ওয়েব সিরিজ রিভিউ: রুদ্রবীনার অভিশাপ- রক্তের টান ( সিজন ১- অষ্টম পর্ব )

in hive-129948 •  2 years ago 
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে রুদ্রবিনার অভিশাপ ওয়েব সিরিজটির প্রথম সিজনের অষ্টম পর্ব রিভিউ দেব। এই পর্বের নাম হলো "রক্তের টান"। আগের পর্বে দেখা গিয়েছিলো যে নাদ আর বিক্রমের মধ্যে গানের প্রতিযোগিতা হয়েছিল এবং তাতে নাদ লোকটা জিতে গিয়েছিলো। আজকের পর্বটিতে দেখা যাক তার পরে কি হয়।


স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব


✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠

সিরিজটির নাম
রুদ্রবিনার অভিশাপ
প্লাটফর্ম
hoichoi
সিজন
পর্ব
রক্তের টান
পরিচালকের নাম
জয়দীপ মুখার্জি
অভিনয়
বিক্রম চ্যাটার্জি, রূপসা চ্যাটার্জি, সৌরভ দাস, দিতিপ্রিয়া রায়, উষশী রায় ইত্যাদি
মুক্তির তারিখ
২৪ ডিসেম্বর ২০২১( ইন্ডিয়া )
সময়
২১ মিনিট ( অষ্টম পর্ব )
ভাষা
বাংলা
কান্ট্রি অফ অরিজিন
ইন্ডিয়া


✠মূল কাহিনী:✠


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

এখানে দেখা যায় যে নাদের সাথে প্রতিযোগিতায় হারার পরে আসলেই বিক্রমের অনেক খারাপ লেগেছিলো। তবে এই খারাপ লাগার বিষয়টা সে যদিও নাদের সামনে স্বীকার করতে পারেনি। পরে পরিবারের সবার সামনে বসে বিক্রম গান ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা করে, কারণ নাদের কাছে হারার পরে তার মনে হয়েছে যে সে গান ভালো গাইতে পারে না। এটা ঠিক যে নাদ লোকটা ভালো গান গায় এবং তালিমও ভালো পেয়েছে কোনো গুরুর কাছ থেকে। কিন্তু বিক্রম নিজেকে মেনে নিতে পারছে না যে সে হেরে গেছে, কারণ এর আগে সে কখনো কোথাও হারেনি। আর এই বিষয়টা বারবার তার মন খুড়ছে। তবে বাড়ির সবাই মানে শ্রুতির বাবা, মা তাকে বলে যে সে ভালো গান গাইলেও তার গানের মধ্যে কোনো ভালোবাসা, কোনো প্রাণ নেই যেটা তোমার গানের মধ্যে আছে। আর গানের মধ্যে যদি ভালোবাসা, প্রাণ না থাকে তাহলে সেটা গানের পর্যায়ে যায় না। এরপর সবাই তাকে উল্টোপাল্টা সিদ্ধান্ত নিতে মানা করে চলে যায়। এরপর দেখা যায় নাদ লোকটা দিতিপ্রিয়ার রুমের কাছে গিয়ে তাকে এক নজরে দেখতে থাকে এবং তখন বাইরের থেকে একটা সানাই বাজানোর শব্দ শুনে সেখান থেকে বাইরে বেরিয়ে আসে এবং সেখানে দিতিপ্রিয়ার মা বাজাচ্ছিল এই সানাই। নাদ লোকটিও সেখানে তার সেই অদ্ভুত বাঁশিটা নিয়ে যায় এবং অদ্ভুত সুরে বাজাতে থাকে।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

দিতিপ্রিয়ার মা পুকুর পাড়ে বসে আপন মনে সানাই বাজাচ্ছিল এবং সেখানে নাদ হঠাৎ পৌঁছিয়ে বাঁশি বাজাতে লাগছিলো, আর এটা সে ইচ্ছা করেই গেছিলো তাকে মারতে। নাদও তার সেই অদ্ভুত শব্দের বাঁশি বাজাচ্ছিল আবার দিতিপ্রিয়ার মাও বাজাচ্ছিল অর্থাৎ একপ্রকার দুইজন এর বাঁশির সুরের বা শব্দের পাল্লাপাল্লি দিচ্ছিলো। এক সময় এসে দিতিপ্রিয়ার মা কিছুটা অস্বস্তি অনুভব করতে লাগে কিন্তু তাও সানাই বাজাতে থাকে। নাদ পরবর্তীতে নিজের কানে কিছু গুঁজে নিয়ে আরো বেশি জোরে শব্দে বাঁশিটা বাজাতে লাগে আর দিতিপ্রিয়ার মায়ের মাথা ঘুরাতে লাগে এবং কান দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। এরপর সে ধীরে ধীরে ঝিমিয়ে আসে আর মারা যায় সাথে সাথে। এরপর নাদ লোকটা সেখান থেকে হন্ততন্ত হয়ে বাড়ির থেকে তার ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলো কিন্তু সামনে শ্রুতির বাবা পড়ে যায়। এরপর গ্রামের বাড়িতে তার মা অসুস্থ আছে এই মিথ্যে কথাটা বলে সেখান থেকে দ্রুত বেরিয়ে চলে যায়। এরপর তাদের বাড়ির কাজের লোক এসে খবর দেয় পুকুর ঘাটে কেউ খুন হয়েছে এবং সবাই সেখানে চলে যায় আর দেখে এই অবস্থা। নাদ লোকটা সেখান থেকে যায়নি, লুকিয়ে লুকিয়ে আবার দেখছিলো সেখানে।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

এরপর নাদ কিছুক্ষন পরে সেখান থেকে একটা বাইক জোগাড় করে আনন্দপুর ক্রস করে রুদ্রপুরের দিকে রওনা দেয় । এদিকে বাড়ির লোকজন সবাই শোকে কাতর হয়ে পড়ে। পরে পুলিশকে খবর দেয় এবং তারা সেখানে এসে বিষয়গুলো দেখে যে সালামত খানের মতো একই কেস এবং গলায় একই সিম্বল দিয়ে রেখেছে। এরপর পুলিশের একটু সন্দেহ হয় গুরুকুলের ছাত্রদের উপর আর তাদের সবার লিস্ট চায় যাতে তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করতে পারে কিন্তু এদিকে আবার শ্রুতির মা কলকাতায় চলে গেছে আর সমস্ত ডিটেলস তার কাছে। এদিকে নাদ রুদ্রপুরে পৌঁছিয়ে সোজা তার মায়ের কাছে চলে যায়, তার মাও রুদ্রভৈরব এর মন্দিরে থাকে। এরপর সেখানে গিয়ে তার মায়ের কোলে কান্নাকাটি করতে লাগে আর বলে সেখান থেকে পালিয়ে দূরে কোথাও চলে যাওয়ার কিন্তু তার মা রুদ্রভৈরব এর ভয় পায় খুব কেননা যদি নাদকে সে মেরে ফেলে। ওখানে কোনো ফল রুদ্রভৈরব এর নির্দেশ ছাড়া খেতে পারে না, তাই লুকিয়ে তার মা কিছু ফল দিচ্ছিলো ঠিক তখনই রুদ্রভৈরব সেখানে চলে আসে।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

রুদ্রভৈরব নাদকে দেখে রেগে যায় খুব কারণ তাকে যে কাজ দিয়েছিলো সেটা ফেলে রেখে এখানে চলে এসেছে। এরপর রুদ্রভৈরব তার মায়ের কাছে একদমই বসতে না দিয়ে তাকে সেখান থেকে বের করে দেয়। এদিকে দিতিপ্রিয়ার মাকে তারা সালামত খানের মতো একই জায়গায় কবর দেয়। এদিকে নাদকে সন্দেহ করে পুলিশ তাকে খুঁজছে কিন্তু রুদ্রভৈরব পুলিশদের হাত করে নিয়েছে আর নাদকে আনন্দপুর গিয়ে থানায় একবার দেখা করে আসতে বলেছে। এখানে বাহাদুর লোকটা সবার শেষে এসে খুব কান্নাকাটি করতে লাগে কবরের সামনে বসে আর সেইটা দেখে বিক্রম এবং শ্রুতির কাছে কেমন যেন বিষয়টা আনইজি লাগে, কারণ বিক্রম তো জানে অনেক কথা সে আড়াল করে রেখেছে তাদের থেকে আর এখন কবরের সামনে এসে এতো কান্নাকাটি করছে মানে বিষয় কিছু একটা আছে।


✠ব্যক্তিগত মতামত:✠

এই পর্বে দেখা গেলো নাদ লোকটা দিতিপ্রিয়ার মাকে মদন্তীর বংশধর মনে করে মেরে ফেলে আর তার গলায় একই চিহ্ন বসিয়ে দিয়ে গেছে। তবে একটা বিষয় ক্লিয়ার হলো যে নাদ লোকটা প্রকৃতপক্ষে নাদ না, তার মূল নাম শংকর। আর সে এইসব নিজের থেকে কোনোকিছুই করছে না, রুদ্রভৈরব তাকে দিয়ে এসব করতে বাধ্য করছে কারণ তার মা বন্দি অবস্থায় আছে সেখানে তাই রুদ্রভৈরব যা করতে বলছে তাই করছে। কিন্তু নাদ লোকটা এইসব করার পরে অনেক অনুসূচনা বোধ করতে লাগে, আর তার খারাপও লাগে। নাদ এবং তার মাও একটা ট্রাপের মধ্যে পড়ে রয়েছে আর সেখান থেকে সহজে বেরোতে পারছে না। এখন নাদ লোকটা আর বাকি কোনো সদস্যকে মারছে কিনা সেটা দেখার বিষয় কারণ দিতিপ্রিয়ার মাকে মারার পরে সে একদম ভেঙে পড়েছে আর এই কথাগুলো তার মায়ের সাথে শেয়ারও করেছে। কিন্তু তার মাও কিছু করতে পারছে না, কারণ রুদ্রভৈরব এখন রুদ্রপুরের একজন শক্তিশালী লোক উঠেছে তাই অন্যায় করলেও তার কথার উপরে কেউ কথা বলার সাহস পায় না।


✠ব্যক্তিগত রেটিং:✠
৮.৯/১০


✠ট্রেইলার লিঙ্ক:✠


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আজকে অনেক রহস্যময়ী পর্ব রক্তের দান ওয়েব সিরিজটি আমাদের সাথে শেয়ার করলেন দাদা। এই সিরিজটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো ,বিশেষ করে নাদ লোকটা দিতিপ্রিয়ার মাকে মদন্তীর বংশধর মনে করে মেরে ফেলেছে।তারপর গলায় একই চিহ্ন বসিয়ে দিয়েছিলোআসলে নাদ লোকটা প্রকৃতপক্ষে নাদ না, তার মূল নাম শংকর।এইসব কাজ সে নিজের থেকে করছে না।আসলে রুদ্রভৈরব তাকে দিয়ে এসব কাজ করতে বাধ্য করছে।সে এই কাজ করছে কারণ তার মা বন্দি অবস্থায় আছে।তাই রুদ্রভৈরব যা করতে বলছে, সে তাই করছে। এরকম আমাদের সমাজে অনেক কাজ রয়েছে, যা মনের বিরুদ্ধে করতে হয় বাধ্য হয়ে । তাই নাদ লোকটি এই কাজ করে সে অনুশোচনাও করছে। এই পর্বটি সত্যি অনেক রহস্যময়। পর্বটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আগামী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

রুদ্রবিনার অভিশাপ ওয়েব সিরিজটির এবারের পর্ব পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম দাদা। বিক্রম এবং নাদের মধ্যে গানের প্রতিযোগিতা হয়েছিল এবং নাদ নামক লোকটি বিজয়ী হয়েছিল আমরা গত পর্বে জেনেছি। নাদ নামক লোকটি যদিও প্রকৃতপক্ষে নাদ না। দিতিপ্রিয়ার মায়ের শুরু থেকেই অনেক বিপদ ছিল। তাই অবশেষে তাকে মেরেই ফেলা হলো। রুদ্রভৈরব যেমন শক্তিশালী তেমনি বুদ্ধি দিয়ে সবকিছু করার চেষ্টা করছে। একজন অসহায় মানুষকে কাজে লাগিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করছে। মা ও ছেলেকে একেবারে ট্রেফে ফেলে দিয়েছে। মাকে আটকে রেখে ছেলেকে দিয়ে অন্যায় কাজ করাচ্ছে। তাইতো নাদ নামক ছেলেটি বাধ্য হয়ে অন্যায় কাজগুলো করছে। কিন্তু দিতিপ্রিয়ার মাকে মেরে ফেলার পর সে অনুশোচনায় ভুগছে এবং পুরো বিষয় তার মায়ের সাথে শেয়ার করেছে। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়। ছেলেটি আবারো নতুন করে কাউকে মেরে ফেলে নাকি রুদ্রভৈরবের কাছ থেকে মুক্তি পায় সেটাই দেখার অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

  ·  2 years ago (edited)

রুদ্র-বিনার অভিশাপ রক্তের টান ওয়েব সিরিজটি পড়ে সত্যিই মুগ্ধ হলাম দাদা। যেটার মধ্যে অনেক গল্প কাহিনী লুকিয়ে আছে নাদ লোকটি যেভাবে একজন মানুষকে মেরে ফেললো সত্যিই আমি অবাক হয়েছি । নাদের প্রকৃত নাম শঙ্কর যে নিজের থেকে এগুলো করছে না তাকে রুদ্রভৈরব করতে বলছে তাই করছে। আরো অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে। আশা করি ওয়েব সিরিজের পরবর্তী পর্বগুলো পড়তে পারলেই বিষয়টি ক্লিয়ার হবে অনেক ভালো লেগেছে আমার কাছে।

দাদা রুদ্রবীনার অভিশাপ- রক্তের টান ওয়েব সিরিজের সিজন ১ এর অষ্টম পর্বে এসে নাদ লোকটা দিতিপ্রিয়ার মাকে মদন্তীর বংশধর মনে করে মেরে ফেলার পরে জানা গেল যে নাদ লোকটা প্রকৃতপক্ষে নাদ না, তার মূল নাম শংকর। আর সে এসব কিছু করছে তার মাকে রুদ্রভৈরবের হাত থেকে বাচাঁনোর জন্য। নাদ দিতিপ্রিয়ার মাকে মারার পর যেভাবে অনুসূচনা করেছে পরে আর কাউকে মারে কিনা সেটা বুঝা যাচ্ছে না। দেখা যাক পরের পর্বে কি হয়। ধন্যবাদ দাদা।

ওয়েব সিরিজটির কি যে কঠিন একটা নাম। উচ্চারণ করতেই দাঁত সব কড়মড় করে উঠে। এত রহস্যময় সিরিজটি কিন্তু বেশ ভালই লাগছে। শংকরের নাদ নামের বেশটা কিন্তু আমার ভালই লাগছে। রুদ্রভৈরবের ইশারায় শংকর এত সব করছে। যাই হোক আপনার মাধ্যমেই সিরিজটির রিভিউ পড়ছি। তাই মনে হয় না যে টিভিতে দেখার প্রয়োজন আছে।

অবশেষে দিতিপ্রিয়ার মায়ের প্রানটাও নাদ লোকটি নিয়ে নিয়েছে। তবে নাদ বা শংকর সে নিজেও রুদ্রভৈরবের খপ্পরে রয়েছে স্পষ্ট বোঝা গেছে। ঘটনার একটা জট আজ খুলেছে, তবে নাদ লোকটার অনুশোচনা এসেছে এটা একটা বিষয়। দেখা যাক সামনে কি হয়।
দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য 🥀

বিক্রম হেরে গিয়ে গান ছেড়ে দিতে চাইলে তার পরিবারের লোক অনেক সুন্দর বুঝিয়েছেন।সত্যিই গানে প্রাণ ও ভালোবাসা না থাকলে ভালো লাগে না।তাছাড়া একটি জায়গায় রহস্য লাগলো নাদ ও দিতিপ্রিয়ার মা একই সুরে কিভাবে সানাই ও বাঁশি বাজাচ্ছিল।কিন্তু তার মা মারা গেলেন নাদ বেঁচে গেল কিভাবে?তাছাড়া নাদের আসল নাম জেনে ভালো লাগলো।সে নিজের মতো যে এইসব করছে না সেটা বোঝা গেল।দেখাযাক পরের পর্বে কি হয়?ধন্যবাদ দাদা।