আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম
সততা সত্যিকার অর্থে একটি পারিবারিক শিক্ষা
কেমন আছেন সবাই? আশা করি বেশ ভালো আছেন সবাই। আমিও কিন্তু আপনাদের দোয়ায় বেশ ভালো আছি। আজও চলে আসলাম আপনাদর মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে। প্রতিদিন জীবন চলার পথে আমাদের সাথে ঘটে যায় কত শত ঘটনা। আর সেই সব ঘটনা গুলোর মধ্যে কোনটা হয়তো আমাদের হৃদয়ে দাগ কাটে। আবার কোনটা হয়তো আমরা একেবারে ভুলে যাই সময়ের ব্যবধানে। এইতো কয়েকদিন আগে আমার সাথেও ঘটে গেল তেমনি একটি ঘটনা। যে ঘটনাটি হয়তো ভুলে যেতে আমার বেশ কষ্ট হবে। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার সাথে ঘটে যাওয়া সেই ঘটনাটি শেয়ার করতে যাচিছ। যা হয়তো আপনাদের মনে সামান্য হলেও আচঁড় কাটবে।
আপনারা যারা আমার পোস্ট পড়েন তারা অনেকেই জানেন যে আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চাকুরীজীবী । আর এ জন্যই কিন্তু আমাদের সংসারের বাজার সদাই আমরা মিলেমিশে করি। মানে যে যখন সময় পাই তখনই টুকিটাকি বাজার সদাই নিয়ে ঘরে ঢুকি। অবশ্য বেশীর ভাগ সময়েই আমরা দুজন মিলেই আমাদের সংসারের বাজার সদাই করি। কিন্তু সেদিন যেহেতু আপনাদের ভাইয়া খুব ব্যস্ত ছিল, তাই আমি আমার বোন কে নিয়েই গেলাম সংসারের টুকিটাকি কেনাকাটা করার জন্য। আমরা যখন বাজারে যাই তখন দুপুর ৩.০০টা বাজে। অফিস করে যাওয়ার পথে বাজারে গেলাম কিছু সবজি কেনার জন্য।
কিন্তু কথা হচ্ছে যে বাজারে গেলে নিদিষ্ট কোন জিনিস আর কিনা হয় না। তখন মনে হয় এটা লাগবে, ওটা লাগবে। তো আমারও সেটাই হলো। মোটামুটি সবজি গুলো নিজের পছন্দ মত কিনে নিলাম। তবে সবজি আর কি কিনবো বলেন যে দামরে বাপ । সবাই বলে বাজারে নতুন সবজি আসায় সবজির দাম কমেছে। কিন্তু আমার তো তা মনে হয় না। আমার তো মনে হয় বাজারে কোন সবজিই ৭০-৮০ টাকার নিচে নাই। কি আর করার না খেয়ে তো আর থাকা যাবে না। তাই শীতের কিছু সবজি কিনে নিয়ে নিলাম।
এরপর আমরা মুরগিও কিনে নিলাম। তবে তুলনামূলক মুরগির দাম এখন অনেকটাই কম। তাই আমি এক হালি মুরগি নিলাম। এখন দেখি এত এত বাজার নেওয়া হয়েছে যে সেগুলো বহন করে হাটাও কষ্টের। তাই দু বোনে ভাগাভাগি করে নিলাম। ভাবলাম সামনে যেয়ে রিক্সা নিবো। তো হঠাৎ মনে হলো যে বাসায় টমেটো নেই। তাই টমেটোর দোকানে যেয়ে টমেটো দামাদামি করলাম। হায়রে কপাল এক টাকাও কমালো না দাম। কি আর করার টমেটো নিয়ে টমেটোর দাম দিয়ে দিলাম। একটি কথা আগেই বলে রাখি টমেটো যেখান থেকে কিনেছিলাম সেই দোকানে দুই ভাই বসাছিল। আর দুই ভাই মিলেই দোকান চালায়। বেশ ভদ্র স্বভাবের সেই ছেলে দুটো।কারন আমাদের সব বাজার গুলো কে ছেলে দুটো খুব সুন্দর করে দুটো ব্যাগে ভরে দিয়েছিল। যাতে আমাদের কোন কষ্ট না হয়।
তো আমরা বাজার নিয়ে বেশ দূরে চলে আসছি। মাত্র রিক্সায় উঠবো। এমন সময় পিছন থেকে একজন মহিলা দৌড়ে আসলো। উনি আমাকে জিজ্ঞেস করলো যে আমার পার্স কোথায়? আরে তখনই আমার খেয়াল হলো ঠিকই তো আমার টাকার পার্স কোথায়? বেশ চিন্তায় পড়ে গেলাম। পার্সের মধ্যে আমার প্রায় ৫০০০/-টাকার মত আছে। তারপর ভদ্র মহিলা আমাকে বললেন আমার পার্স আমি সেই টমেটোর দোকানে ফেলে এসেছি। হায় হায় কি অবস্থা হবে এখন। চিন্তায় পড়ে গেলাম। দৌড় দিলাম রিক্সায় আমার বোন কে বসিয়ে রেখে। ভাবলাম বোন কে নিয়ে পার্স আনতে গেলে তো এদিক দিয়ে রিক্সাওয়ালা আমার বাজার নিয়ে দৌড় দিবে। তখন তো আমার সব শেষ। হি হি হি।
তারপর সেই দোকানে গেলে দোকানে বসা দুই ভাই আমাকে দেখে এমন এক হাসি দিলো যে তাদের হাসি দেখে মনটাই ভরে গেল। তারপর সেই দুই ভাই আমাকে বলে ম্যাডাম এমন ভুল করলে কি আর হয়। তবে সেখানে যেয়ে দেখি একজন ভদ্রলোক আমার সেই পার্সটিকে নিজের বলে দাবী করছে। তিনি বলতে চাইছে যে পার্সটি তার। তখন আমি তাকে বললাম যে আচ্ছা যদি আপনার পার্স হয়, আপনি বলেন পার্সের মধ্যে কত টাকা আছে? আর টাকা ছাড়া আর কি আছে? তখন সেই ভদ্র লোক বলে যে পার্সের মধ্যে তার নাকি ১০,০০০টাকা আছে? আর কোন কিছু নাই। আমি তো কিছুক্ষন হাসলাম। আমি বললাম যে, না, ঠিক না। পার্সের মধ্যে ৫টি ১০০০/- টাকার নোট আছে এবং আমার মোবাইল কিনার ম্যামো আছে।
এরপর বাজারের স্থানীয় লোকজন আমার পার্সটি চেক করে দেখে যে আমি যা বলেছি তাই ঠিক। তখন সবাই সেই লোকটির উপর অনেক রেগে যায়।এমন কি সেই দুই ভাই তো আরও বেশী রেগে যায়। পারলে লোকটিকে পুলিশে দেয়। কিন্তু আমি সবাই কে বুঝিয়ে লোকটিকে ছেড়ে দিলাম। বাপরে পুলিশে ছুলে আট ঘাঁ। হি হি হি। এরপর আমি আমার কাছ হতে সেই দুই ভাই কে ৫০০/- টাকা দিতে চাইলে তারা আমার টাকা কিছুতেই নিল না। আর তাদের এমন সততায় আমি কিন্তু বেশ মুগ্ধ হয়ে গেলাম। সত্যি আমার কিন্তু সেদিন বার বার মনে হচিছলো যে গরীব আর বড় লোক কোন কথা নয়। সততা আসে পারিবারিক শিক্ষা হতে। ভেবে দেখবেন একবার আমার কথায় কতটুকু যুক্তি আছে।
আজ এখানেই রাখছি। আগামীতে আবারও ফিরে আসবো নতুন করে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে। কেমন লাগলো আমার আজকের ব্লগটি? জানার আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় রইলাম। আশা করি আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য দিয়ে উৎসাহিত করবেন।
নিজেকে নিয়ে কিছু কথা
আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।
আমার ব্লগটির সাথে থাকার জন্য এবং ধৈর্য সহকারে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য সবাই কে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। সেই সাথে সবার প্রতি আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
Tweter
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদম ঠিক কথা বলেছেন আপু একজন মানুষের বাহ্যিক রূপ দেখলে বোঝা যায় আসলে তার ফ্যামিলি টা কেমন।
পরিবার থেকে ছোটবেলা থেকে একজন ব্যক্তি যে শিক্ষায় বড় হয় বড় হয় ঠিক সেই ভাবেই প্রতিফলন ঘটায়।
ঘটনাটি পরিবেশ ভালো লাগলো আসলে মানুষের মধ্যে সততাটা এখনো আছে এজন্যই পৃথিবীটা এখনো সুন্দর।
হয়তো এই টাকাটা যদি সে নিজের জন্য নিয়ে নিতো একদিন বা দুদিন ভালো চলতো।
কিন্তু সে আপনার কথা ভেবে আপনারটা আপনাকে ফেরত দিল এটা আসলে মানুষের সত্য বিবেক।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সুন্দর এবং গঠনমূলক একটি মন্তব্যের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার পোস্টটি পরে আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো। এধরনের ঘটনা বাজারে গেলে প্রায় সময়ই ঘটে থাকে। তবে ছেলে দুটোর কথা শুনে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। পৃথিবীতে ভালো মানুষ না থাকলে হয়তো অনেক আগেই চোর বাটপারদের আওতায় চলে যেত। তবে ব্যবহারি বংশের পরিচয় ছেলে দুটি তার প্রমাণ দিয়েছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে উৎসাহিত করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে এটা ঠিক যে পারিবারিক শিক্ষার মাধ্যমে অনেক কিছুই হয়। কিন্তু যারা প্রাপ্তবয়স্ক তাদের ক্ষেত্রে কিন্তু বিষয়টা ভিন্ন। কারণ আশা করা যায় একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ কোনটা ভালো কোনটা খারাপ সেটা খুব ভালোভাবেই উপলব্ধি করতে পারে। যদি এখানে ওই লোকটার কথাই বলি যিনি আপনার পার্সটাকে নিজের বলে দাবি করছিল উনি নিশ্চয়ই প্রাপ্তবয়স্ক ছিল। কিন্তু তারপরও আপনার পার্সটাকে নিজের বলে দাবি করছিল। আসলে লোভে পড়েও মানুষ অনেক কিছুই করে। যাই হোক ওই দুই ভাইয়ের কথা শুনে বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এটাই তো বলি ভদ্রলোকের পারিবারিক শিক্ষা কমই ছিল। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সত্যিই আপু সততা একটি পরিবারিক শিক্ষা।এতে ধনী গরীবের কোন ব্যাপার নেই।ছেলে দুটো সত্যি ই খুব ভালো। আর ভদ্রলোক পার্সটি কেন দাবী করে?? ছেলে মানুষ কি পার্স ইউজ করে নাকি?? কি আশ্চর্য মহিলার পার্স নিজের বলে দাবী করে।অনুভূতি গুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো আপু। ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সেটাই তো বুঝলাম না কি করে বলল যে ব্যাগটি তার? হাফ লেডিস নাকি? হি হি হি। ধন্যবাদ মন্তব্যের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মানুষ এখন ভীষণ লোভী আপু। শুধু নিজের সাময়িক লাভটাই খুঁজে সবাই এখন। এতে কার কী ক্ষতি হয়ে গেলো, সেটি দেখার মতোন মানসিকতাও নাই কারোর। দিনকাল খুবই খারাপ আপু। এমন দিনে এতগুলো টাকা ভরা পার্সব্যাগ ভুলে গেলে চলবে? একফু সাবধানে চলাচল করবেন আপু। তাও তো ভালো যে একজন সঠিক সময়ে এসে আপনার কাছে পৌঁছে বলতে পেরেছে যে আপনি পার্সটি টমেটোর দোকানে ফেলে এসেছেন। এবং গিয়ে ফিরেও পেয়েছেন জেনে ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জ্বী আপু এরপর থেকে সাবধানে থাকার চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এমন সসতার কথা শুনলে খুব ভালো লাগে।আসলে ঠিক বলেছেন আপনি সততা থাকতে গরিব বড়োলোক হতে হয় না। সততার জন্য আলাদা একটা মানসিকতা দরকারও পারিবারিক শিক্ষা দরকার।আপনার পার্সটি নিজের বলে দাবি করা লোকটি লজ্জায় মুখ দেখাল কি ভাবে যখন আপনি প্রমান দিলেন যে ব্যাগটি আপনার।হায়রে মানুষ। অন্যের জিনিস নিজের বলে দাবি করে কি করে।ধন্যবাদ আপু পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আরে না কিসের লজ্জা?এদের আবার লজ্জা শরম থাকে নাকি? বেশ ভালো লাগলো আপনার মন্তব্যটা দেখে,। ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit