বিশ্বব্যাপী কলাগাছের ব্যবহার ও উপকারিতা।🍌🌴🍌

in hive-131369 •  last year 

হ্যালো বন্ধুগণ,

আসসালামুয়ালাইকুম /আদাব,

সকলে কেমন আছেন, আশা করি সকলে সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবেই জীবন-যাপন করছেন।আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছি।
আজকে আমি @moshiur69 Steem For Tradition কমিউনিট-তে গ্রামীণ পরিবেশে কলাগাছের ব্যবহার নিয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করতে চলেছি। আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।

[তো চলুন শুরু করা যাক আজকের টপিক পোস্ট কলাগাছের ব্যবহার ]

[কলাগাছ🍌🍌]

IMG20230614100417~2.jpg

কলা শুধু মিষ্টি এক ফল, এমনটা ভাবা যেতেই পারে৷ কিন্তু গ্রামীণ পরিবেশে এটির বহুল ব্যবহার দেখা যায়। আমরা শৈশবকালে এই কলা গাছ কেটে পুকুরে সাঁতার শিখতে যেতাম। আবার সে সময় অনেক জেলেরা কলাগাছ কেটে নৌকা তৈরি করতো মাছ ধরার জন্য। সেখান থেকে আজ পর্যন্ত আমরা কলা নানা ভাবে ব্যবহার করে আসছি যেমন:-কাঁচকলা আমরা সবজি হিসেবে রান্নার কাজে ব্যবহার করে থাকি এবং কোকাকোলা আমরা গাছ থেকেই পাকিয়ে খাই কিংবা অনেকেই গাছ থেকে কেটে এনে বাড়িতে কিছুদিন রেখে পাকিয়ে খাই। কলাগাছ দিয়ে কৃষিরা নিজের জমি চাষ করে মাটি সমান করেন। কলাগাছ থেকে অনেক পশু পাখির খাদ্যের যোগান হয়। কলা গাছের পাতা থেকে গরু ছাগলের খাদ্যর যোগান হয়। আবার আমরা শৈশবকালে যখন পিকনিক করতাম তখন এই কলাগাছের পাতা পেড়ে ভাত খাওয়ার যায়গা করতাম। কলা গাছের পাতার উপর ভাত খেতাম।

এখনো এই কলা পুরো পৃথিবীতে বহুল ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কাঁচকলা তরকারি এবং পাকা কলা খাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। সুইজারল্যান্ডের এক কোম্পানি ফিলিপাইন্সের এক জংলি কলার গাছ কাজে লাগিয়ে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ উৎপাদন করছে৷ গোটা বিশ্বে এই ব্র্যান্ডের চাহিদা এখন বহুল পরিমাণে বাড়ছে৷

উগান্ডার এক শিল্পী কলা গাছের তন্তু দিয়ে আসবাবপত্র তৈরি করে সেই পথ বেছে নিয়েছেন৷ আরো মানুষকে সেই দৃষ্টান্ত অনুসরণের প্রেরণা জোগাচ্ছেন তিনি৷ উগান্ডার মানুষের কাছে কলার গুরুত্ব অনেক বেশি৷ যেমন সেখানকার শিল্পী আইজ্যাক নকোংগে কলাগাছ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরি করেন৷ তিনি বলেন, এটা সত্যি অনবদ্য৷

IMG20230614095844~2.jpg

IMG20230614100143~2.jpg

উগান্ডাকে আফ্রিকার কলার রাজধানী বলা হয়৷ ৫০টিরও বেশি জাতের পাকা কলা ও কাঁচকলা চাষ করতে দেখা যায়৷ অন্য কোনো দেশের মানুষ উগান্ডানদের মতো এত কলা খায় না৷
কলাগাছের ডালে মাত্র একবারই ফল ধরে৷ তাই নতুন ফল গজানোর জন্য সেটি কেটে ফেলা জরুরি৷ সে কারণে ফসল তোলার পর গাছের বেশিরভাগ অংশ কেটে ফেলা হয়৷ কিন্তু বর্জ্য হিসেবে ফেলে দেবার বদলে আইজ্যাক সেগুলি নতুন করে আসবাবপত্র তৈরর কাজে ব্যবহার করেন৷ আইজ্যাক নকোংগে বলেন, ‘‘আমাদের এখানে চারিদিকে কলার তন্তু ছড়িয়ে রয়েছে৷ আমাদের স্থানীয় উপাদান ব্যবহারের প্রণালী গ্রহণ করতে হবে৷ কোনো রাসায়নিক না থাকায় সেগুলি পরিবেশবান্ধবও বটে৷ কয়েক বছরের মধ্যে রাসায়নিক আমাদের জগত ধ্বংস করে দেবে৷ কিন্তু আমরা স্থানীয় উপাদান ব্যবহার করলে অবশ্যই আমাদের ভবিষ্যৎ ভালো হবে৷''

আইজ্যাক হাতে করে বাইরের অংশ থেকে তন্তু বার করেন৷ শীষগুলি চিকন করে কেটে তিনি রোদে শুকিয়ে তারপর প্রক্রিয়াজাত করেন৷ দক্ষতার সঙ্গে ফাইবার পাকালে দীর্ঘ দড়ি তৈরি করা যায়৷ পরে কাঠ বা ধাতুর ফ্রেমে সেই দড়ি বোনা হয়৷
সাজানোর জিনিস ও সংসারের প্রয়োজনীয় অনেক কিছুর উপাদান হিসেবে কলাগাছের তন্তু বেশ উপযোগী৷ আইজ্যাক নিত্যনতুন সামগ্রী তৈরি করে চলেছেন৷ সত্যিকারের শক্ত চেয়ারের মতো আরও বড় আসবাবপত্র তৈরি করতে প্রায় ১,০০০ মিটার তন্তু লাগে৷ প্রায় ১০০টি কলাগাছ থেকে এত পরিমাণ তন্তু সংগ্রহ করা যায়৷ আইজ্যাক অন্য মানুষকেও এই বিপুল সম্পদ সম্পর্কে শিক্ষা দিতে চান৷ চাষি কলাগাছ পোঁতার কিছুকাল পর ফসল তুলে কিছু আয় করবেন৷ অর্থাৎ আমরা সেই অঢেলতা ও ভালো ফসলে বিশ্বাস করি৷ কলা গাছের তন্তু দিয়ে হাতে তৈরি তাঁর আসবাব বাসায় আফ্রিকার সংস্কৃতি ও সৌন্দর্যের ছোঁয়া আনে৷ সেই আসবাব প্রকৃত অর্থে টেকসইও বটে৷

IMG20230614095832.jpg

কবিতার নাম:- কলাগাছের ভেলা,
কবির নাম:-কাজী শামিম শাহরিয়ার ইসলাম

কলাগাছের ভেলা
কাজী শামিম শাহরিয়ার ইসলাম
----------------------------------------

ছিল মোর এক খানা কলা গাছের ভেলা
চড়িতাম তাহার উপরে বর্ষার বেলা।
জলরাশির বুকে কলার ভেলায় চড়িয়া
ঠিক যেন আমার টাইটানিকে করিয়া।
লক্ষ্মীন্দরকে নিয়ে বেহুলা ভেলায় ভাসিয়া,
আরা আমি একা এই ভেলায় চড়িয়া।

দূরে দারিয়ে দেখে আমার ভেলা
কৃষক কহিল “আমায় নেবে তোমার ভেলায়?”
আমার ছোট্ট ভেলায় তুমি নাহি চড়
পরের বার আনিবো ভেলা আরেকটু বড়।
তিনি কহিলেন ‘দেখো না যদি পারো?’
‘আমায় না নাও আমার থলেটা পার করে দিও।’
আমি তাহার থলে নিয়ে ভাসালাম ভেলা
ওই পারে তার স্ত্রী পুত্র করছে অপেক্ষা।
ভেলা পৌঁছালে যত্ন করিয়া নিল সেইত থলে
আমিও চলিলুম তাদের হাসিমুখ খানা দেখে।

জলের প্রাচীন বাহন এই কলাগাছের ভেলা,
এখনো মনে পরে কত স্মৃতি ছিল।
ভেলায় চড়িয়া যাব আমি বন্ধুর দেশে,
আমায় দেখিয়া খুশি হবে কত আশা ছিল।

ছিল মোর এক খানা কলার ভেলা
ছিল কত প্রেম মায়া মমতা
আমার সব সময়ের সঙ্গী ছিল এই ভেলা
আবার যদি পেতাম ফিরে সেই ভেলা।

IMG20230614095608.jpg

IMG20230614095559.jpg

IMG20230614095905.jpg

যখন কলা খাবেন, কারো দিকে তাকাবেন না । কারণ
— ড্যারিন্ডা জোন্স-বলেছেন:-
আপনি যদি জনসমক্ষে একটি কলা খেতে চান তবে কখনই কারো চোখের দিকে তাকাবেন না।

তো আজকে এখানেই আমি আমার পোস্টটি শেষ করছি।
আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আশা করি পোস্টটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে আপনার মন্তব্যটি জানাবেন।

ধন্যবাদ আপনাকে, ধন্যবাদ সকলকে।

[আল্লাহ হাফেজ]

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ছোটোবেলায় আমিও কলাগাছের ভেলায় চড়ে নদীতে ঘুরেছি। কলা খুবই একটি উপকারী ফল। তবে বাজারে যে কলা পাওয়া যায় অধিকাংশ কলাই হিট দিয়ে পাকানো এবং ফরমালিন দেয়া থাকে। চমৎকার ফটোগ্রাফি করেছেন।

কলা গাছ নিয়ে খুবই সুন্দর পোস্ট উপস্থাপন করেছেন ভাই, ছোটবেলায় কলা গাছ দিয়ে ভেলা বানাতাম। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

কলাগাছের উপকারীতা নিয়ে আপনি অসাধারণ একটি পোস্ট লিখেছেন। কলা শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে। ছোট বেলায় বর্ষাকালে আমার চাচাতো ভাইয়েরা কলার ভেলা বানাতো আর আমি ভেলায় উঠতাম।ধন্যবাদ ভাইয়া কলা গাছ নিয়ে এতো সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য।

কলা ও কলা গাছ নিয়ে বেশ চমৎকার কিছু তথ্য আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। কলা একটি বেশ উপকারি ফল।কলা বেশ ভালো দামে বিক্রি করা হয় বাজারে।

আমি ছোট বেলায় কলা গাছের ভ্যালা বানিয়ে বানের পানিতে ঘুরে বেড়াইতাম। কলা আমাদের জন্য অনেক উপকারী একটি ফল। এখন কলা আছ বস্ত্র তৈরির কাজে বেশি ব্যবহার করা হইতেছে। আপনি অনেক সুন্দর উপস্থাপন করেছেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

1000030859.jpg1000030817.jpg

লেখাগুলো এই সাইট থেকে কপি করেছেন লিংক। কমিউনিটির রুলস ফলো করুন। কপি-পেস্ট পোস্ট শেয়ার করা হতে বিরত থাকুন। সম্পূর্ণ নিজের লেখা পোস্ট শেয়ার করতে হবে। আপনাকে ওয়ার্নিং দেয়া হল, পরবর্তীতে একই কাজ করলে ব্যান করা হবে। আমাদের ডিসকর্ড ক্লাসে জয়েন করবেন।

জী, ভাইয়া।