুতি তাদের সাথে কিছুক্ষন কাটায় এবং পরে আমানত খানের সেই বাদ্যযন্ত্রের ঘরে যায় এবং বিক্রম সেই উল্টো লেখাগুলোর একটা কাগজে উল্টো করে ছাপ নেয় এবং লেখাগুলো তখন ঠিকঠাক আসে।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

বিক্রম সেই লেখাগুলোকে ঠিকঠাক ভাবে ছাপ নেওয়ার পরে পড়তে থাকে এবং তাতে বিষয়টা বুঝতে থাকে। ওই লেখার মধ্যে রাগ সঞ্জীবনীর মুক্তির কোথাও লেখা ছিল। ফলে এখানে রাগ সঞ্জীবনীর রহস্য লুকিয়ে আছে সম্ভবত। এরপর শ্রুতি বিক্রমকে তার মায়ের কথা জিজ্ঞাসা করে কিন্তু সত্যি কথাটা বলতে চায়নি, কারণ সত্যি কথাটা জানলে সবাই চিন্তায় পড়ে যাবে কারণ অলরেডি সালামত খানের মৃত্যুতে বাড়িতে একটা শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এরপর দেখা যায় নাদ নামক লোকটি একটি চায়ের দোকানে বসে মধুমন্তী দেবী অর্থাৎ শ্রুতির মাকে ফোন করে আর নাজিমগড়ের ঘাটে এসে তার সাথে দেখা করতে বলে। লোকটা পরিচয় দেয়না কিন্তু তাকে তার মেয়ে শ্রুতির ক্ষতি করবে সেই ভয় দেখিয়ে নিয়ে যায়। মধুমন্তী দেবী নদীর পাড়ে পৌঁছিয়েও যায় আর শ্রুতি তার মাকে তখন তার রুমে খুঁজতে লাগে। এরপর বিক্রম শুনে দৌড়িয়ে যেতে লাগে সেখানে যাওয়ার জন্য, কারণ সে কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছিলো যে তার মায়ের সাথে যেটা হয়েছে সেটা এখানেও ঘটতে পারে।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

শ্রুতির মা নদীর পাড়ে পৌঁছিয়ে যাওয়ার পরে একজন মাঝি আসে অর্থাৎ সেই নাদ লোকটা সেখানে একজন বয়স্ক মাঝি সেজে আসে আর তাকে নাজিমগড়ের ঘাটে নিয়ে যেতে বলে। নাদও তার কথামতো নৌকায় তুলে দড়ি খুলতে যাবে সেই সময়ে বিক্রম আর শ্রুতিও সেখানে এসে পৌঁছিয়ে যায়। এরপর নাদ লোকটা ভয় পেয়ে শ্রুতির মাকে জলে ঠেলে ফেলে দেয় আর নাদও জলে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে নদীর ওপারে চলে যায়। এরপর সবাই তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে কিন্তু কেউ লোকটাকে বুঝতে পারিনি কে হতে পারে, সবাই চোর এইরকম ভেবেছিলো। এখানে শ্রুতির মাকেও কিডন্যাপ করার উদ্দেশ্য নিয়েই এসেছিলো নাহলে যদি অন্য কোনো ক্ষতি করার ইচ্ছা থাকতো তাহলে এই সময়ের মধ্যে করে দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারতো। তবে বিক্রমের কিছুটা মনে মনে আন্দাজ হয়েছে যে এইগুলো সব এই রাগ সঞ্জীবনী পাওয়ার ইচ্ছায় হচ্ছে। এরপর শ্রুতির মা একটু রেস্ট নিয়ে আবার মন্দিরে যাওয়ার কথা বলে সালামত খানের নামে একটা পুজো দিতে, তবে এইবার তাকে একা ছাড়তে চায় না কেউ তাই বিক্রম আর শ্রুতি সাথে চলে যায় ।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

বিক্রমের কাছে সেই মুহূর্তে আবারো একটা প্রাইভেট নাম্বার থেকে ভয়েস মেসেজ পাঠায় এবং শ্রুতির মায়ের সাথে যেটা ঘটলো সেটা জানিয়ে আরো হুমকি দেয় যে এটা তো সবে শুরু, তাই জলদি করুন নাহলে এরপর আরো কাহিনী ঘটতে থাকবে। এরপর বিক্রমের মা তাদের কাছে তাদের উদ্দেশ্যটা জানতে চায়। আর সেখানে তারা যে শুধু একটা কাহিনী নিয়ে মাতামাতি করছে তা কিন্তু না, সাথে আরো অনেক কাহিনী আছে যেটা তারা নিজেদের করায়ত্তে নিয়ে সবকিছুর শেষ করতে চায় অর্থাৎ যেটাকে এক কোথায় বলা যায় আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার মতো। ১০০ বছর আগে কোথায় কি ঘটেছিলো সেটাকে নিয়ে এখনো তারা সেই কেচ্ছা চালিয়ে যাচ্ছে অর্থাৎ তখন থেকে রুদ্রপুরের সেই অভিশাপকে এই বর্তমান সময়েও তারা মেনে আসছে যে এক মহিলার ভুলের জন্য রুদ্রপুরের এই সর্বনাশটা হয়েছিল।


❆ব্যক্তিগত মতামত:❆

কাহিনীতে বোঝা গেলো যে এই রাগ সঞ্জীবনী পাওয়ার মেইন উদ্দেশ্য ছিল এই রুদ্রপুরের মন্দিরে বসে থাকা কিছু ভন্ড লোকের। কিন্তু এখানে আরো একটা বিষয় সামনে আসলো যে তারা যে শুধু রাগ সঞ্জীবনীর খোঁজ করছে তা কিন্তু না, তাদের আরো একটা উদ্দেশ্য হচ্ছে ১০০ বছর আগে যে মদন্তি নামক এক মহিলার রুদ্রবিনা স্পর্শ করার জন্য অভিশাপ লেগেছিলো রুদ্রপুরের সেই মদন্তীর বংশধরদের খুঁজে বের করা আর সবাইকে মেরে ফেলা। কারণ তারা মনে করে যার জন্য এতো সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে সেই বংশধরের কারো বেঁচে থাকার অধিকার নেই। এখানে আগে দুইজন বংশধরদের খুঁজে বের করে যার মধ্যে একজন সালামত খান ছিল যাকে মেরে দিয়েছে আর আরেকজন এই মধুমন্তী অর্থাৎ শ্রুতির মা যাকে মারার সুযোগ করে উঠতে পারেনি হাতের কাছে পেয়েও। তবে এখানে শ্রুতির মাকে না মেরে অন্য কোনো উদ্দেশ্য করার ফন্দি এঁটেছিলো তারা। এই ছিল এই পর্বের কাহিনীটা, এখন পরের পর্বে এর আরো কিছু জানা যাবে।


❆ব্যক্তিগত রেটিং:❆
৮.৭/১০


❆ট্রেইলার লিঙ্ক:❆


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

দাদা আজকের পর্বটি পড়ে অনেক ভালো লেগেছে, আর অনেক কিছু বুঝতেও পারলাম এই পর্বটি পড়ে।বিষেশ করে রুদ্রপুরের মন্দিরে বসে থাকা কিছু ভন্ড লোকেরা থাকতো।এরা একটা পরিকল্পনা নিয়ে বসে থাকতো।আর এই পরিকল্পনা শুধু রাগ সঞ্জীবনীর খোঁজ করছে সে না।তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে ১০০ বছর আগে যে মদন্তি নামক এক মহিলার রুদ্রবিনা স্পর্শ করার জন্য অভিশাপ লেগেছিলো। সেই মদন্তীর বংশধরদের খুঁজে বের করে তাদেরকে মেরে ফেলা। তারা মনে করতো এই বংশধরের কারো বেঁচে থাকার অধিকার নেই। ইতিমধ্যে বংশধরদের খুঁজে বের করেছে তার নাম ছিলো সালামত খান তাকে মেরে দিয়েছে। আর আরেকজন শ্রুতির মা যাকে মারার সুযোগ করে উঠতে পারেনি। তারপরে তারা আরো নতুন নতুন ফন্দি আঁটতে শুরু করেছে। সত্যিই এই পর্বটি অনেক রহস্যময় হয়ে জানিনা আগামী পর্বে কি হবে। সেই পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

রুদ্রবীনার অভিশাপ সিরিজের "আমানত খানের চাকতি" নামক এবারের পর্বটি পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম। আসলে কিছু অসাধু এবং ভন্ড লোক এসবের পিছনে আছে। তারা সঞ্জীবনী পাওয়ার উদ্দেশ্যে এত কিছু করছে। এছাড়া ১০০ বছর আগে মদন্তি নামক যেই মহিলা রুদ্রবিনা স্পর্শ করে অভিশপ্ত হয়েছিল তার বংশধরদের খুঁজে বের করে তারা মেরে ফেলার চেষ্টা করছে। সেই দিক থেকে শ্রুতির মা বেশ বিপদে আছে। দেখা যাক পরবর্তী পর্ব কি হয়। প্রত্যেকটি পর্ব যেন নতুন নতুন চমক। টিভি সিরিজের এই পর্বগুলো পড়তে ভালই লাগছে। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

দাদা এই পর্বে কিছু রহস্য জানা গেলেও এখনই গল্পটার মজার পর্ব শুরু হয়েছে। কারন রুদ্রবিনা স্পর্শ কারী মদন্তি নামক মহিলার বংশধরদের খুজে বের করতে হবে। আবার রাগ সঞ্জীবনীর খোঁজ ও করছে। এখন মধুমন্তী অর্থাৎ শ্রুতির মাকে নিয়ে কি ফন্দি এঁটেছিলো সেটাই জানার বিষয়। এই পর্যায়ে এসে কাহিনীটা জমে গেছে। আশা করা যায় পরের পর্বে আরো কিছু রহস্য জানা যাবে। ধন্যবাদ দাদা।

এই ভন্ড লোক গুলো রাগ সঞ্জীবনী দিয়ে কি করতে চাচ্ছে? তাছাড়া শ্রুতির মা এবং সালামত কি আত্মীয় ছিল? শ্রুতির মা অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছে। তা না হলে সালামতের মতো তাকেও মেরে ফেলতে হয়তো। ভাগ্য ভালো যে বিক্রম বিষয়টি বুঝতে পেরে শ্রুতিকে নিয়ে সময় মত ঐ জায়গায় পৌঁছে যেতে পেরেছিল। তাছাড়া পরেরবার মন্দিরে যাওয়ার সময় বিক্রম এবং শ্রুতি সাথে গিয়ে ভালো করেছে তা না হলে আবার কোন বিপদ হতে পারত। ওই লোকগুলো বারবার বিক্রমকে ভয়েজ মেসেজ পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করছে। এই লোকগুলো কি কুসংস্কার মেনে নিয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১০০ বছর আগের অভিশাপ কি এখনো কার্যকর থাকে নাকি। এমনও হতে পারে যে এই মদন্তীর বংশধর কে মারতে পারলে অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে। যাইহোক ধীরে ধীরে রহস্য গুলো জানা যাবে। অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

এই ভন্ড লোক গুলো রাগ সঞ্জীবনী দিয়ে কি করতে চাচ্ছে? তাছাড়া শ্রুতির মা এবং সালামত কি আত্মীয় ছিল?

ওই যে এই রাগ সঞ্জীবনি এর মাধ্যমে মৃত মানুষকে জীবিত করে তোলা যায়, এইজন্য এখন সবাই সেটা পাওয়ার আশায় আছে। আর এটা হাতে পেলেই কোনো খারাপ উদ্দেশ্যে লাগাবে।

শুধুই শ্রুতির মা বলে কথা না, ওই বাড়ির প্রত্যেকের সাথে একটা ভালো সম্পর্ক ছিল । আর এই সম্পর্ক হলো গুরুর, তাদের বাড়ির প্রত্যেক ছেলে মেয়ে ছোটো থেকেই তার কাছে গান শিখেছে।

না দাদা গান শেখা না। বললেন যে শ্রুতির মা আর সালামত ওই অভিশাপ পাওয়া মহিলার মদন্তির বংশধর। তাই জিজ্ঞাসা করেছিলাম এরা কি আত্মীয় নাকি?

এই পর্বে এসে অনেক কিছু পরিষ্কার হয়েছে।
বিশেষ করে একদল লোক সবসময়ই নজর রাখছে এবং তাদের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে রাগ সঞ্জীবনী খুঁজে বের করা। তাছাড়াও যে মহিলাকে ঘিরে অভিশাপের শুরু তার বংশধর দের হত্যা করা। সালামত নামক লোকটিকে মেরে ফেললো, আর শ্রুতির মা অল্পের জন্য বেঁচে গেছে। দেখা যাক সামনের পর্বে কি ঘটে।

দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য। 🥀