জনপ্রিয় এই বাংলা প্রবাদে একটা জিনিসই বুঝায় বিশ্বাস করলে জীবন সহজ হয়। বিশ্বাস এক অদ্ভুত জিনিস। কখন মানুষ কোন জিনিসটা কিভাবে বিশ্বাস করে তা বুঝে ওঠা মুশকিল। দেখে বিশ্বাস করা আর জেনে বিশ্বাস করা দুটো জিনিসের পার্থক্য অনেক আবার মিল ও অনেক। দিনশেষে আপনি বিশ্বাসই করছেন। আমরা জানি সূর্য পূর্ব দিকে উদিত হয়। কিভাবে জানি কারন আমরা প্রতিদিন তা দেখতে পাই, এটি একটি চিরন্তন সত্য। আবার যে মানুষটি জন্মান্ধ সেও জানে সূর্য পূর্বদিকে ওঠে। ব্যাপারটা হলো এখানে দুই ধরনের মানুষ আছে যারা নিজের চোখে দেখে বিশ্বাস করেছে এবং এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে সূর্য পূর্ব দিকেই উদিত হয় আরেক জন যার দৃষ্টিশক্তি নেই সে এমন কারো কথার উপর ভিত্তি করে বিশ্বাস করছে যাকে সেই অন্ধলোকটা ভরশা করে বিশ্বাস করে। তাই এই দুটো জিনিস একটা আরেকটা পরিপূরক।
আপনি দেখে যদি বিশ্বাস করতে পারেন তাতে আপনার নিজের জ্ঞানবুদ্ধির প্রয়োগ হবে আর যদি আপনি দেখতে না পান তবে অন্যের কথা আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে। যদি বিশ্বাস করতে না পারেন তবে আপনার কিছুই করার থাকবে না। মারিয়ানা ট্রেঞ্জ এর চ্যালেঞ্জার ডিপ পৃথিবীর গভীরতম স্থান সেটা আমার পক্ষে মেপে দেখা সম্ভব না। তাই জনমত ও গবেষনা যা বলছে তা আমাকে জেনে বিশ্বাস করতে হবে। কিন্তু সূর্য পূর্বদিকে ওঠে তা আমি রোজই দেখি তাই এখানে আমি দেখেই বিশ্বাস করবো।
এখানে কেবল মাত্র তখন দেখে বিশ্বাস ও জেনে বিশ্বাসের মধ্যে বিভেদ হয় যখন কোনো কিছু অর্ধেক জানা হয় বা কেউ আপনার সাথে অভিনয় করে যা সে না। একজন খারাপ মানুষ যদি ভালো সাজার অভিনয় করে কিন্তু আপনি তার ইতিহাস জানেন সে খারাপ তবে আপনি আপনাকে দেখানো তার সব কাজ সব কথা বিশ্বাস করতে চাইবেন না এটাই স্বাভাবিক। আবার সে আপনার প্রকৃত মঙ্গলকামীও হতে পারে। সেখানে একটা দ্বিধা থেকেই যায়। তাই তখন সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে আপনাকে হিসেব করতে হবে, নিজের বুদ্ধি ও বিবেক খাটিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোনটা আপনি বিশ্বাস করবেন। যা দেখানো হচ্ছে নাকি আপনি পূর্ব থেকেই যা জানেন। নিজের বুদ্ধি বিবেচনা ও পারিপার্শিক সব কিছু বিচার করেই বিশ্বাস করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
Give an example of "Seeing is Believing" vs. "Knowing is Believing", for example, it could be based on personal experience or can be written within the framework of science, philosophy, religion and art.
pexels
দেখা বিশ্বাসের উদাহরন স্বরুপ আমি বলতে চাই গাছের কথা। গাছ মানুষের বন্ধু। আমরা গাছ থেকে নিজেদের খাবার সংগ্রহ করি, কাঠ সংগ্রহ করি, এসব জিনিস আমরা দেখে বুঝতে পারি যে এগুলো আমাদের প্রয়োজন আর এসব সরবরাহকারী গাছ আমাদের বন্ধু এই বিশ্বাস আমরা করি। আবার গাছ যে অক্সিজেন দেয় তা তো আমরা দেখতে পাই না। বিজ্ঞানীরা আমাদের তা জানিয়েছেন। অক্সিজেন আজ পর্যন্ত কেউ দেখে নাই। দেখা সম্ভবও না। তবুও আমরা বিশ্বাস করি গাছ আমাদের প্রানবাচায়। যে সব গাছ কাঠ বা শস্য বা ঔষধী গুন সম্পন্ন নয় তাদেরও আমাদের প্রয়োজন তারাও আমাদের পরমবন্ধু কারন আমরা জেনেছি যে তারা সবাই অক্সিজেন দেয়।এই হলো জেনে বিশ্বাস করা।
এখন আমি বাস্তব জীবনের ভিন্ন একটি উদাহরন দিবো। আমি আমার স্ত্রী কে প্রথম দেখায় পছন্দ করেছি, সেও আমাকে পছন্দ করেছে। তার মানে এই নয় যে আমরা প্রথম দিনই বিয়ে করার জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়েছি। আমরা বারবার দুজন দুজনের সাথে দেখা করেছি। পরস্পরকে খুব কাছে থেকে দেখেছি। দেখে বিশ্বাস করছি, এই মানুষটার সাথে আমার মিলে, এর সাথে সংসার করা যায়। তারপর আমরা পরস্পরের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। এবং এই দেখে বিশ্বাসের ফলাফল পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস আস্থা ও ভালোবাসা।
এবার জেনে বিশ্বাসের ব্যাপারে বলতে গেলে বিয়ের কিছু মাস পর একদিন আমি দেখলাম আমার স্ত্রী অফিস শেষে বাসায় ফিরতে দেরি করছে। এমন বেশ কয়েকদিন হলো। আমি তাকে একদিন একটা শপিং মলে একটা ছেলের সাথে দেখলাম। দেখে খারাপ লাগলো। আমি এই বিষয়ে তাকে কোনো প্রশ্ন করিনি কারন আমার বিশ্বাস ছিলো যে আমার স্ত্রী তার পুরুষসঙ্গী হিসেবে কেবল আমাকেই ভালোবাসে এবং তার আমার প্রতি সে বিশ্বস্থ সেটা আমি জানতাম। এই জানাটাই আমার বিশ্বাসের মূল উৎস ছিলো। তারএকটা ব্যাক্তিগত জীবন থাকতে পারে। আমি তার জীবনের শুরু না। জীবনের অনেক চড়াই উৎরাই পেড়িয়ে আমরা দুজন দুজনের সাথে মিলিত হয়েছি। সে যা করছে অন্তত আমার সাখে ধোকা হয় এমন কিছু করছেনা এটা আমার জানা ছিলো বিশ্বাস ছিলো। আমি চোখে যাই দেখি না কেনো আমি জানি সে আমার প্রতি সৎ।
তারকিছু দিন পর একদিন সে নিজে থেকেই বললো তার ইউনিভার্সিটির এক ছোটভাই তার অফিসে চাকুরী পেয়েছে এবং ছেলেটা প্রথমবার রাজধানীতে এসেছে তার এখানে পরিচিত কেউ নাই আমার স্ত্রী ছাড়া। পূর্বে আমার স্ত্রী তাকে ছোট ভাইয়ের মতন স্নেহ করতো এখন তার বিপদে সে অফিস শেষে অন্য কলিগদের সহযোগীতা নিয়ে বাসা ঠিক করা সহ জিনিসপত্র কেনা সব সাহায্য করেছে। সে এসবের পর এতোটাই ক্লান্ত থাকতো যে সে আমাকে বলার কথা মনে থাকতো না। আমি জানি আমার স্ত্রীর থাইরয়েডের সমস্যা তাই সে সহজ বিষয়ও ভুলে যায়। যেমন রান্না চড়ালে সেটা ভুলে যাবেই এবং পোড়া গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত তার মনে থাকেনা। তাই রান্নায় পোড়া গন্ধ তার সিগনেচার ডিস। আমি তাকে উৎসাহ দেই এবং যেহেতু অন্যভাবে বিষয়টা নেই নি এবং অবিশ্বাস করে একটা সুন্দর সম্পর্ক নষ্ট করিনি তাই নিজেকেই নিজে ধন্যবাদ দিয়েছিলাম। তাই আমার দৃষ্টিকোন থেকে দেখে ও জেনে দুটো বিশ্বাসের প্রয়োজন আছে তবে জেনে বিশ্বাসের শক্তিটা একটু বেশি। নতুবা জগতে ধর্ম, রাজনীতি,মানবতা কিছুই থাকতো না ।
What is the moral message that can be taken from this expression
pexels
একটা পুরোনো গল্প মনে পড়ে গেলো। যদিও আমি উদাহরন দিয়ে ফেলেছি তবুও বলি। আমার দাদী একবার খুব অসুস্থ ছিলেন। তখন চিকিৎসা সেবা আমাদের দেশে খুবই নাজুক। ডাক্তারের কাছে মানুষ যেতো না। কবিরাজী ও মসজিদের ইমামদের দেয়া পানি পড়া খেয়ে মানুষ চিকিৎসা নিতো। প্লাসিবো হলেও কথা ছিলো তবে তা নয় কেবলই বিশ্বাস। আমার বড় চাচাকে দাদী পাঠান এক ইমামের পানি পড়া আনতে। পথে বন্ধুদের সাথে খেলতে খেলতে বড়চাচা সব ভুলে যান। রাতে বাড়ি যাওয়ার সময় তার দাদীর কথা মনে পড়ে। তখন তিনি বাড়ি থেকে আনা পানির গ্লাসটাতে করে পাশের খালের পানি নিয়ে তার মা মানে আমার দাদীকে বলেন যে ইমামের পানি পড়া এটা। দাদী সেই নোংরা পানি খান বিশ্বাস করে এবং তারপরদিন সুস্থ হয়ে যান।
প্রকৃত ঘটনা দাদী মারা যাবারও বহুবছর পর বড়চাচা সবাইকে বলেন। আসলে সেদিন দাদীর বিশ্বাসই দাদীকে সুস্থ হবার মানসিক শক্তি দিয়েছিলো। তিনি জানতেন এটা ইমামের পানি পড়া তাই তিনি সেটা জেনে বিশ্বাস করে খেয়ে সুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন। তাই দেখে বিশ্বাসের চেয়ে জেনে বিশ্বাসের শক্তিটা বহুগুন বেশি কিন্তু বারবার প্রয়োগে এই বিশ্বাসটাই দাদীর প্রানের ঝুকি আনতে পারতো। অথচ যুগে যুগে নবী ও মসীহকে এতো অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। চোখের সামনে সত্য দেখেও মানুষ অনেক সময় অস্বীকার করে।
তাই আমাদের এই নৈতিক বার্তা নেয়া উচিত যে দেখে ও জেনে দুটোর বিশ্বাসের মাঝে দাড়িয়ে নিজের বুদ্ধি বিবেক খাটিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিশ্বাস করা উচিৎ কোনো ভাবেই কোনো কিছুকে অন্ধবিশ্বাস বা গোড়ামী ভালো না তা করা উচিৎও না।
আমার লেখাটি পড়ার জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ! |
--- @aparajitoalamin
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
https://twitter.com/alaminaparajit/status/1658711427274924032?s=20
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
The Bengali proverb you mentioned contains a deep message about the power of faith and belief. He conveys the importance of believing in something as a way To make life easier. It is true that faith is a strange thing ,because it is often difficult for us To understand how people believe something without clear evidence.Thank you for sharing this saying ,which provides an Interesting perspective on trust and how we understand it.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Thank you for your kind comments
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Wishing you the very best in the contest.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Thank you brother
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
TEAM 5 CURATORS
This post has been upvoted through steemcurator07. We support quality posts anywhere and with any tags. Curated by: @chant
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit